আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় বিবাদমান সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে চলাচলের পথের উপর সেফটি ট্যাংক নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ করেছে ভূক্তিভোগী পরিবার।
আজ ১৩ এপ্রিল (বুধবার) বিকাল ৩ টায় চকবাজারের একটি হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভূক্তভোগী পরিবারটি এ অভিযোগ জানান। লিখিত বক্তব্যে ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মো: আবছারুল আলম চৌধুরী জানান, চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় বিরোধপূর্ণ এই ভূমিতে আদালতের স্থিতাবস্থা রয়েছে। এতে বলা আছে, ওই ভূমিতে কোনো নির্মাণ করা যাবে না, যাবে না নতুন কোনো স্থাপনা করা। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের এমন নির্দেশনা মানছে না বাকলিয়ার
মৃত হাজী সালেহ চৌধুরীর পুত্র মো: ফরিদুল আলম। ওই ভূমিতে সেফটি ট্যাংক নির্মাণ করছে তিনি। ঘটনাটি ঘটে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া বড়মিয়া মসজিদ সংলগ্ন বাকলিয়া হাইস্কুল রোড, ইউনিট-২ আল সালেহ ভিলায়।
লিখিত বক্তব্যে মো: আবছারুল আলম চৌধুরী আরো জানান আমাদের পিতা হাজী মোহাম্মদ ছালেহ চৌধুরী তার জীবদ্দশায় সম্পত্তি খরিদ করে বসতভিটা নির্মাণ করেছিল আমাদের সুখের জন্য। তাদের মৃত্যুর পরবর্তীতে সন্তানাদির মধ্যে যেন কোন ধরনের বিবাদ সৃষ্টি না হয় সে জন্য আমাদের পিতা তার নিজ খরচে আর.এস. খতিয়ান নং ২৬৫৫/৩৮১৪ ও ৩৮০১ এর আওতাধীন আর.এস. দাগ নং ৩৩৭/৩৩৮/৩৩৯ তৎ বি.এস. খতিয়ান নং ২৮৮৮ এর বি.এস. দাগ নং ১০৬৩/১০৬৪ ও ১০৬৬ দাগ সমূহের ২৮ শতকের আন্দরে ৯ গন্ডা ১ কড়া ২ কন্ট সম্পদের মধ্যে সিডিএ নিয়মানুসারে পাশাপাশি দুটি ৪ তলা ভবন নির্মাণ করেন এবং আমাদের অপর ভাইকে খালি জায়গা দিয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে সম্পত্তির বন্টন করে বিগত ২৯/১২/১৯৮৫ ইংরেজী তারিখে একটি রেজিস্টার্ড অংশ নামা করে দেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আমাদের বোনকেও ইসলামী ফরায়েশ মোতাবেক তার প্রাপ্ত হক অনুযায়ী আমার পিতা হাটহাজরী থানাধীন বুড়িশ্চর মৌজা আমাদের গ্রামের বাড়ী হতে সম্পত্তি বন্টন নামায় প্রদান করেন। পিতার উদ্দেশ্য সঠিক থাকলেও তার মৃত্যু পরবর্তী প্রভাবশালী বড় ভাই আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্থা করতে থাকে বিভিন্ন সময়। তখন বহু সালিশ দরবার হয়ে আবারও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একটি আপোষ মিমাংশা নামা চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয় বিগত ৮/৮/১৯৯৯ ইংরেজ তারিখে। পিতার অবর্তমানে বিভিন্ন সময়ে আমার ও আমার পরিবারের উপর নেমে আসে নানা হয়রানী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। সর্বশেষ বিগত ২৭/৩/২০২২ সকাল ৯ টার সময় আমার অংশে প্রাপ্ত স্বত্বীয় মালিকানা চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ইট, বালি, সিমেন্ট, কংক্রীট ও বিবিধ নির্মাণ সামগ্রী রাখে। এছাড়া ভাড়াটিয়ারা চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিতে তাকে জানালে সে মারমুখী আচরণ করতে থাকে এবং বিভিন্ন হুমকী ধমকী প্রদান করেন। তৎপরবর্তী তিনি নির্মাণ শ্রমিক দিয়ে বিশাল একটি গর্ত খনন করে সেফটি ট্যাংকি নির্মাণের উদ্দেশ্যে আমার অংশে প্রাপ্ত সম্পত্তির চলাচলের রাস্তার উপর। বাধা দিলে সে আমার উপর বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী প্রভাব খাটাতে থাকে এবং হুমকী ধমকী অব্যাহত রাখে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান, আমি বিষয়টি নিয়া আদালতের শরণাপন্ন হই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যেন সঠিক বিচার পাই। আদালতে বিষয়টির উপর আমি ৩০/০৩/২০২২ ইংরেজী তারিখে ৫২৫/২০২২ ইংরেজী তারিখে একটি মিছ মামলা দায়ের করি। আদালত বিষয়টি আমলে এনে আমাদের উভয় ভবনের মধ্যে চলাচলের পথের উপর ১৪৭ ধারায় নির্মাণ কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন এবং সদর এসি ল্যান্ডকে বিষয়টির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান সহ সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিরোধী সম্পত্তির উপর আইন প্রয়োগে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন।
আইনের শাসন রক্ষায় তাদের সু – দৃষ্টি কামনা করছি পাশাপাশি আমি ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা দাবী করছি এমন জুলমবাজ সন্ত্রাস বাহিনীর গডফাদার ও ভূমি দস্যুর হাত হতে ।
এ ব্যাপারে জানার জন্য ফরিদুল আলমের মুঠোফোনে বার বার ফোন করার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এজন্য তার তার কোন মন্তব্য জানানো সম্ভব হয়নি।
অপর পক্ষ মো: আবছারুল আলম চৌধুরী বলেন, ওই সম্পত্তি জোর করে দখলে নিয়ে গাছপালা কেটে নেয়ার হুমকি দিলে তিনি মো. ফরিদুল আলম’র বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেন।
বাকলিয়া থানায় এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কিছুই জানেন না বলে জানান।