দ্বিতীয় দিনের মতো যৌথ সামরিক নৌ-মহড়া চালিয়েছে ইরান, চীন এবং রাশিয়া। শনিবার ভারত মহাসাগর এবং ওমান সাগরে এ-মহড়া চালায় এই তিন মিত্র দেশ। মস্কো-বেইজিং এবং তেহরানের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার এর অন্যতম লক্ষ্য বলে জানিয়েছে ইরান।
এদিকে, পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিসহ ইরানের নানামুখী তৎপরতা ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে তেল আবিব।
পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনা আর বাকযুদ্ধ যখন চরমে, তখন ভারত মহাসাগর এবং ওমান সাগরে ব্যাপক আকারে যৌথ নৌ মহড়া শুরু করেছে ইরান, চীন এবং রাশিয়। ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের পর এই প্রথম এ ধরনের নৌ মহড়া চালাচ্ছে তিন দেশ। পারস্য উপসাগরে নিজেদের বাণিজ্যক জাহাজের নিরাপত্তায় ট্রাম্প প্রশাসনের জোট গঠনের তৎপরতার মধ্যেই এ মহড়া চালাচ্ছে তিন দেশ। ‘মেরিন সিকিউরিটি বেল্ট’ নামে চার দিনের এই শক্তি প্রদর্শনী চলবে সোমবার পর্যন্ত।
ইরান বলছে, বিশ্ব বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ওমান সাগর ও ভারত মহাসাগর। বিশ্বের বহু দেশের বাণিজ্যিক জাহাজ এই রুট দিয়ে চলাচল করে। গুরুত্বপূর্ণ এই পানিসীমায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিরাপত্তা রক্ষা, জলদস্যুতা এবং সামুদ্রিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এই মহড়ার অন্যতম লক্ষ্য। এছাড়া, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ইরানের সামরিক অভিজ্ঞতা বিনিমিয়ও এ আয়োজনের উদেশ্য বলে জানায় তেহরান
ইরানি বহরের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম রেজা তাহানি বলেন, ১৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে আমাদের এ মহড়া চালানো হচ্ছে। এতে নানা ধরনের কৌশল অনুশীলন করছি আমরা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমরা বলতে চাই, শত্রুদের মোকাবিলায় তেহরান, মস্কো ও বেইজিং একজোট হয়ে কাজ করবে। আর সেই বার্তা দিতেই এ মহড়ার আয়োজন। সমুদ্রসীমা নিরাপত্তায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর আগে, মধ্যপ্রাচ্যের সমুদ্রে জাপানি জাহাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যুদ্ধজাহাজ ও টহল বিমান পাঠানোর ঘোষণা দেয় টোকিও। দেশটির তেলবাহী জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশে সেখানকার তথ্য সংগ্রহ করতে একটি হেলিকপ্টার সজ্জিত ডেস্ট্রয়ার ও দু’টি পি-৩ সি টহল বিমান মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছে জাপানের মন্ত্রিপরিষদ। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী মাস থেকে টহল বিমানগুলো যাতে তৎপরতা শুরু করতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। আর ফেব্রুয়ারি থেকে ডেস্ট্রয়ার মোতায়েনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ-এর প্রধান বলেছেন, তাদের কাছে এখন প্রধান লক্ষ্য ইরান। তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ইরানের এসব কর্মসূচি ও নানামুখী তৎপরতার মূল লক্ষ্য ইসরাইল। দেশের নিরাপত্তার জন্য বিশাল এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তার সংস্থা যা যা করণীয় সবই করবে।