লোকটার নাম কুপ্পা পাপ্পালা রাও। তিনি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের ভিশাখা পাটনাম জেলার একজন তাল বিক্রেতা।
পাপ্পালা রাও বলেন, ‘মানুষ যখন তাল কেনার সময় আমার সঙ্গে দর-দাম করে তখন আমার খুব হাসি পায়। বেশিরভাগ মানুষ রাস্তা দিয়ে বড় গাড়ি করে যাওয়ার সময় গাড়ি থামিয়ে আমার কাছে আসে। তাদের গায়ে অনেক সুন্দর পোশাক থাকে, মুখে খুব পরিস্কার মাস্ক থাকে। তারা এসে আমার এক জোড়া তালের দাম ৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ৪০ বা ৩০ টাকা দেওয়ার জন্য আমার সঙ্গে ঝগড়া করে!’
পাপ্পালা রাও হাসেন আর মনে মনে চিন্তা করেন, এই গাড়িওয়ালা মানুষগুলো ১০ বা ২০ টাকা বাঁচিয়ে আসলে কী করে?
‘তারা কখনও চিন্তা করেন না যে, এই ১০-২০ টাকা কতটা দামী আমার কাছে। এই ২০ টাকা দিয়ে আমি শহর থেকে গ্রামে আমার বাড়ি ফিরতে পারবো বাস ভাড়া দিয়ে!’
পাপ্পালা রাও এবং তার স্ত্রী কুপ্পা রামা গ্রাম থেকে তাল নিয়ে এসে বিক্রি করেন। সারাজীবন ভর এই কাজই তারা করে এসেছেন। এভাবেই সংসার চালিয়ে এসেছেন। আগে সারাদিনে ১৫০-২০০ টাকা হাতে থাকতো বিক্রির পর। করোনা আসার পর সারাদিনে হাতে ৫০ টাকাও জুটে না।
এতো অল্প টাকায় সংসার কীভাবে চালান জিজ্ঞেস করলে পাপ্পালা রাও বলেন,
‘সংসার তো আমি চালাই না বাবু। আমি তো এই আশায় ঘর থেকে বের হই যাতে আমার রোগ (করোনা) ধরা পড়ে আর আমি মরে যাই।
কিন্তু রোগও আমাদের কপালে জুটে না। ওটাও শুধু পয়সাওয়ালাদের হয়। আমার মতো গরীবদের অপরিস্কার ময়লা শরীরটা ভগবানও নিজের কাছে নিতে চান না!’