হয়তো আগে জানতেন না, এখন জেনেছেন যে, আপনার প্রিয় বন্ধুটা অন্ধকার জগতের বাসিন্দা। অন্ধকার পথে সে হয়তো অনেক দূর এগিয়েছে। নিজেতো বিপথগামী তদুপরি এলাকার বহু যুবকে তার রাজ্যের বাসিন্দা করে নিয়েছে। যার কারনে এলাকার পরিবেশ হুমকীর মুখে পরেছে। বন্ধু হিসেবে সেই অন্ধকার গলি থেকে তাকে ফেরানো দায়িত্ব ছিল আপনারই। কিন্ত আপনি সেই চেষ্টা কতটুকু করেছেন,ভেবে দেখুন। আপনি যদি চেষ্টা করেই থাকেন তাহলে আপনাকে ধন্যবাদ। শত চেষ্টা করেও আপনি যখন বুঝতে পারলেন তাকে ফেরানো সম্ভব নয়। তাহলে সেখানে আপনার করণীয় হচ্ছে তার সঙ্গ ত্যাগ করা। কিন্ত আপনি কি সেটা করেছেন?
ধরুন,সেই বন্ধুটি খুনাখুনি, ছিনতায়- রাহাজানি,মাদক বানিজ্য,চোরাচালানসহ দেশের স্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন অপরাধ কান্ডে লিপ্ত। এলাকার পরিবেশ বিনষ্টের হোতা সে। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে, ব্যবসা বানিজ্য নির্বিঘ্ন করতে কৌশলে নানা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে সে। বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধীদের সাথে উঠা-বসা,সখ্যতাও গড়ে তুলেছে।
যদি আপনার বিবেক বলে আপনার বন্ধুটা অন্যায় করছে, সামাজিক শান্তি নস্যাৎ করছে,যুবসমাজকে ধবংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। তাহলে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বন্ধুটির বিবেক বিবর্জিত কাজের বিরুদ্ধে আপনার কি করা উচিত? প্রতিরোধ না সহযোগীতা করা?
যারাই একটি সুন্দর ও শান্তিপুর্ন সমাজ বিনির্মাণের পক্ষে তারাতো নিশ্চয় দায়বদ্ধ নতুন প্রজন্মের কাছে,সমাজের কাছে। তাদের পিছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাদের কাছে অপরাধী বন্ধুদের চেয়েও সমাজ-শান্তি-আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও একটি সামগ্রিক সুন্দর পরিবেশই বড় বিবেচিত হবে,তাই না?আমরা কি সেই বিবেচনা করছি? কেউ করছিনা, বরঞ্চ বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে তাদের চরম দূর্দিন ঘনিয়ে এলে তাদের পক্ষাবলম্বন করছি। অথচ আমাদের করণীয় ছিল তাদের বিরুদ্ধে একটি বিশাল জনমত গড়ে তোলার। বিশেষ করে আমাদের উচিৎ তাদের সঙ্গ ত্যাগ করা। মনীষীরা বলে গেছেন,” সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ “। এ কথাটি আজ প্রমানিত সত্য। কিন্ত এ কথার তাৎপর্য কি? আর কেন অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করব?
এ প্রসঙ্গে মুহাম্মদ (স:) বলেন, ” লোক তার সঙ্গীর স্বভাব চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত। অতএব সে যেন খেয়াল রাখে কার সাথে সে বন্ধুত্ব করছে “। তিনি আরো বলেছেন, ” অসৎ সঙ্গীদের চেয়ে একাকীত্ব ভাল, আর একাকীত্বের চেয়ে সৎ সঙ্গী উত্তম “।
পবিত কুরআনের সুরা তওবার ১১৯ নাম্বার আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন,” হে মুমিনগন! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সৎ লোকের সঙ্গী হও”। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অপরাধীদের প্রতি সকল মানবিকতা ভুলে, অপরাধীদের সাথে সকল বন্ধন ছিন্ন করে বুঝিয়ে দিতে হবে যে,এই গ্রামে, এই লোকালয়ে, এই জনপদে অপরাধীদের কোন ঠাই নেই।