আজ বাংলাদেশে শুরু হলো মুসলিম সম্প্রদায়ের সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। এসময় খাদ্যাভ্যাসে সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধনী-গরীব প্রতিটি ঘরে বাহারি আয়োজনের ফলে সারা দিন রোজা পালন শেষে ইফতারে অনেকেই বেশি বেশি খেয়ে ফেলে। রাতের খাবারে কমবেশি সকলে পরিমাণ মতো খেলেও সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে এই ভেবে অনেকেই সেহরিতে অধিক পরিমাণে কাবার গ্রহণ করে।তাছাড়া ইফতার ও সেহরিতে বেশির ভাগ রাখা হয় মুখরোচক ও ভাজাপোড়া খাবার, যাহা মোটেও রোজাদারের জন্য কাম্য নয়। কিন্তু এ সময় খাদ্য তালিকায় মুখরোচক ভাজাপোড়া নয় বরং পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে এবং আহার করতে হবে পরিমিত। শরীরের চাহিদার থেকে খাবারের পরিমাণ কোন অবস্থাতেই কম বা বেশি হাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
মূলত একজন রোজাদার ইফতার ও সেহরিতে কি খাবেন তা নির্ভর করবে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের উপর। সেহরি ও ইফতারে সহজে ও তাড়াতাড়ি হজম হয় এমন খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। সকল রোজাদারের জন্য ইফতারিতে খেজুর, ঘরের তৈরি বিশুদ্ধ শরবত, কচি শসা, পেঁয়াজু, চনাবুট, এবং ফরমালিন মুক্ত মৌসুমি ফল থাকতে হবে। রুচি অনুযায়ী বাসার রান্না করা নাস্তা খেতে পারেন। প্রচুর সবুজ শাকসবজি, ফলমূল আহার করা উচিত। ইফতার ও সেহরি সময়ের মধ্যে অন্তত পক্ষে আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করতে হবে, তবে একবারে নয়, থেমে থেমে।
এশা ও তারাবির নামাজের পর অভ্যাস অনুযায়ী পরিমাণ মতো ভাত, মাছ অথবা মুরগির মাংস, ডাল ও সবজি খাওয়া যাবে। সেহরিতে ভাতের সঙ্গে মিশ্র সবজি, মাছ অথবা মাংস খাওয়া যাবে। প্রতিদিন একটি করে ডিম খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে। যাদের দুধ খাওয়ার অভ্যাস আছে তাঁরা সেহরির পর এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে ধীরে ধীরে খেতে হবে যা হজমে সহায়ক হবে।
ইফতার ও সেহরিতে এনার্জি ড্রিংক, কার্বনেটেড ড্রিংক এবং সোডা জাতীয় পানীয় বর্জন করা উচিত । কারণ এগুলো এসিডিটি বাড়িয়ে দেয়। পারত পক্ষে বাইরের অর্থাৎ দোকানের তৈরি ইফতার না খাওয়াই ভালো। তেহারি বা হালিম না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে বদহজম হতে পারে। অনেকেই সেহরি খেতে চান না। শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখেন কিন্তু কখনোই শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখা যাবে না। অধিক তেল, অধিক ঝাল, অধিক চর্বি জাতীয় খাবার সেহরিতে খাওয়া একদম উচিত নয়। সুগার ড্রিংক, চা ও কফি যতটা সম্ভব কম পান করতে হবে। রান্নার সময় খাবারে ডালডার পরিবর্তে সয়াবিন তেল ব্যবহার করতে হবে তবে যতটা সম্ভব কম পরিমাণে। অতিরিক্ত লবণ ও লবণাক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
রোযা ঈমানের এক চতুর্থাংশ।
রোযা ঈমানের এক-চতুর্থাংশ । কারণ, হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
[عن جري بن كليب و ابي هريرة رضي الله عنهما: الصَّومُ نصفُ الصَّبرِ.
