নারী শালীনতা সংরক্ষণকল্পে দৃষ্টি সংযম, গুপ্তাঙ্গের হিফাযত এবং নারী সৌন্দর্য প্রদর্শনে বিরত থাকার নির্দেশ দান করে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মু’মিনগণ! নিজেদের ঘর ব্যতীত অন্য বাড়ীতে বা অন্য কারো গৃহে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রবেশ করবে না যতক্ষণে বাড়ীর মালিক পরিচয় পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করবে ও তার সাথে কুশল বিনিময় করবে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়। আশা করা যায় তোমরা এটা স্মরণ রাখবে।
আর যদি সেখানে কাউকে না পাও তাহলে সেখানে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রবেশ করবে না যে পর্যন্ত না সেখানে প্রবেশ করতে তোমাদের অনুমতি দেয়া হয়। আর যদি তোমাদেরকে ফিরে যেতে বলা হয় তবে ফিরে যাবে। এটা তোমাদের জন্য পবিত্রতম কর্মনীতি। আর (মনে রেখ) তোমরা যা কিছু কর তা আল্লাহ ভালভাবেই জ্ঞাত যা তোমরা প্রকাশ কর আর যা তোমরা গোপন কর।
‘(হে নবী) মু’মিন পুরুষদের বলুন! তারা যেন তাদের দৃষ্টি নিচু রাখে এবং যৌনাঙ্গের হিফাযত করে। এটিই তাদের জন্য উত্তম পন্থা। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে মহান আল্লাহ সে সম্পর্কে জ্ঞাত।
আর মু’মিন নারীদেরকে বলুন! তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের যৌনাঙ্গের রক্ষা করে, তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশ থাকে, তা ব্যতীত তাদের আবরণ প্রকাশ না করে, তাদের বক্ষদেশ এবং গ্রীবা মাথার কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখে।
তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, পুত্র, স্বামীর পুত্র, আপন ভাই, ভাইয়ের পুত্র, ভগ্নীপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাস, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনারহিত পুরুষ এবং নারীর গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে এখনও বুঝে উঠেনি এমন বালক ছাড়া কারো নিকট তাদের আবরণ প্রকাশ না করে।
তারা যেন তাদের গোপন আবরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে ঈমানদারগণ, তোমরা সকলে মহান আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরাহ আন্ নূর : ২৭-৩১)
আলোচ্য আয়াতেপাকে নারী পুরুষ উভয়কেই তাদের দৃষ্টি নীচু করে রাখতে ও তাদের গুপ্ত অঙ্গের রক্ষা করতে আদেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু নারীদের জন্য এটাই যথেষ্ট নয় বলে তাদেরকে আরো অতিরিক্ত নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তা হল-তারা যেন নিজেদের যীনাত (সৌন্দর্য) প্রদর্শন না করে, তবে যা এমনিতেই প্রকাশ হয়ে পরে, সেটা ভিন্ন কথা।
তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন চাদর দ্বারা আবৃত রাখে এবং পথ চলার সময় তারা যেন অতি সাবধানতা অবলম্বন করে। পদধ্বনিতে তাদের অপ্রকাশিত সৌন্দয্য যেন প্রকাশ না হয়ে পরে। তবে পরিবার পরিচালনা ও পারিবারিক কার্য সমাধানের জন্য কতিপয় পুরুষের সাথে দেখা এবং সাহায্য গ্রহণ নারীদের পক্ষে নিতান্ত জরুরী হয়ে পরে।
তদুপরি স্ত্রী-পুরুষের যৌথ উদ্যোগ ছাড়া পারিবারিক জীবন সার্থক ও সফল হতে পারে না। এ জন্যই কতিপয় নারী-পুরুষের দেখা সাক্ষাত ইসলাম নিষিদ্ধ করেনি। তারা হল: স্বামী,পিতা, স্বামীর পিতা, নিজের সন্তান-সন্ততি, সহোদর ভাই, সহোদর ভাইয়ের সন্তান-সন্ততি ও সহোদর বোনের সন্তান-সন্ততি। তাদেরকে ইসলামী শরীআতের ভাষায় ‘মুহাররাম’ বলা হয়।-চলমান।
-এম এ আক্কাছ নুরী
পর্দা সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশঃ
