আজ বাংলাদেশে শুরু হলো মুসলিম সম্প্রদায়ের সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। এসময় খাদ্যাভ্যাসে সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধনী-গরীব প্রতিটি ঘরে বাহারি আয়োজনের ফলে সারা দিন রোজা পালন শেষে ইফতারে অনেকেই বেশি বেশি খেয়ে ফেলে। রাতের খাবারে কমবেশি সকলে পরিমাণ মতো খেলেও সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে এই ভেবে অনেকেই সেহরিতে অধিক পরিমাণে কাবার গ্রহণ করে।তাছাড়া ইফতার ও সেহরিতে বেশির ভাগ রাখা হয় মুখরোচক ও ভাজাপোড়া খাবার, যাহা মোটেও রোজাদারের জন্য কাম্য নয়। কিন্তু এ সময় খাদ্য তালিকায় মুখরোচক ভাজাপোড়া নয় বরং পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে এবং আহার করতে হবে পরিমিত। শরীরের চাহিদার থেকে খাবারের পরিমাণ কোন অবস্থাতেই কম বা বেশি হাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
মূলত একজন রোজাদার ইফতার ও সেহরিতে কি খাবেন তা নির্ভর করবে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের উপর। সেহরি ও ইফতারে সহজে ও তাড়াতাড়ি হজম হয় এমন খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। সকল রোজাদারের জন্য ইফতারিতে খেজুর, ঘরের তৈরি বিশুদ্ধ শরবত, কচি শসা, পেঁয়াজু, চনাবুট, এবং ফরমালিন মুক্ত মৌসুমি ফল থাকতে হবে। রুচি অনুযায়ী বাসার রান্না করা নাস্তা খেতে পারেন। প্রচুর সবুজ শাকসবজি, ফলমূল আহার করা উচিত। ইফতার ও সেহরি সময়ের মধ্যে অন্তত পক্ষে আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করতে হবে, তবে একবারে নয়, থেমে থেমে।
এশা ও তারাবির নামাজের পর অভ্যাস অনুযায়ী পরিমাণ মতো ভাত, মাছ অথবা মুরগির মাংস, ডাল ও সবজি খাওয়া যাবে। সেহরিতে ভাতের সঙ্গে মিশ্র সবজি, মাছ অথবা মাংস খাওয়া যাবে। প্রতিদিন একটি করে ডিম খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে। যাদের দুধ খাওয়ার অভ্যাস আছে তাঁরা সেহরির পর এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে ধীরে ধীরে খেতে হবে যা হজমে সহায়ক হবে।
ইফতার ও সেহরিতে এনার্জি ড্রিংক, কার্বনেটেড ড্রিংক এবং সোডা জাতীয় পানীয় বর্জন করা উচিত । কারণ এগুলো এসিডিটি বাড়িয়ে দেয়। পারত পক্ষে বাইরের অর্থাৎ দোকানের তৈরি ইফতার না খাওয়াই ভালো। তেহারি বা হালিম না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে বদহজম হতে পারে। অনেকেই সেহরি খেতে চান না। শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখেন কিন্তু কখনোই শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখা যাবে না। অধিক তেল, অধিক ঝাল, অধিক চর্বি জাতীয় খাবার সেহরিতে খাওয়া একদম উচিত নয়। সুগার ড্রিংক, চা ও কফি যতটা সম্ভব কম পান করতে হবে। রান্নার সময় খাবারে ডালডার পরিবর্তে সয়াবিন তেল ব্যবহার করতে হবে তবে যতটা সম্ভব কম পরিমাণে। অতিরিক্ত লবণ ও লবণাক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।