أخرجه الترمذي (٣٥١٩)، وأحمد (١٨٣١٣)، والدارمي (٦٨٠)
ابن ماجه (١٧٤٥) والبيهقي في «شعب الإيمان» (٣٥٧٧)
অর্থাৎ : রোযা সবরের অর্ধেক।
(তিরমিজি, ইবনে মা’জা, মুসনাদে আহমদ, সুনান দারিমী,বায়হাকী- শুআবুল ঈমান)
এবং অন্য এক হাদীসে বলেন : الصبر نصف الايمان
অর্থাৎ : সবর ঈমানের অর্ধেক।
এ থেকে জানা গেল, রোযা ঈমানের অর্ধেকের অর্ধেক অর্থাৎ এক-চতুর্থাংশ। রোযা আল্লাহ্ তাআলার সাথে সম্পর্কযুক্ত বিধায় ইসলামের সকল রোকনের মধ্যে এটা সেরা রোকন । সেমতে আল্লাহ তাআলার উক্তি রসূলে করীম (সাঃ) এক হাদীসে কুদসীতে বর্ণনা করেছেন । উক্তিটি এই ঃ সকল সৎ কাজের সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত হবে; কিন্তু রোযা একান্তভাবে আমার জন্যে বিধায় আমিই এর প্রতিদান দেব। আল্লাহ বলেন :
إِنَّمَا يُوقَى الصيرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيرِ حِسَابٍ .
অর্থাৎ, সবরকারীদেরকে বেহিসাব সওয়াব দান করা হবে।
রোযা সবরের অর্ধেক। তাই এর সওয়াব হিসাব-কিতাবের আওতা বহির্ভূত হবে। শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্যে রসূলে করীম (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর এ উক্তিই যথেষ্ট, তিনি এরশাদ করেন :
والذي نفسي بيده لخلوف فم الصائم اطيب عند
الله من ريح المسك يقول الله عز وجل بذر شهوته
وطعامه وشرابه لاجلى فالصوم لی وانا اجزی به .
আল্লাহর কসম, যার হাতে আমার প্রাণ- নিশ্চয় রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে মেশকের চেয়েও উত্তম। আল্লাহ বলেন, রোযাদার তার কামনা-বাসনা ও পানাহার একমাত্র আমার জন্যে পরিত্যাগ করে। অতএব রোযা আমার জন্যে এবং আমিই এর প্রতিদানদেব।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন :
للجنة باب يقال له الريان لايدخله الا الصائمون
. জান্নাতের একটি দ্বারকে বলা হয় ‘বাবুর রাইয়ান’। এতে রোযাদারগণ ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করবে না।
মুহাম্মাদ ছানা উল্লাহ শিবলী নোমানী।
লেখক, গবেষক, ইসলামি আলোচক।
শিক্ষক : উত্তর হারলা পূর্ব জোয়ারা মহিলা দাখিল মাদ্রাসা।
চন্দনাইশ পৌরসভা, চট্টগ্রাম।
খতিব: সুজার মা জামে মসজিদ।
১৮ নং ওয়ার্ড় পূর্ব বাকলিয়া, সেকান্দর চেয়ারম্যান ঘাটা, চট্টগ্রাম।
রোযা আল্লাহর সহিত সম্বন্ধযুক্ত হওয়ার কারণ।
ان الله عز وجل يقول “ان الصَّومُ لي وأنا أجزي بِهِ.
