মাসুদুল ইসলাম মাসুদ।
হাজারো স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন ফটিকছড়ির ধর্মপুর ইউনিয়নে ৪ নং ওয়ার্ড এর বুধাগাজীর বাড়ি নিবাসী বীর মুক্তি যোদ্ধা আমীর ফজল এর ছোট ছেলে মোহাম্মদ হাসানউল্লাহ। ৩ ভাই ৩ বোন তারা। হাসান সবার ছোট ভাই।
হাসান বসবাস করত ওমান এর মাস্কাট প্রদেশের ইসমাইল রাস্তা নামক স্থানে। গতকাল ছিল তার কর্মস্থলের শেষ দিন। তার সাথে থাকা এক সহকর্মীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, হাসান গতকাল আমাদের সাথে শেষ চাকুরী করে বিদায় নেন। বেশ কিছু দিন ধরে হাসান বলতেছিল ভাই আমি আমার ভাইয়ের সাথে বাড়ি যাবো আর বিয়ে শাদী করব। অন্য খানে চাকুরির কথা ছিল কিন্তু গতকাল হঠাৎ আমাদের কে বলে আমি দেশে যাবো। এটা বলে আমার পাওনা টাকা আমাকে শোধ করে দে। আমি সহ সবার সাথে বিদায় নে হাসান। হাতে ছিল ছোট একটি ব্যাগ। ব্যাগটি নিয়ে রওনা দে। রুম হতে বের হয়ে মাত্র ৮/১০ মিনিটের মধ্যে “ইসমাইল রাস্তা ” পার হওয়ার জন্য ৫/৬ কদম দিতে পিছন থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি গাড়ি তাকে আঘাত করে। প্রথমে তার হাত চলে যায়, এরপর গাড়ির গ্লাসে মাথা আটকে যায়। রাস্তার পাশে পরে থাকে হাসানের শরীর। প্রায় ২০/৩০ মিনিট পর ওমানি পুলিশ এসে তার পরে থাকা দেহ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি ৪/৫ ঘন্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শেষ রাতের দিকে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। স্থানীয় প্রবাসীদের মাঝে এই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পরলে নেমে আসে শোকের ছায়া। সাথে সাথে এই খবর চলে তার দেশের বাড়ি ফটিকছড়িতে। ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর। বন্ধু মাঝে চলে শোকের মাতম। তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় অসংখ্য শোকের পোস্ট।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যায়, তার মরদেহ হাসপাতালের ফ্রিজ রুমেই আছে। বাংলাদেশ দূতাবাস ও ওমান পুলিশের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে তার মরদেহ দেশে নিয়ে আসা হবে। তার সহকর্মী জানায় এরি মধ্যে কাগজ পত্রের বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে।
এই দিকে তার বাড়িতে চলতেছে শোকের মাতম। বাবা তার ছোট ছেলেকে হারিয়ে হয়েছে পাগল। হাসান মা কিছুদিন আগে মারা যায়। একদিকে জীবনসঙ্গী আরেক দিকে আদরের ছোট ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু সব মিলিয়ে তিনি শোকের সাগরে ভাসছেন। তার সহকর্মী ও বাড়ির সকলে তার জন্য দোয়া ছেয়েছেন। যেন আল্লাহ হাসানকে জান্নাতের উচ্চ মকাম দান করুক। আমিন।