দীর্ঘ দশ বছর পর জনসভায় যোগ দিতে আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে পুরো চট্টগ্রামে সাজ সাজ রব। নগরজুড়ে চলছে প্রচার-প্রচারণার কাজও। নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে চলছে জনসভার আয়োজন। নৌকার আদলে প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ। যেখানে প্রায় ২শ অতিথি একসঙ্গে বসতে পারবেন। সেই মঞ্চ তৈরির কাজও প্রায় শেষের দিকে। অন্যদিকে মঞ্চের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, ভিআইপি ও নারীদের বসার জন্য পৃথক প্যান্ডেলের কাজও চলছে। ইতোমধ্যে পুরো আয়োজনের ১০০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
এদিকে সর্বশেষ ২০১২ সালের ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০ বছর ৯ মাস পর একই মাঠে আবার ভাষণ দেবেন তিনি। এ উপলক্ষে শুধু পলোগ্রাউন্ড মাঠ নয়, নগরের টাইগারপাস, লালখানবাজার, কাজীর দেউড়ি, নিউমার্কট এলাকা তোরণে ছেয়ে গেছে। একই সঙ্গে চলছে সড়ক মেরামত, রাস্তার দুপাশে সৌন্দর্য্যবর্ধন ও পরিচ্ছন্নতার কাজ।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পলোগ্রাউন্ড মাঠের প্রবেশমুখ থেকে ভেতরের রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। সারা মাঠে চলছে বাঁশ দিয়ে বেস্টনী তৈরির কাজ। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভেতরে বসানো হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ স্ক্যানিং মেশিন। একই সঙ্গে মাঠের চারপাশে বসানো হচ্ছে ৩৫টি ভ্রাম্যমাণ টয়লেট। ইতোমধ্যে পলোগ্রাউন্ড মাঠের চারপাশের প্রাচীরের সংস্কার ও রংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে পুরো মাঠ। মাঠের আশেপাশে এলইডি লাইটিং এর ব্যবস্থা করা হলেও ভেতরে এখনো মাইক বসানো ও সাউন্ড সিস্টেমের কাজ বাকি। গত ১৫ নভেম্বর থেকে পলোগ্রাউন্ড মাঠে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তা এখনও চলমান। স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ), পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি সার্বক্ষণিক।
‘চল চল পলোগ্রাউন্ড চল’, ‘দলে দলে যোগ দিন সফল করুন’, ‘শেখ হাসিনার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’, ‘নেত্রী তুমি জনতার, উন্নয়ন রুখে সাধ্য কার’, ‘পলোগ্রাউন্ড ময়দানে গণতন্ত্রের মানসকণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’, ‘চট্টলবীরের চট্টলায় প্রিয় নেত্রী আপনাকে স্বাগতম’সহ নানা স্লোগানে ভরপুর ব্যানারে ছেয়ে গেছে পলোগ্রাউন্ড।
পলোগ্রাউন্ড মাঠের আশেপাশে পোস্তার পাড় উচ্চ বিদ্যালয়, আসমা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়, রেলওয়ে বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে পরীক্ষা চলছে। আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা শেষ হবার কথা রয়েছে। তবে আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে।
মঞ্চ তৈরির কাজে নিয়োজিত সাহাবউদ্দিন ডেকোরেটার্সের স্বত্বাধিকারী হাজী মো. সাহাবউদ্দিন বলেন, আমার খুব ভালো লাগছে। প্রধানমন্ত্রী সবশেষ ২০১২ সালে এই পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভা করেছিলেন। তখনও আমি জনসভার মঞ্চ তৈরি করেছিলাম। এবারো দায়িত্ব পেয়েছি। আমি বার বার মাঠে এসে সবকিছু তদারকি করছি। পুরো মাঠে আমার ডেকোরেশনের ১শ লোক কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চটি হবে নৌকার আদলে। মঞ্চটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১৬০ ফুট। মঞ্চের উচ্চতা হবে সাত ফুট। এর মাঝখানে ৪০ থেকে ৮০ ফুটের মধ্যে দুইশ অতিথি বসবেন। মঞ্চের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, ভিআইপি ও নারীদের বসার জন্য পৃথক প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। পলোগ্রাউন্ড ও আশপাশ এলাকায় বসছে বিখ্যাত মাইক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কলরেডির ৩শ মাইক। মঞ্চের মাঝখানে ৮০ ফুটের এলইডি লাগানো হবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। নেতাকর্মীরা দিন-রাত প্রচারের কাজ সামলাচ্ছেন। বিভিন্ন সময় নেতাকর্মীরা মাঠ পরিদর্শনেও আসছেন।
জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আমাদের নেত্রী আসবেন। এটা আমাদের জন্য পরম আনন্দের। দীর্ঘদিন পর আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ হচ্ছে পলোগ্রাউন্ডে। এখানে ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তাই নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও উজ্জীবিত। আমরা মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সবাই মিলে এই আয়োজন করছি। আমাদের যাবতীয় প্রচারের কাজ চলমান। সারাদিন ট্রাকে করে প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করছেন নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি পলোগ্রাউন্ড মাঠে মঞ্চ থেকে শুরু করে সব কাজই প্রায় শেষের দিকে। মাইক বসানোর কাজও শেষ। এই সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ ও নেতাকর্মীদের সমাগম হবে। তাই আমরা নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে সভা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, আগামী ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগরজুড়ে সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এরমধ্যে পলোগ্রাউন্ড মাঠসহ পুরো চট্টগ্রাম মহানগরে আমাদের ৬ হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। নিরাপত্তার বিষয়টি আরো জোরদার করতে বাইরে আরো দেড় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এটা চট্টগ্রামের জন্য বড় উৎসব। নিরাপত্তার জন্য আমাদের আয়োজন ভাল। স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) পুরো আয়োজনটাই তদারকি করছে। তাদের পরামর্শ মোতাবেক পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা, ড্রোন থাকবে। মোটকথা, পুরো শহর জুড়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আপডেট
আপডেট, ২৪ শে অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ঃ৩২ মিনিট।
উত্তর মধ্য বঙ্গপোসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও কিছুটা উত্তর উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে এখন উত্তর বঙ্গপোসাগর তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
এবং এটি আজ ২৪ শে অক্টোবর সন্ধ্যা ৫ টা বেজে ৫০ মিনিটে মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থান করছিলো। এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিলো এবং এটি উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের অগ্রভাগ, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি উপকূলে হিট করা শুরু করেছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৫ কিলোমিটার এর ভেতরে বাতাসের একটানা গড় গতিবেগ ঘন্টায় ৭৫ কিলোমিটার, যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাগর ঔ স্থানে প্রচন্ড উত্তাল রয়েছে, সরকারি আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নাম্বার বিপদ সংকেত ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নাম্বার বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে।
ঘূর্ণিঝড় আঘাত : এই ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আজ রাত ৯ টার পর, বরগুনা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা অতিক্রম শুরু করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় টি উপকূল অতিক্রম করার সময় এর বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৮০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার এর ভেতরে থাকতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম কালে, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী নোয়াখালী, ফেণী, চট্টগ্রাম উপকূলে ঘন্টায় ৮০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার বেগে দমকা থেকে ঝড়ো হাওড়া বয়ে যেতে পারে।
জলোচ্ছ্বাস : ঘূর্ণিঝড় টি অতিক্রম কালে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, ফেণী, চট্টগ্রাম এদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর সমূহে স্বাভাবিক জোয়ার থেকে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চ জলোচ্ছ্বাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে, যেহেতু সেইসময় অমাবস্যা থাকবে।