(رواه مسلم : كتاب الصوم ، صحيح بخاري : كتاب الوحيد: مسند احمد )
অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা বলেন “কেবল আমার উদ্দেশ্যেই রোযা রাখা হয় এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব।” (সহিহ বুখারী, মুসলিম ও মুসনাদে আহমদ)
সমগ্র বিশ্বজগত আল্লাহর অধিকারভুক্ত হলেও কা’বা শরীফকে যেমন তাঁহার গৃহ বলা হয়েছে, তদ্রূপ সমস্ত ইবাদত একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকলেও রোযাকে তাঁহার নিজের বলে অভিহিত করা হয়েছে। এইখানেই রোযার বিশেষত্ব।
দুইটি বিশেষত্বের কারণে রোযা বেনিয়ায আল্লাহর সহিত সম্বন্ধযুক্ত হওয়ার উপযোগী হয়েছে-
(১) রোযার মূলতত্ত্ব হলো কামনা- বাসনা পরিত্যাগ করা এবং এটি লোকচক্ষু হইতে সম্পূর্ণ গুপ্ত অন্তরের কাজ। সুতরাং এতে রিয়ার কোন অবকাশ নাই।
(২) শয়তান আল্লাহর শত্রু এবং কামনা- বাসনা শয়তানের সৈন্য। রোযা শয়তানের সৈন্যকে পরাজিত করে। কারণ কামনা- বাসনা বর্জনই হলো রোযার গূঢ় মর্ম। এইজন্যই রসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- “মানব শরীরে রক্ত যেরূপ চলাচল করে শয়তান তদ্রূপ তার অন্তরে চলাচল করে। সুতরাং ক্ষুধার্ত থেকে শয়তানের পথ দুর্গম করে দাও।”
তিনি আরও বলেন: “রোযা ঢালস্বরূপ।”
আম্মাজান হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন- ‘বেহেশতের দরজায় খটখটাতে থাক।” লোকে জিজ্ঞাসা করলো -“কোন জিনিস দ্বারা?” তিনি বললেন-“ক্ষুধা দ্বারা।” রাসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-“রোযা ইবাদতের দরজা।”
রোযার এত ফযীলতের কারণ এই – কামনা – বাসনা সকল ইবাদাতের প্রতিবন্ধকতা এবং তৃপ্তির সহিত ভোজনে বাসনা কামনা প্রবল হয়ে উঠে; আর ক্ষুধা বাসনা কামনাকে বিনাশ করে। তাই আসুন, রোযার অন্তর্নিহিত শিক্ষা গ্রহণ করার সাধনা করি।
লেখক : মুহাম্মদ ছানা উল্লাহ শিবলী নোমানী
লেখক,গবেষক, ইসলামি আলোচক।
শিক্ষক : উত্তর হারলা পূর্ব জোয়ারা মহিলা দাখিল মাদ্রাসা।
খতিব : সুজার মা জামে মসজিদ।
১৮ নং ওয়ার্ড়, পূর্ব বাকলিয়া, চেয়ারম্যান ঘাটা, চট্টগ্রাম।
মদ্যপান, চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার (যেনা) ইত্যাদি থেকেও মারাত্মক ও নিকৃষ্টতম পাপ ও কবিরা গুনাহ হলো গিবত। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! গিবত কি জেনা-ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ। কারণ, কোনো ব্যক্তি জেনার পর তাওবা করলে আল্লাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু গিবতকারীকে যার গিবত করা হয়েছে, তিনি মাফ না করলে আল্লাহ মাফ করবেন না।’ (মুসলিম) মনে রাখতে হবে, একটি কবিরা গুনাহ কাউকে জাহান্নামে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
