চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধিনে ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ব্যবহারের জন্য ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার ওএমআর সরবরাহের কাজ পায় মাষ্টার সিমেক্স পেপার লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান।যার বাজার মূল্য ১কোটি ১৩ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা। এবছর ১২ এপ্রিল উক্ত প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম । তৎকালিন চেয়ারম্যানের অবর্তমানে রুটিন মাফিক দায়িত্বে ছিলেন সচিব । এ সুযোগে সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম মাষ্টার সিমেক্স পেপার লিমিটেডকে ওএমআর ব্যবহারের আগে কোটি টাকার বিল পাইয়ে দিতে কার্যাদেশ-এর শর্ত শিথিল করে দেন। অনুসন্ধানে জানা যায়,মাষ্টার সিমেক্স এর সাথে সমঝোতার অংশ হিসেবে বোর্ড সচিব কার্যাদেশ পরিবর্তণের কাজ করেন। বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা তার পকেটে ঢুকে।বোর্ডের সাবেক সহকারি সচিব মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন মাষ্টার সিমেক্স এর প্রতিনিধি সবুজ মিয়া সচিব প্রফেসর আবদুল আলীমের সাথে বিষয়টি মধ্যস্থতা করেন,২০২১ সালে ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার ওএমআর তৈরির কাজ পায় একই প্রতিষ্ঠান।২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারী প্রফেসর আবদুল আলীম স্বাক্ষরিত কার্যাদেশ এর ১০ নং শর্তে লেখা ছিল “২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ওএমআর স্ক্যান করা সাপেক্ষে বিল প্রদান করা হবে।২০২২ সালে সচিব আগের শর্তটি তুলে দেয় । সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম চলতি বছর অক্টোবরেই অবসরে যাচ্ছেন । তিনি অবসরে যাওয়ার আগে যেন কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয়ে যায় এজন্য কার্যাদেশের শর্ত শিথিল করে দেন । ওএমআর ব্যবহারের আগে বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেন।২০১৮ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড ২কোটি ৩০ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকার ওএমআর ক্রয় করে,২০১৯ সালে ১ কোটি ৭৮লক্ষ ৯০ হাজার টাকার ওএমআর ক্রয় করে।সকল ক্রয়ের কার্যাদেশে শর্ত উল্লেখ ছিল ওএমআর ব্যবহারের পর বিল পরিশোধ করা হবে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ওএমআর ও কাগজের কোটি কোটি টাকার ক্রয়ে সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম শর্ত শিথিল করে সদ্য বদলিকৃত সহকারী সচিব মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন সাথে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন । বর্তমান চেয়ারম্যান যোগ দেওয়ার পর এই সিন্ডিকেট আবারও সক্রিয় হয়ে উঠে। নতুন চেয়ারম্যান কিছু বুঝতে পারার আগেই এই চক্র বোর্ড থেকে কোটি টাকার বিল বের করে ফেলে।যা চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের প্রতিষ্ঠার পর আর কখনও হয়নি । সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান থেকে জোর করে বিলে সম্মতি আদায়,চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান এর বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় ব্যবস্থার বিষয় ঝুলিয়ে রেখে বিলে জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছেন।তিনি স্বাক্ষর দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম চিৎকার করে দ্রুত স্বাক্ষর দিতে বলেন।বোর্ড সূত্রে জানা গেছে । তবে সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট ওএমআর এ লিখেন,কাগজের মান শেষ পর্যন্ত সঠিক যেন থাকে । এটা গুরুতর জালিয়াতি কোটি টাকার বিল এভাবে পরিশোধ করা যায় না,এ বিষয়ে সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান বলেন,আমার কাছ থেকে বিলে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেয়ার বিয়ষটি সঠিক না। আমার সাথে সচিব স্যারের সাথে সম্পর্ক ভালো,কখনো খারাপ ছিল না,আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল অভিযোগ নিস্পত্তি হয়ে গেছে। এখন আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার বলেন,সচিবের বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে এখনও পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি,অভিযোগ আসলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।উল্লেখ্য সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম কমিউনিস্টপন্থি ব্লকের একজন সক্রিয় কর্মি। তাছাড়া চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড এর সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিউনিস্টপন্থি মাহবুব হাসানের ঘনিষ্ঠ সহচর।যিনি তৎকালিন উচ্চআদালতে দোষি (কোর্ট অব কনডেম) হয়।