বৃষ্টি : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ইতিমধ্যে দেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, এবং সেই সঙ্গে দেশের অনেক এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে।, সময়ের সাথে সাথে বৃষ্টি এবং বাতাস দুটোই বাড়তে পারে। এদিকে আজ বিকেল সন্ধ্যা ৭ টা থেকে পরবর্তী ১২ ঘন্টার ভেতরে, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, নোয়াখালী পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, ফেণী, চট্টগ্রাম ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে, এবং সেইসঙ্গে, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা, চাঁদপুর, কুমিল্লা, নরসিংদী, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, ময়মনসিংহ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারি বর্ষণ হতে পারে ও রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অধিকাংশ এলাকা ব্যাতিত দেশের বাকি এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
পাহাড়ধ্বস : এই ভারিবৃষ্টির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পাহাড়ধ্বস হতে পারে।
সতর্কতা! ছোট হোক এটা যেহেতু ঘূর্ণিঝড় আকারে দেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে, তাই উপকূলে যারা আছেন, আপনারা সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিয়ে রাখুন, এবং যারা বেশি ঝুকিপূর্ণ এলাকায় আছেন তারা আজই সময় থাকতে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করুন, এবং আগামী ২৬ শে অক্টোবর পর্যন্ত সকল প্রকার মাছধরা নৌকা ও ট্রলার নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ৪% সুদে ঋণ পাবে।
এসএমই ফাউন্ডেশন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ৪ শতাংশ সুদ হারে আরো ৪০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে যাতে তারা সবাই করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে। এ প্রকল্পের আওতায় একজন উদ্যোক্তা সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। এ লক্ষ্যে ১৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন অংশীদার ১৫টি ব্যাংক ও ৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনা মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরূদ্ধার ত্বরান্বিতকরণ এবং পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ঋণদান কর্মসূচি সম্প্রসারণের নিমিত্ত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে দুই ধাপে ৩০০ কোটি টাকা ছাড় করা হয়, যা ইতোমধ্যেই উদ্যোক্তা পর্যায়ে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। অর্থ বিভাগের পরামর্শ মতো প্রত্যাবর্তন অর্থ এবং নিজস্ব তহবিল দিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশন একটি ‘রিভলভিং ফান্ড’ গঠন করেছে।
রিভলভিং ফান্ড থেকে এসএমই উদ্যোক্তা, ক্লাস্টার, ক্লায়েন্টেল গ্রুপ, অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারের সদস্য ও নারী-উদ্যোক্তাদের মাঝে এই ঋণ বিতরণ করা হবে। ফাউন্ডেশনের ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির আওতায় রিভলভিং ফান্ড পরিচালনার পলিসি গাইডলাইন প্রস্তুত করা হয়েছে।
চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ১৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পলিসি গাইডলাইন অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত গ্রামীণ ও প্রান্তিক পর্যায়ের অতি ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
অগ্রাধিকারভুক্ত এসএমই সাব-সেক্টর, ক্লাস্টার এবং ভ্যালু চেইনের আওতাভুক্ত উদ্যোক্তা। সারাদেশের নারী-উদ্যোক্তা। নতুন উদ্যোক্তা অর্থাৎ যারা এখনো ব্যাংক থেকে ঋণ পাননি। পশ্চাদপদ অঞ্চল, উপজাতীয় অঞ্চল, শারীরিকভাবে অক্ষম এবং তৃতীয় লিঙ্গের উদ্যোক্তা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত ট্রেডবডি, এসএমই অ্যাসোসিয়েশন, নারী-উদ্যোক্তা সংগঠন, নাসিব এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে এমন সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সুপারিশকৃত উদ্যোক্তা।
গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা হবে সর্বোচ্চ ৩ বছর, ৬ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০টি মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে। মোট ঋণের ২৫ শতাংশ নারী-উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করতে হবে এবং ৩০ শতাংশ উদ্যোক্তার ঋণ ১০ লাখ টাকা বা তার চেয়ে কম পরিমাণের হতে হবে। ক্লাস্টার ও সেক্টরের ভ্যালু চেইন যেমন, টেক্সটাইল খাতের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, সুতা, রং, স্ক্রিন প্রিন্ট, প্যাকেজিং, খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রেতা, সরবরাহকারী এবং উৎপাদিত পণ্য পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা অগ্রাধিকার পাবেন।