গিবতকারীর অপরাধের শাস্তি রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বয়ং মিরাজে দেখে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘যখন আমাকে মিরাজে নিয়ে যাওয়া হলো, তখন আমাকে (জাহান্নামের শাস্তি দেখানোর জন্য) তামার নখবিশিষ্ট একদল লোকের পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। তারা তাদের নখগুলো দিয়ে স্বীয় মুখমণ্ডলে ও বক্ষদেশে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “হে জিবরাইল! তারা কারা?” জিবরাইল (আ.) বললেন, “এরা দুনিয়াতে মানুষের গোশত ভক্ষণ করত এবং তাদের মানসম্মান নষ্ট করত। অর্থাৎ তারা মানুষের গিবত ও চোগলখোরি করত।”’
ড. শরণপাল রচিত “আলোকিত জীবনের অভিমুখে” প্রকাশনা উৎসবে বক্তারা-
মানব সমাজের মানসিক ও দৈহিক সুখ-শান্তির
আকর গ্রন্থ হিসেবে পাঠক সমাদৃত হবে
মানবতাবাদী বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব Globbal teacher of mindfulness meditation, Founder of “canada: A mindful and kind nation” মিশনারীজ বৌদ্ধ ভিক্ষু ড. ভান্তে শরণাপাল রচিত ও লেখক ঝর্না বড়ুয়া কর্তৃক সংকলিত “আলোকিত জীবনের অভিমুখে” প্রকাশনা উৎসবে বক্তরা বলেছেন- সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মানসিক ও দৈহিক সুখ-শান্তির আকর গ্রন্থ হিসেবে পাঠক সমাদৃত হবে। বক্তারা বলেন- ড. শরণপাল বাস্তবতার নিরিখে এবং মানব সমাজের বৃহত্তর উপকার সাধনের জন্য, কোভিডের দাপটে সারা বিশ^ময় মানুষ যখন হতাশা-নিরাশা-দূরাশা এবং ভয়ভীতিতে মুহ্যমান, তখন করুণাময় বুদ্ধের মহামূল্যবান ধর্মদান দিয়ে আশা-ভরসার মাধ্যমে মানুষের মনে স্বস্তি আনয়নে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি’-০২৩, শনিবার, বিকেল ৩ টায়, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবস্থ বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত, বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ত্রয়োদশ সংঘরাজ ভদন্ত ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির। উপসংঘরাজ ধর্মপ্রিয় মহাস্থবিরের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে মুখ্য আলোচক ছিলেন অধ্যাপক ড. জিনবোধি মহাস্থবির। অনুভূতি প্রকাশ করেন- গ্রন্থের লেখক ড. ভান্তে শরণপাল। প্রকাশনা উৎসবে বিশেষ আলোচক ছিলেন- মধ্যম পোমরা জ্ঞানাঙ্কুর বিহারের অধ্যক্ষ শাসনপ্রিয় মহাস্থবির, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের আবাসিক প্রধান প্রিয়রত্ন মহাস্থবির, ঢাকা বুদ্ধিষ্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার মহাসচিব ড. সংঘপ্রিয় মহাস্থবির, বিসিসিইউএল এর চেয়ারম্যান শাসনরক্ষিত স্থবির, মুদিতারত্ন ভিক্ষু যুক্তরাষ্ট্র, আনন্দপ্রিয় ভিক্ষু কানাডা। সম্মানিত আলোচক ছিলেন- একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের মহাসচিব প্রফেসর ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, ইউএসটিসির উপাচার্য লেখক-গবেষক প্রফেসর ডা: প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মডেল সরকারি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. অর্থদর্শী বড়ুয়া, সীতাকুন্ড লতিফা সিদ্দীকি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লেখক-গবেষক প্রফেসর শিমুল বড়ুয়া।
উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন প্রকাশনা উৎসব পরিষদের আহ্বায়ক স্বধর্মকোবিদ এস লোকজিৎ মহাস্থবির, স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী অমল কান্তি বড়ুয়া। সঞ্চালনায় ছিলেন লেখক-সাংবাদিক বিপ্লব বড়ুয়া ও সংগঠক সৈকত বড়ুয়া। শুরুতে মঙ্গলবাণী পাঠ করেন- ভদন্ত শাসনজ্যোতি ভিক্ষু। প্রকাশনা উৎসবে গ্রন্থের লেখক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী লেখক ঝর্না বড়ুয়াকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাঁর পক্ষে সম্মাননা স্মারকটি গ্রহণ করেন- তাঁর মা জুনি রাণী বড়ুয়া। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন- প্রকাশনা উৎসব পরিষদের সদস্য সচিব যীশু বড়ুয়া। উৎসবে গ্রন্থের লেখককে বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়।
হযরত অছিউল্লাহ শাহ’র (রহ.) ৫১তম বার্ষিক ওরশ শরীফ উপলক্ষে আজিমুশশান নূরানী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৯ নভেম্বর শনিবার দেওয়ানহাট ওভারব্রীজের নীচে মাজার বাড়ী ময়দানে
উক্ত বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিন ব্যাপি কর্মসূচিতে ছিল আজ সকাল ১০ টা হতে ভক্তদের মাঝে তবারুক বিতরণ, দুপুর ২টা হতে এলাকাবাসীর মাঝে তবারুক বিতরণ, বিকাল ৪ টায় এলাকার দু:স্থদের মাঝে তবারুক বিতরণ।
আগামী কাল ২য় দিন রবিবার সকাল ৭ টা হতে খতমে কোরআন শরীফ, সকাল ৮ টা হতে দরুদে নারীয়া শরীফ, সকাল ৯ টা হতে খতমে তাহলিল শরীফ, সকাল ১১ টায় মাজরে মাল্যদান, বাদে জোহর মাজার শরীফে খতমে কোরান শরীফ, বাদে আছর হতে খতমে গাউছিয়া শরীফ, বাদে এশা তে মিলাদমাহফিল ও রাত ১২ টা ১৫ মিনিটে আখেরী মুনাজাত এবং মাহফিলে তবারুক বিতরণ।
হযরত অছিউল্লাহ শাহ’র (রহ.) এর উত্তরসূরী ও নাতি অছি উল্লাহ শাহ (রহ:) দু:স্থ আর্তমানবতা কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বার্ষিক ওরশ শরীফ পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ মোহাম্মদ পীর আলী প্রকাশ পোয়া ফকির সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
নারী শালীনতা সংরক্ষণকল্পে দৃষ্টি সংযম, গুপ্তাঙ্গের হিফাযত এবং নারী সৌন্দর্য প্রদর্শনে বিরত থাকার নির্দেশ দান করে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মু’মিনগণ! নিজেদের ঘর ব্যতীত অন্য বাড়ীতে বা অন্য কারো গৃহে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রবেশ করবে না যতক্ষণে বাড়ীর মালিক পরিচয় পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করবে ও তার সাথে কুশল বিনিময় করবে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়। আশা করা যায় তোমরা এটা স্মরণ রাখবে।
আর যদি সেখানে কাউকে না পাও তাহলে সেখানে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রবেশ করবে না যে পর্যন্ত না সেখানে প্রবেশ করতে তোমাদের অনুমতি দেয়া হয়। আর যদি তোমাদেরকে ফিরে যেতে বলা হয় তবে ফিরে যাবে। এটা তোমাদের জন্য পবিত্রতম কর্মনীতি। আর (মনে রেখ) তোমরা যা কিছু কর তা আল্লাহ ভালভাবেই জ্ঞাত যা তোমরা প্রকাশ কর আর যা তোমরা গোপন কর।
