চান্দগাঁও থানাধীন খাজা রোডস্থ আব্দুল হালিম মেম্বারের বাড়ির স্থায়ী বাসিন্দা মো. রাজু। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। সেই সাথে যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের একটি দৈনিক পত্রিকায় ‘বেপরোয়া চাঁদাবাজি চান্দগাঁও থানার কাছেই শক্তি দেখাচ্ছে কিশোর গ্যাং’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।উক্ত সংবাদের প্রতিবাদে মো. রাজু তার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানান।মো. রাজু তার বক্তব্যে বলেন, তার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ কাজ করছে৷ তারা মো. রাজুর নামে এরকম প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে বলে জানান তিনি। এসময় তিনি সাংবাদিকদের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে সাজানো সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
মো. রাজু তার বক্তব্যে বলেন, “গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের একটি দৈনিক পত্রিকায় আমার নামে বিভিন্ন চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মত একটি ন্যাক্কারজনক সংবাদ প্রকাশ করে। যেটা পেয়ে আমি পুরোই হতভম্ব হয়ে পড়ি। উক্ত পত্রিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, খসাইপাড়া থেকে বহদ্দারহাট রুটে যে সিএনজি অটোরিকশাগুলো চলাচল করে তাদের কাছে আমি দৈনিক ৬০ টাকা করে চাঁদা নিই। কিন্তু আমি এর সাথে কোনভাবেই সম্পৃক্ত নই। তারা আরো বলেছে যে, চাঁদার টাকা না পেয়ে আমি ও আমার গ্রুপের ২০-৩০ জন মিলে এক সিএনজি ড্রাইভারের মাথা ফাটিয়ে দিই। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মিথ্যা সংবাদ প্রচার করায় আমি উক্ত পত্রিকার মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যে তাদের কাছে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, খসাইপাড়া থেকে বহদ্দারহাট রুটটি ১৪৪১ নিবন্ধনের একটি সমিতি পরিচালনা করে। তারাই উক্ত সিএনজিগুলো থেকে দৈনিক টাকা নিয়ে গাড়িগুলো চলতে দেয়। তবে ১৪৪১ নিবন্ধনের লাইনম্যান জাহাঙ্গীর আমার নাম বিক্রি করে তাদের কাছে চাঁদা নেয় শুনেছি। পরে আমি তাকে গিয়ে সরাসরি হাতেনাতে ধরে উক্ত কাজের জন্য শাস্তি দিই এবং এসমস্ত অবৈধ কার্যকলাপ না করার জন্য বারণ করি।”এদিকে তদন্তে জানা যায়, পীযুষ বড়ুয়া নামের এক ব্যক্তি পাঁচলাইশ থানায় ফৌজদারি বিধানে ১৫৪ ধারায় ৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে ৩ নং আসামী হিসেবে হামকা রাজুর নামও আছে। তবে এ হামকা রাজু আর মো. রাজু একই ব্যক্তি নয়। মো. রাজুর বাড়ি ৪ নং ওয়ার্ডের খাজারোডে পক্ষান্তরে হামকা রাজুর বাড়ি ৬ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর এলাকায়।
হামকা রাজু আর মো. রাজু একই ব্যক্তি না হওয়া সত্ত্বেও চান্দগাঁও থানা পুলিশ মো. রাজুকে আটক করে। পরে রাজু আদালতে আইনের মারফতে জামিন পায়, পরে আদালত মামলাটি খালাস করে দেয়।এদিকে সরেজমিনে জানা যায়, উল্লেখিত দৈনিক পত্রিকায় মো. রাজু চাঁদা না পেয়ে যে গাড়িটি ভাঙচুর করেছে ১৪৪১ নিবন্ধন রুটের একটি গাড়ি। কিন্তু যে গাড়িটি ভাঙচুরের কথা বলা হয়েছে, সে গাড়িটি ওইদিন এক্সিডেন্ট করেছিল। ওইদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন উক্ত গাড়ির ড্রাইভার ও মালিক। তাদের মতে, মো. রাজু নামের কোন ব্যক্তি তাদের গাড়ি ভাঙচুর করেনি। গাড়িটি ওদিন এক্সিডেন্ট করেছিল।
উক্ত রুটের আরেক লাইনম্যান শফিকুল আলম বলেন, ‘এই রুটে যতগুলো গাড়ি আছে সব সমিতির আন্ডারেই পরিচালিত হয়। এখানে রাজু নামে কোন ব্যক্তি চাঁদাবাজি করেনা। তবে মো. রাজু নামের ব্যক্তিটি তাদেরকে কোন সমস্যা হলে সেটা স্বেচ্ছায় সমাধান করার চেষ্টা করেন বা তাদের সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকেন।’উক্ত রুটের আরো কয়েকজন সিএনজি ড্রাইভারের সাথে কথা হলে তারা জানান যে, “মো. রাজু নামের ব্যক্তিটি অত্যন্ত সজ্জন। তিনি তাদের বিপদেআপদে তাদের পাশে থাকেন, তাদের সহায়তা করেন। রাজুর বিরুদ্ধে আমাদের এখানে চাঁদাবাজি করে বলে যে সংবাদটি প্রচার করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।”
মো. রাজুর আব্বা জয়নাল আবেদিন তার ছেলের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে বলেন, ‘আমি পরিবারসহ খাজারোড বসবাস করি। আমার ছেলে রাজু অত্যন্ত সজ্জন। সে যুবলীগের রাজিনীতি করে। আমার ছেলের বিরুদ্ধে কে বা কারা প্রলোভন দেখিয়ে সংবাদটি প্রচার করতে বাধ্য করেছে৷ আমি উক্ত পত্রিকার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছি। সেই সাথে মিথ্যা সংবাদটি উত্তোলন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এদিকে মো. রাজুর প্রতিবেশী মো. সাঈদ বলেন, “হামকা রাজু আর মো. রাজু এক ব্যক্তি নয়। একটি পত্রিকায় এভাবে সবকিছু ঠিক বেঠিক না জেনে আজগুবি সংবাদ প্রচার করতে পারেনা। মো. রাজুর বিরুদ্ধে সংবাদটিতে যা যা বলা হয়েছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক। প্রকৃতপক্ষে মিথ্যাচার করে তার পরিবারকে হেয় করার অপচেষ্টা করছে একটি মহল। আমি এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঠিক তদন্ত ও মিথ্যাচারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।”