ভ্যালু চেইনের উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ ঋণ ব্যবসা (ট্রেডিং) খাতে প্রদান করা যাবে। ব্যাংকার-কাস্টমার সম্পর্ক ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৫জন উদ্যোক্তার অনুকূলে গ্রুপভিত্তিক ঋণ বিতরণ করা যাবে। ফাউন্ডেশন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম নিয়মিতভাবে মনিটরিং করবে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রণোদনা প্যাকেজ রিভলভিং ফান্ড থেকে ঋণ বিতরণ নীতিমালার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন মহাব্যবস্থাপক নাজিম হাসান সাত্তার।
চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ভিটামিন ‘এ’
ক্যাপসুল খাবে ৮ লাখ ২০ হাজার শিশু- সিভিল সার্জন।
সারাদেশের ন্যায় আগামী ১২ জুন রোববার থেকে ১৫ জুন বুধবার পর্যন্ত চট্টগ্রামেও অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে ৪ দিনব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২২। ঐ সময়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় ৬-১১ মাস বয়সী ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৮ লাখ ২০ হাজার ৩৭৫ জন শিশুকে একটি করে নীল ও লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ৯১ হাজার ৮৬২ জন শিশু খাবে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ২৮ হাজার ৫১৩ জন শিশু খাবে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ)। ২০২১ সালের ১১-১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-১১ মাস বয়সী ৯০ হাজার ১৯০ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল নির্ধারণ করা হলে এর অর্জিত হার ছিল ৯৮ শতাংশ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ৪ হাজার ৮’শ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল নির্ধারণ করা হলে এর অর্জিত হার ছিল ৯৮ শতাংশ।
এ উপলক্ষে জেলা পর্যায়ের সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা আজ ৯ জুন ২০২২ ইংরেজি বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত হয়। সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত¡াবধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্টিত কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, এমওডিসি ডা. মোঃ নুরুল হায়দার চৌধুরী ও ডিএসএমও (যক্ষা) ডা. প্রমিতি কর্মকার।
সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী এ ক্যাম্পেইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা বর্তমান সময়ে খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে অপুষ্টি দূরীকরণ সম্ভব হবে। সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরিধানসহ হাত ধোয়ার বিধি মেনে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। কোন শিশু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো থেকে যাতে বাদ না যায় সে দিকে সবাইকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। এছাড়া শিশুর বয়স ৬ মাসপূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাবার খাওয়াতে হবে।
তিনি বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। পরিবারের রান্নায় ভিটাামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার শিশুর জন্য যথেষ্ট উপকারী। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্র্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ খাবার থেতে দিতে হবে। চট্টগ্রাম জেলার প্রত্যেক উপজেলায় ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিতব্য সকল জাতীয় কর্মসূচীসমূহ শতভাগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আসন্ন জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপাওে সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তাগণকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, মসজিদ-মন্দির-উপাসনালয়, হাটবাজার, বাস স্ট্যান্ড ও নৌ-ঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণস্থানেও মাইকিং করে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। এ কর্মসূচী সফল করতে সরকারী প্রতিষ্টান, জনপ্রতিনিধি, আনসার-ভিডিপি ও এনজিও সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারী কর্মকর্তা, মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী শিশুদেরকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে।
