* নুর মোহাম্মদ *
ঈদ হাঁসতে শেখায়, ভালবাসতে শেখায় ত্যাগের মহিমা শেখায় এরকম আদর্শ ধারণ পুর্বক সারাবিশ্বে পালিত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা।
সম্ভবত ১৯৮৯ – ৯০ সালের
এক কোরবাণীর ঈদ হবে যার স্মৃতি এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে আমাদের সবার কাছে।
তখন আমার আব্বা মরহুম সামশুল আলম, চাচা মরহুম আহমদ মিয়া, চাচা মরহুম ছালে আহমদ, চাচাত ভাই মরহুম আবু ইউসূফ ও চাচাত ভাই মরহুম আবু তৈয়ব ছিলেন।
তিন গেরস্ত মিলে সেবার কোরবাণী দেওয়া হচ্ছিল।
আব্বা সামশুল আলম , চাচা ছালে আহমদ ও চাচা আহমদ মিয়া মিলে কোরবানির ঈদের গরু কেনার জন্য একটি বাজেট করল।
টাকার পরিমাণ খুব সম্ভবত
তিন গেরস্ত মিলে ১০ -১২ হাজার হবে।
চাচা ছালে আহমদ ও চাচাত ভাই আবু তৈয়ব সারাদিন রাউজানের নোয়াপাড়ার চৌধুরীহাট
বাজার ঘুরতে ঘুরতে হয়রান।
গরু মিলছে না।
শেষমেষ হঠাৎ তিনটা বলদ গরু কিনবার সিদ্বান্ত নিলেন।
কিনলেন লম্বা শিং ওয়ালা তিনটা বলদ গরু।
দাম তিন – চার হাজার টাকা করে মোট বার হাজার টাকা।
বর্তমান সময়ে ঐ তিনটা গরুর দাম প্রায় দুই লক্ষ বিশ হাজারের বেশী হবে।
তাহলে চিন্তা করেন কি হারে বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়েছে।
এখন অত্যাধিক দাম, পারিবারিক সমস্যা প্রভৃতি কারণে আর নিয়মিত ঘরে আর কোরবানি করা হয়ে উঠে না।
হয়তো বেশী টাকা দিয়ে কোরবানী করতে না পারলে ও পবিত্র ঈদুল আজহার মূল শিক্ষা – নীতি বাস্তব জীবনে ধারণ করার চেস্টা করি।
২০১২ সালের পর আর কোরবানির পশুর অত্যাধিক দামের কারণে কোরবানি দেওয়া যায়নি । সবশেষ মনে হয় ২০/৩৫ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানি দেওয়া হয়েছিল।
এখন তো কোরবানির যাবতীয় কাজের জন্য লাখ টাকা বাজেট করতে হয়।
যাক সে সময় বাড়ীতে গরু তিনটা আনার সময় বাড়ীর ছোট ছেলে – মেয়েদের মিছিল আর হৈ -চৈ এ বাড়ী মুখরিত হয়ে উঠল। সবাই কিছুটা বিরক্ত হয়ে আবার খুশি হল।
কোরবানির দিন গরু তিনটা জবাই এর পর একসাথে মিশিয়ে চাচা আহমদ মিয়ার আগের অভিজ্ঞতা মোবাবেক তিন ঘেরস্তের মধ্য আর কোরবানির নিয়মে অন্যদের ভাগ করে বন্টন করে দিল।
আজকে আব্বা সামশুল আলম, চাচা আহমদ মিয়া, চাচা ছালে আহমদ, চাচাত ভাই আবু ইউসূফ, চাচাত ভাই মোহাম্মদ তৈয়ব উনারা বেঁচে নেই।
তাঁহারা না থাকলে তাদের গুণ, আদর্শ, সততা, সখ্য, ঐক্যোর শিক্ষা এখনো আমাদের অন্তরে চির জাগরুক।
এই পাঁচ জন শান্তপ্রিয় মানুষ কখনো কারো অনিস্ট করেনি।
তাদের সময়ে বাড়ীতে, পরিবারে সবাই মিলেমিশে সকল কাজে এক দৃঢ়, আন্তরিক বন্ধন সৃস্টি করেছিল।
★ লেখক : সহ – সভাপতি,
রাউজান রাইটার্স ক্লাব।