‘(হে নবী) মু’মিন পুরুষদের বলুন! তারা যেন তাদের দৃষ্টি নিচু রাখে এবং যৌনাঙ্গের হিফাযত করে। এটিই তাদের জন্য উত্তম পন্থা। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে মহান আল্লাহ সে সম্পর্কে জ্ঞাত।
আর মু’মিন নারীদেরকে বলুন! তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের যৌনাঙ্গের রক্ষা করে, তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশ থাকে, তা ব্যতীত তাদের আবরণ প্রকাশ না করে, তাদের বক্ষদেশ এবং গ্রীবা মাথার কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখে।
তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, পুত্র, স্বামীর পুত্র, আপন ভাই, ভাইয়ের পুত্র, ভগ্নীপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাস, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনারহিত পুরুষ এবং নারীর গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে এখনও বুঝে উঠেনি এমন বালক ছাড়া কারো নিকট তাদের আবরণ প্রকাশ না করে।
তারা যেন তাদের গোপন আবরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে ঈমানদারগণ, তোমরা সকলে মহান আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরাহ আন্ নূর : ২৭-৩১)
আলোচ্য আয়াতেপাকে নারী পুরুষ উভয়কেই তাদের দৃষ্টি নীচু করে রাখতে ও তাদের গুপ্ত অঙ্গের রক্ষা করতে আদেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু নারীদের জন্য এটাই যথেষ্ট নয় বলে তাদেরকে আরো অতিরিক্ত নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তা হল-তারা যেন নিজেদের যীনাত (সৌন্দর্য) প্রদর্শন না করে, তবে যা এমনিতেই প্রকাশ হয়ে পরে, সেটা ভিন্ন কথা।
তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন চাদর দ্বারা আবৃত রাখে এবং পথ চলার সময় তারা যেন অতি সাবধানতা অবলম্বন করে। পদধ্বনিতে তাদের অপ্রকাশিত সৌন্দয্য যেন প্রকাশ না হয়ে পরে। তবে পরিবার পরিচালনা ও পারিবারিক কার্য সমাধানের জন্য কতিপয় পুরুষের সাথে দেখা এবং সাহায্য গ্রহণ নারীদের পক্ষে নিতান্ত জরুরী হয়ে পরে।
তদুপরি স্ত্রী-পুরুষের যৌথ উদ্যোগ ছাড়া পারিবারিক জীবন সার্থক ও সফল হতে পারে না। এ জন্যই কতিপয় নারী-পুরুষের দেখা সাক্ষাত ইসলাম নিষিদ্ধ করেনি। তারা হল: স্বামী,পিতা, স্বামীর পিতা, নিজের সন্তান-সন্ততি, সহোদর ভাই, সহোদর ভাইয়ের সন্তান-সন্ততি ও সহোদর বোনের সন্তান-সন্ততি। তাদেরকে ইসলামী শরীআতের ভাষায় ‘মুহাররাম’ বলা হয়।-চলমান।
-এম এ আক্কাছ নুরী
মা-বাবা, ভাই,বোন, অাত্বীয়-স্বজন সহ সকলে মিলে পরিবার। পারিবারিক ঐতিহ্য, বংশীয় মর্যাদা ও পরস্পর মুল্যবোধের মাধ্যমে পারিবারিক সম্মান বৃদ্বি পায়।
একটা পরিবারে মা,বাবা বৃদ্ব হলে, ছেলে বিয়ে করলে, মেয়েকে বিয়ে দিলে বুঝা যায় পারিবারিক ভারসাম্য বা ভারসাম্যহীনতা।
এক্বেত্রে মুল বিষয়টা হল সন্তান কর্তৃক বাবা, মায়ের অবাধ্যতা। যার কারণে পারিবারিক ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়।