জেলা সিভিল সার্জন সূত্র জানায়, এবার চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলার ২’শ ইউনিয়নের ৬’শ ওয়ার্ড, ১৫টি স্থায়ী কেন্দ্র, ১৫টি ভ্রাম্যমান কেন্দ্র ও ৪ হাজার ৮’শ কেন্দ্র, বিমান বন্দর ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে ১২-১৫ জুন তারিখে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ৩৯ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ১৩৬ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ৫৪০ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ৬৮৬ জন পঃ পঃ সহকারী, ১৫৩ জন পঃ পঃ পরিদর্শক, ৯ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১৫ জন স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, ৫০৯ জন সিএইচসিপি ও ৮২ জন স্যাকমো জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের দায়িত্বে নিয়োজিত থধাকবে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু মানুষ আহত ও নিহত হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেলে বার্ন ইউনিট সহ অন্যান্য ইউনিট এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহতদের তদারকির জন্য গভীর রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ছুটে যান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী। উনার নির্দেশে আহতদের চিকিৎসা ও সেবার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ছুটে যান কাউন্সিলারবৃন্দ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সেচ্ছাসেবকবৃন্দ ও চিকিৎসকবৃন্দ।
সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোয় ভয়াবহ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত প্রায় ২৩ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। অগ্নিনির্বাপনে কর্মরত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সএর কর্মীদের প্রতি তিনি ধন্যবাদ জানান। তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নেভানোর কাজ চলছে পুরোদমে। চট্টগ্রামের যে সকল নেতাকর্মী ও আশেপাশের যারা রক্ত দিয়ে ঔষধ দিয়ে আহতদের সাহায্য করছেন, তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
জানুয়ারিতে চালু হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
ডিসেম্বরে পরীক্ষামূলক উৎপাদনের পর জানুয়ারিতে চালু হচ্ছে বেসরকারি খাতে দেশের সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট। বর্তমান এ লক্ষ্যে কর্মযজ্ঞে মুখর চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাগর উপকূল। চালুর পর জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
দেশি-বিদেশি প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক দিনরাত ব্যস্ত এমন কর্মযজ্ঞে। প্রথম চুল্লির কাজ শেষে চলছে দ্বিতীয় চুল্লির কাজ। আগামী ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিট থেকে প্রাথমিক উৎপাদন শুরুর লক্ষ্য কর্তৃপক্ষের। এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফাইজুর রহমান জানালেন, সব ঠিক থাকলে জানুয়ারির মধ্যে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে উপকূলবর্তী ৬শ একর জায়গায় নির্মিত বেসরকারি খাতে দেশের সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
সম্প্রতি প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছেন চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পের ৭০ শতাংশের মালিকানা এস আলম গ্রুপের। বাকি ৩০ শতাংশের মালিকানা চীনের দুই প্রতিষ্ঠানের।
পলাতক পি কে হালদারসহ ছয়জন গ্রেপ্তার।
গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার যিনি হাজার কোটির বেশি টাকা আত্মসাৎ করে দেশ থেকে চলে গেছেন।
আজ (১৪ মে) শনিবার দুপুরে পি কে হালদারের গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি ভারতের বিভিন্ন খবরের সূত্রে নিশ্চিত করেছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোকনগরে সুকুমার মৃধা নামের পি কে হালদারের এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির তিন বাড়িতে অভিযান চালায় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই সংস্থা আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত করে থাকে।
