বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যেগের আহবায়ক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী গণমাধ্যমকর্মীদের তথাকথিত নিরপেক্ষতার ভান করে নাগরিক দায়িত্ব এড়িয়ে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাজপথে যখন পেট্রল বোমা আর গ্রেনেড পড়ে , তখন বাংলাদেশটাই ক্ষতবিক্ষত হয়। কোন শ্রেণী পেশার মানুষই এতে নিরাপদ বোধ করেন না। বাংলাদেশ আমাদেরই দেশ। পেশাজীবী নাগরিক হিসেবে এই দেশকে বোমাবাজ আর আন্তর্জাতিক অপশক্তির কবল থেকে মুক্ত রাখতে নির্বাচনে প্রগতিশীল শক্তির প্রতীক নৌকাই আমাদের শেষ ঠিকানা। সাংবাদিক ও পেশাজীবী নেতা রিয়াজ হায়দার চৌধুরী আরো বলেন, “তথাকথিত নিরপেক্ষতার ভান করে ঠুনকো অজুহাত দিয়ে ঘরে বসে থাকার সুযোগ আর নেই। বাংলাদেশ আজ দুভাগে বিভক্ত। এই বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর সাথে সমানে সমান পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশ নিজের অধিকার অর্জন করেছে নানা ক্ষেত্রে। স্বৈরাচার শাসকদের আমলে গণমাধ্যমের গলাটিপে ধরে নিয়ন্ত্রণ করা হতো। সে অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাংবাদিক সমাজের জন্য কল্যাণ তহবিল ও ট্রাস্ট গঠন, তথ্য কমিশন গঠনসহ স্মরণকালের সবচে বেশি সহযোগিতা দিয়েছেন আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী। তাই গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধ, আপনারা ঘরে বসে থাকবেন না। পথে নামুন, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের এই অভিযাত্রায় অংশ নিন। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখার স্বার্থে নৌকায় ভোট দিন। ” সাংবাদিক ও নাগরিক সংগঠক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী আজ (21/12/2018) শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামে গণমাধ্যম কর্মীদের ‘উন্নয়ন সমৃদ্ধির অদম্য অভিযাত্রা’ শীর্ষক জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রিক প্রচার কর্মসূচিতে এই বক্তব্য রাখেন। তিনি বিএফইউজের পক্ষ থেকে এ আয়োজনের প্রতি সংহতি জানান তিনি। উজ্জীবিত ৭১’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সাংবাদিক ফোরাম, চট্টগ্রাম এর উদ্যেগে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।। উদ্বোধনী বক্তব্যে চবি উপাচার্যও বাংলাদেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিতে আহ্বান জানিয়েছেন । এতে আরো বক্তব্য রাখেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এজাজ ইউসুফী ,মুক্তিযোদ্ধা পরিবেশবদ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, তরুণ সাংবাদিক নেতা হামিদ উল্লাহ প্রমুখ ।সাংবাদিক শাহরিয়ার হাসানের সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক নেতা উত্তম সেন গুপ্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক পংকজ দস্তিদার, দেবদুলাল ভৌমিক, বিএফইউজের নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহার মাহমুদ, সাংবাদিক বিশ্বজিৎ বড়ুয়া, প্রীতম দাশ, অনুপম শীল, পার্থ প্রতীম বিশ্বাস, আহসান হাবিবুল আলম, শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন আবু, ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান তারেক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী নিঝুম, জয়, মৃত্তিকা, আদৃতা, সানন্দা, ডেইজি, রঞ্জন ও শীলা দত্ত। অভিযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়। অভিযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেশে আজ দুটি পক্ষ। একটি বাংলাদেশের পক্ষে, অন্যটি বাংলাদেশের বিপক্ষে। বাংলাদেশের পক্ষ শক্তিটির নেতৃত্বে আছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একসময় বাংলাদেশের নাম দুর্নীতির তালিকায় শীর্ষে থাকত। আর আজ বাংলাদেশ পরিচিত উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। বাংলাদেশকে যে মানুষটি আবার জাগিয়ে তুলেছেন তিনি শেখ হাসিনা। তিনিই বাংলাদেশকে উন্নয়ন সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও সাংবাদিকরা বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন, আজো আছেন। আপনাদের এ আয়োজন আমাকে অভিভূত করেছে। বাংলাদেশ পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ কী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ধারায় থাকবে না কি পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িক ধারায় ফিরে যাবে তা এবার নির্ধারিত হবে। এরকম একটি সময়ে চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদ। আমার যদি এবার সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করি তাহলে দেশ পিছিয়ে যাবে। শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্ব সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। কিছু কুলাঙ্গার এখনো বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বানাতে চায়। তাদের জন্য শুধুই ঘৃণা।চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগে এ স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আমরা আর সেই বাংলাদেশ চাই না যেখানে রাজাকারের গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়বে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা গত ১০ বছরের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে এসেছেন। ৩০ ডিসেম্বর আমরা এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এজাজ ইউসুফী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার পুরো ৪৭ বছর ক্ষমতায় থাকলে আজ বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যেত। ১০ বছরে যে উন্নতি হয়েছে তা বিশ্বের কাছে অনুকরণীয়। এ কারণে আজ সাংবাদিকরা পথে নেমেছে। আমরা আবারো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতাই চাই। অধ্যাপক মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত-উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আজ সেই বাংলাদেশেই আমরা আছি। ৪৭ বছরের মধ্যে মাত্র ২১ বছর বাংলাদেশের ধারায় ছিল দেশ। তাতেই আমরা এত দূর এসেছি। এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। তরুণ সাংবাদিক নেতা হামিদ উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের শক্তি তরুণরাই। যতদিন এদেশে পাকিস্তানি চেতনার ধারকরা ধ্বংস হবে না ততদিন আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় চাইব। মানুষের কাছে যাব নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান নিয়ে। -প্রেসবিজ্ঞপ্তি