কথার অমিল, চাওয়া-পাওয়ার গরমিল, অন্যকারো প্ররোচনা, বড়-ছোট অাদবের অভাব, গোড়ামি, উগ্রতা, পরস্পর দোষারোপ প্রভৃতি কারণে সংসারে প্যাচঁ লেগে যায়। অনেক পরিবারে দেখা যায় তিন চার ভাই এর মধ্যে যদি সবাই বিয়ে করে মা,বাবা, ভাই,বোন এর সাথে নানা কারণে, বউ এর কারণে, সংসারের খরচের হিসাব, পরিস্হিতির কারণে ভুল বুঝাবুঝি, রাগ-অভিমান, খারাপ ব্যবহার প্রভৃতি কারণে অমিল ও বিচ্ছেদ সৃস্টি হয়।
যদি এই বিরোধ মা -বাবা এর সাথে বউের হয় তাহলে অধিকাংশ ছেলে নিজের জন্মদাতা বাবা-মাকে বাদ দিয়ে শুধু বউয়ের পক্ষ নিয়ে সময় সুযোগে তাদের কাছ থেকো অালাদা হয়ে নিজেরা অালাদাভাবে সংসার করে। এমনকি কি এই অবাধ্য সন্তানটি বউ এর মন রক্ষা করতে গিয়ে ঘর ছেড়ে অালাদা ঘর নিয়ে শহরে চলে যায়,অন্য কোথাও চলে যায়।
বর্তমান সরকার মা- বাবার ভরণ পোষণ এর দায়িত্ব না নিলে মামলার বিধান করছে যার কারণে জেল জরিমানার বিধান রয়েছে। কিন্তু হাজার হাজার অবহেলিত মা আছে যারা শত সমস্যায় নিজের ছেলেকে বিপদে ফেলতে চায় না তারা নিজের সন্তানকে সঠিক পথে অানতে চায়। কিন্তুু বউ এর কেত্রে গিয়ে অনেক মানুষ একটু বা বেশী বিরোধ, বিচ্ছেদ হলে অনেক সময় মামলার শিকার হয় যার অধিকাংশ বুয়া এবং তা তালাকের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়ে যায়।
বউকে একতরফা ভালবেসে নিজের মা- বাবাকে হেয় করে, বেযাদবি করে অনেকে জীবনে অনেক অভিশাপ, লানত এ পতিত হয়েছে। যার কোটি কোটি উদাহরণ ও ইতিহাস আছে।
মা-বাবার সাথে এ ধরণের খারাপ ব্যবহার, দুরত্ব, বিচ্ছেদ কোরঅান,হাদিস,পৃথিবীর কোন বইপত্র, কোর্ট,কাসারি, কোন ধর্ম, কোন নীতি-অাদর্শবান ভাল মানুষ এটা সমর্থন করে না,করবে না।
মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত- এই কথার তাৎপর্য খুবই ব্যাপক যার সহজ অর্থ হল সন্তান যত বড় হউক সে সব দিক দিয়ে মায়ের কাছে ছোট।
সংসার ও পারিবারিক শান্তির জন্য তাই সকলকে বাবা- মাকে ভালবাসতে হবে এবং তাদের কথামত সঠিকভাবে জীবন পরিচালনা করতে হবে।
★ লেখক : নুর মোহাম্মদ,
রাউজান, চট্টগ্রাম।
মোঃ ছিদ্দিক ভোলা প্রতিনিধি “আল্লাহ যদি একটা ঘর দিতো” এমনই আত্ননাদ অসহায়ত্বের সাথে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে প্রকাশ করলেন মোঃ আকবর। আকবরের ঘরটি কিছুদিন আগে জোয়ারের পানিতে ডুবে লন্ডবন্ড হয়ে যায়।পড়ে থাকা ঘরটি তোলার সামর্থ্য নেই তার। তবে এখনো ঘরটি তোলার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আকবর। কিন্তু অভাবের কারনে বারবারই ব্যর্থ হচ্ছেন -এমনটাই কান্নাঝরা কন্ঠে জানিয়েছেন আকবর। আকবরের ঘর অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় যে, ভাঙ্গা ঘরের চালগুলো কোনরকম দাড় করিয়ে সেই ঘরের নিচে আদিম যুগের মানুষের মত বসবাস করছেন তারা। তিনি ভোলা দৌলতখান উপজেলার পৌরসভা ০৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। দিন আনতে যার পানতা ফুরায় তার কি ঘর নির্মিত হয়?প্রবল শীতের মধ্যে স্বামী -সন্তান নিয়ে খুব কষ্টের সাথে দূর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন তারা। তাই ভোলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসকের কাছে আকবরের আকুল আবেদন তিনি যেন দয়াকরে একটি ঘরের সুব্যবস্থা করে দেন।