আজ পি কে হালদারসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পি কে হালদারকে অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অশোকনগরে তিনটি বড় ভবন রয়েছে সুকুমার মৃধার। এলাকাবাসী তাঁকে মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে চেনেন। তবে সুকুমার মৃধা বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠজন বলে ইডির একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান।
অশোকনগরের স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, সুকুমার মৃধা বেশ কয়েক বছর ওই অঞ্চলে বসবাস করলেও সম্প্রতি তাঁকে সেখানে দেখা যায়নি। তিনি অশোকনগর ছাড়াও কলকাতা লাগোয়া উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় এমন অনেক জমিজমা কিনেছেন, যেগুলোর দাম ভবিষ্যতে বাড়বে। কলকাতা লাগোয়া দুটি নতুন বড় শহর রাজারহাট ও নিউটাউনের জমির দাম দ্রুত বাড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, সে কারণেই ওই জেলায় এত জমিজমা কিনেছেন পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ সুকুমার মৃধা। পুলিশের সূত্রটি জানায়, আজ অন্তত ১৫ জন সরকারি কর্মী ও কর্মকর্তাকে ওই অঞ্চলে তল্লাশি চালাতে দেখা গেছে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সব ধরনের ভ্রমণ, সেমিনার ও ওয়ার্কশপে অংশ নেওয়ার জন্য বিদেশ সফর বন্ধ।
গতকাল এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও বৈশ্বিক সংকটের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব প্রকার এক্সপোজার ভিজিট, স্টাডি ট্যুর ও ইনোভেশনের আওতাভুক্ত ভ্রমণ এবং ওয়ার্কশপ, সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব প্রকার বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ থাকবে।’
তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি যেভাবে ঢাকা শহরে ২ কোটি মানুষের মধ্যে দুইশ’ মানুষের বিক্ষোভ করে এতেই বোঝা যায় তারা আসলে কতটুকু আন্দোলন করতে পারবে।
আজ মঙ্গলবার ২৬ এপ্রিল অপরাহ্নে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে ঈদের পরে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।
কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন এসময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো: মাহফুজুল হক, ডিইউজের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ, কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সেবিকা রাণী প্রমুখ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চাই সরকারের যদি ভুলত্রুটি থাকে, সেগুলো বিএনপি তুলে ধরুক। তাদের আন্দোলন শুধুমাত্র তারেক রহমানের শাস্তি আর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে এটিই আমাদের কামনা। তারা জনগণের বিষয় নিয়ে কথা বলবে, সরকারের ভুলত্রুটি থাকলে সেগুলো তুলে ধরবে, সেটিই আমরা চাই। ‘এই ঈদের পরে, আগামী ঈদের পরে’ আন্দোলনের এ রকম দিনক্ষণ তারা আগেও দিয়েছে। এর জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে বিএনপি আসলে আন্দোলন করতে পারবে কি না। তারা যেভাবে ঢাকা শহরে ২ কোটি মানুষের মধ্যে দুইশ’ মানুষের বিক্ষোভ করে, এতেই বোঝা যায় বিএনপি আসলে কতটুকু আন্দোলন করতে পারবে।’
এসময় নিউমার্কেটের ঘটনা নিয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘সেই ঘটনায় বিএনপির স্থানীয় নেতারা যে ‘ঘি ঢেলেছে’, পুলিশের কাছে সেই তথ্য আছে। যে দুই দোকান কর্মচারির মধ্যে বচসা, সেই দুই দোকানের মালিক কিন্তু বিএনপি নেতা। সুতরাং এই বচসা ঘটানোর পেছনে দুরভিসন্ধি আছে কি না সেটি তো অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। তবে, নিউমার্কেটের ঘটনায় যারাই যুক্ত, তারা যে দলের বা যে মতেরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দৈনিক পত্রিকার প্রচার সংখ্যা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইংরেজি পত্রিকাগুলোর প্রচার সংখ্যা হালনাগাদ করে বাস্তবতার কাছাকাছি নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলা পত্রিকাগুলোর ক্ষেত্রেও আমরা সেটা খুব সহসা করে দেবো। অনেক পত্রিকা যেগুলো আসলে ঠিকভাবে প্রকাশিত হয় না, সেগুলোর বিপুল প্রচার সংখ্যা দেখানো হয়েছে, এ সব অসংগতি দূর করে আমরা এগুলো ঠিক করছি। মন্ত্রী জানান, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অষ্টম ওয়েজবোর্ড যারা বাস্তবায়ন করে নাই তাদেরকে আমরা সরকারের কোনো ক্রোড়পত্র দেবো না এবং ভবিষ্যতে নবম ওয়েজবোর্ড যারা বাস্তবায়ন করবে না, সে ক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে, সেটি নিয়েও ভাবছি।
