পাইলট ছাড়াই ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান বানাচ্ছে রাশিয়া। আর সেই লক্ষ্যেই এখন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়াররা। এমনটাই জানিয়েছেন রাশিয়ান বিমানবাহিনীর কমান্ডার।
তিনি জানিয়েছেন, এই বোমারু বিমানের দু’টি ভার্সন থাকবে। এবং একটি ভার্সন চালানো হবে পাইলট ছাড়া। যখন রাশিয়ার তৈরি ফিফথ জেনারেশনের সুখোই টি-৫০ বোমারু বিমান নিয়ে আরও পরীক্ষা চালাচ্ছে রাশিয়া, ঠিক সেই সময়ে এই বিমান তৈরির কথা জানিয়েছেন বিমানবাহিনীর কমান্ডার।
রুশ বিমানবাহিনীর কমান্ডার জানিয়েছেন, সিক্সথ জেনারেশন যুদ্ধবিমান নির্মাণের কাজ চলছে। ঠিকঠাক ভাবে তৈরি হলে এটি সেভেন জেনারেশন ফাইটার জেটেরও কাজ করে দেবে এটি। তবে এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। অবশ্য এটির গবেষণা ও নির্মাণ কাজ যদি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থেমে যায় তবে তা আর কোনোদিনই আলোর মুখ দেখবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এই সম্পর্কে কমান্ডার বলেন, মানবদেহের নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও প্রযুক্তি ও যন্ত্রের তা নেই। কাজেই যে কোনও প্রজন্মের আকাশ যুদ্ধে পাইলটবিহীন যুদ্ধবিমান কার্যকরভাবে শত্রুকে পরাজিত করতে পারবে।
তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, পাইলটবিহীন জঙ্গি, বোমারু বা অ্যাটাক বিমানের কি ক্ষমতা আছে তা কি আপনার কখনো কল্পনা করতে পারবেন? ঠিক কবে সিক্সথ জেনারেশনের যুদ্ধবিমানের পরীক্ষা চালানো হবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলতে পারেননি রুশ বিমানবাহিনী প্রধান।
সুখোই পাক ফা টি ৫০ হচ্ছে রাশিয়ার তৈরি পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার জেট। এতে দুই ইঞ্জিন এবং এক সিটের বিমান। সকল মিশনের জন্য উপযোগী করে এটিকে মাল্টিরোল বিমানে পরিনত করা হয়েছে। টি ৫০ রাশিয়ার প্রথম পঞ্চম প্রজন্মের বিমান। রাশিয়া বহরে থাকা সু ২৭ এবং মিগ ২৯ এর পরিবর্তে এই বিমান ব্যবহার করার কথা রয়েছে। ২০১০ সালে সর্বপ্রথম এই বিমান আকাশে উড়ে। এর সার্ভিস লাইফ ধরা হয়েছে ৩৫ বছর। ২০০২ সালে সুখোই এর পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। এই বিমানে AL-41F1 নামে দুইটি ইঞ্জিন রয়েছে।এই বিমানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এর স্টিলথ প্রযুুক্তি। এর বডির উপর রাডারের ওয়েব শোষনকারী পদার্থ (RAM) ব্যবহার করেছে।এই বিমানে রয়েছে সুপারক্রুজ প্রযুুক্তি। এর সাহায্য আফটারবার্নারের সাহায্য ছাড়াই বিমান সুপারসনিক গতিতে ছুটতে পারে। এর ফলে বিমানের রেঞ্জবেড়ে যায়। বর্তমানে প্রায় সকল পঞ্চম প্রজন্মের বিমানে এই প্রযুুক্তি রয়েছে।
টি ৫০ এর রাডার তৈরি করা হয়েছে এটি AESA PESA রাডার। যার ফলে একে জ্যাম করা বেশ কষ্টসাধ্য। এই রাডারের সাহায্যে ডাটালিংকের মাধ্যমে অন্য বিমানের সাথে তথ্য শেয়ারকরা যাবে। তাও আবার খুবই সুরক্ষিতভাবে। এতে পাইলটের কাজের পরিমান কিছুটা কম হবে। এর ডানাতেও রাডার রয়েছে। তবে এতে নতুন প্রজন্মের “ফটোনিক রাডার ” সংযুক্ত করা হবে। যা বর্তমানে প্রচলিত যে কোন রাডার থেকে অনেক এগিয়ে। বর্তমানে আমেরিকা আর রাশিয়া এই রাডার নিয়ে কাজ করছে। সার্ভিসে আসলে তা টি ৫০ এর পারফরমেন্স অনেক বাড়িয়ে দিবে। রয়েছে ইনফ্রারেড সার্চিং এবং ট্রাকিং। যা দিয়ে প্রতিপক্ষের বিমানের উৎপন্ন তাপমাত্রা দিয়ে বিমান ডিটেক্ট এবং ট্র্যাক করা হয়। এটি পেসিভ সেন্সর। অর্থ্যা একে জ্যাম করা যাবে না। সেই সাথে রয়েছে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুট। IRST অস্ত্রব্যবস্থার মধ্যে বলতে গেলে সকল ধরনের অস্ত্র বহন করতে পারে।রয়েছে ডাটালিংক যা দিয়ে আশাপাশের বিমান এবং কমান্ড সেন্টারের সাথে তথ্য আদান প্রদান করা যাবে।