এর আগে সাংবাদিক সহায়তা চেক বিতরণ পর্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহেই এই কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হয়েছে এবং আজকে এই ট্রাস্ট সাংবাদিকদের একটি ভরসার জায়গা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট অত্যন্ত সুচারু এবং স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ট্রাস্ট পরিচালনার সাথে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ যুক্ত আছেন, যা উপকারভোগী নির্বাচনে সহায়ক হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ট্রাস্টের আওতায় অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা সহায়তা নীতিমালাও চূড়ান্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনের পর থেকে আজকের এই আয়োজনসহ মোট ২২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ৮ হাজার ১৫৬ জন সাংবাদিক ও তার পরিবারকে দেয়া হয়েছে। এর আগে ২০১২ সাল থেকে সাংবাদিক সহায়তা নীতির আওতায় ট্রাস্ট গঠনের পূর্ব পর্যন্ত ৬২৩ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারকে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর করোনা সাহায্যের ১০ কোটি টাকা থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ৬ কোটি টাকা দেশব্যাপী সাংবাদিকদের এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী এরপর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস পরিচালনা পর্ষদের সাথে সভায় মিলিত হন এবং বাসসের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা করেন। পর্ষদের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ. আ. ম. স. আরেফিন সিদ্দিক ও পরিচালকদের মধ্যে বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এস এম মাহফুজুল হক, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক হারুন আল রশিদ, আইসিটি বিভাগের মহাপরিচালক ড. মুহাম্মদ মেহেদী হাসান, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক আলতামাশ কবীর, বাসসের নগর সম্পাদক মধু সূদন মন্ডল সভায় অংশ নেন।
বাংলা বর্ষবরণ-১৪২৯ বঙ্গাব্দ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ ১ বৈশাখ ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বর্ণাঢ্য কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। “মুছে যাক গøানি ঘুরেছ যাক জরা, অগ্নি¯œানে শুচি হোক ধরা”-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে জেলা প্রশাসন ও শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে বাদ্যের তালে তালে বাংলা ঐতিহ্যের উপকরণ পালকি, পুতুল, ঘোড়ার গাড়ি, প্ল্যাকার্ড ও অন্যান্য উপকরণ নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি দামপাড়া এম.এম আলী রোড ঘুরে পূনঃরায় শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস.এম রশিদুল হকসহ জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা শিল্পকলা-শিশু একাডেমির কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক-প্রশিক্ষনার্থী, বিভিন্ন এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বর্ষবরণ উপলক্ষে সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে ও আবৃত্তিকার ফারুক তাহেরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস.এম রশিদুল হক। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মোঃ বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ সুমনী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ মাহমুদ উল্ল্যাহ মারূফ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ভূমি অধিগ্রহণ) মোঃ মাসুদ কামাল, শিল্পকলা একাডেমির জেলা কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন সিকদার, শিশু একাডেমির জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মুহাম্মদ নুরুল আবছার ভূইয়া প্রমূখ। শেষে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাংকন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর দলীয় নৃত্য ও সংগীত পরিবেশন করেন। শিল্পীরা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানে গানে বরণ করে নেন বাংলা নববর্ষকে। নাচে-গানে জমজমাট ছিল পুরো শিল্পকলা একাডেমি। বাঙালি নারীর ঐতিহ্য শাড়ি আর পুরুষের পাঞ্জাবি। সরকারী-বেসরকারী কর্মকতার্-কর্মচারীদের মধ্যে পুরুষেরা পাঞ্জাবী ও নারীরা শাড়ি পড়ে এসেছেন অনুষ্ঠানস্থলে। শিশুরা মুখে বা হাতে রং-তুলি দিয়ে আঁকিয়ে নিচ্ছে ‘শুভ নববর্ষ’।####