প্রতিবছর সাধারণত বড়দিনের ‘ম্যাসে’ দশ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন। যাদের মধ্যে প্রায় দুইশ’ দেশের কূটনীতিকরা থাকেন। কিন্তু এবারের অনুষ্ঠানে একশ’ জনের কম মানুষ অংশ নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানটি সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার প্রধান অংশ নয় বরং এ বছর ‘ক্রিসমাস ইভের ম্যাস’ অনুষ্ঠিত হয়েছে পেছন দিকের একটি অংশে। এবার নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা আগে ‘ম্যাস’ শুরু হয়। যাতে ‘ম্যাসে’ যারা অংশ নিচ্ছেন তারা স্থানীয় সময় রাত ১০টায় কারফিউ শুরুর আগেই বাড়িতে ফিরতে পারেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বড়দিনের বার্তায় পোপ বলেন, ‘‘ঈশ্বরের পুত্র নিজেও দরিদ্র এবং সমাজচ্যুত মানুষদের মধ্যে জন্ম নিয়েছেন। তারমধ্য দিয়ে তিনি বলতে চেয়েছেন, সমাজচ্যুতরাও ঈশ্বরেরই সন্তান। ‘দারিদ্র এবং প্রয়োজনের মধ্য দিয়েই ঈশ্বর আমাদের মাঝে আসেন তিনি বলেন, গরীবদের সেবা করার মাধ্যমেই আমরা ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাতে পারবো।”
ইতালিতে বড়দিন এবং নববর্ষের ছুটির পুরো সময়েই দেশজুড়ে লকডাউন জারি করা হয়েছে। জরুরি নয় এমন সব দোকান ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর, ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি এবং ৫ ও ৬ জানুয়ারি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লোকজন শুধুমাত্র কর্মক্ষেত্রে যেতে এবং স্বাস্থ্য ও জরুরি প্রয়োজনে ওই সময় বাড়ির বাইরে যেতে পারবে। যার অর্থ, সাধারণ মানুষ সেন্ট পিটার্স স্কয়ার বা ব্যাসিলিকায় যেতে পারবেন না।
আর ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের অনুষ্ঠান বাড়ির ভেতরে আয়োজন করতে হবে। অতিথি সংখ্যাও অত্যন্ত সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। সব অনুষ্ঠান টেলিভিশনে বা ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
প্রফেসর সেলিম উদ্দীন-
মানুষ সামাজিক জীব। সঙ্গতকারণে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ পৃথিবীতে পরিবার, সমাজ আর রাষ্ট্র নিয়ে বসবাস করে আসছে। সৃষ্টির সেরাজীব আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে মর্যাদা দেয়ার পর মানুষের জীবন বিধান কিরূপ হবে তা আল্লাহ তায়ালা কুরআন এবং রাসূল সাঃ এর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে অধিকাংশ মানুষ তা জেনেও গাফেল থাকে আর বাকী অংশ কখনো জানার চেষ্টা করে না। ফলে অজ্ঞতা আর নাফরমানী গোটা মানব জাতিকে গ্রাস করে নিচ্ছে।
আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি দয়া এবং অনুগ্রহ করেন। কিন্তু মানুষ যখন আল্লাহকে ভুলে নিজেদের ইচ্ছেমত জীবনযাপন করতে শুরু করে তখন মানুষ আল্লাহর অসন্তুষ্টিকে নিজেদের জন্য ডেকে নিয়ে আসে।আমাদের জীবনে বিপদ আপদ আসার অন্যতম কারণ আল্লাহর অবাধ্যতা। তবে কিছু কিছু বিপদ আপদ আসে মুমিন বান্দাকে পরীক্ষা করার জন্য।
এ সম্পর্কে আল্লারাব্বুল আলামিন সুরা বাকারার ১৫৫ ও ১৫৬ আয়াতে ঘোষণা করেছেন-‘এবং অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয় ক্ষুধা সম্পদ জীবনের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। হে নবি! ধৈর্যধারণকারীদের আপনি সুসংবাদ দিন যখন তারা বিপদ পড়ে তখন বলে নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং তার কাছেই ফিরে যাবো।’
বিপদ-আপদের মাধ্যমেই মানুষ তার গোনাহ থেকে মুক্তি পায়। আর যদি বিপদে আক্রান্ত মানুষের গোনাহ না থাকে তবে ওই ব্যক্তির সম্মান ও মর্যাদা আরো বেড়ে যায়। তাই মুমিনদের হতাশ হয়ে মন খারাপ করার কোনো কারণ নেই। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সে আল্লাহর রহমত পেতে থাকে। হাদিসের এক বর্ণনায় এসেছে-হজরত আবু সাঈদ খুদরি ও হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির ওপর যেসব যাতনা রোগ ব্যধি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দুঃশ্চিন্তা কষ্ট ও পেরেশানি আপতিত হয়। এমন কি যে কাটা তার দেবে বিদ্ধ হয় এ সবের দ্বারা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (বুখারি)
যুগে যুগে নবি-রাসুল, অলি-আউলিয়া ও আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের ওপর বিপদ-আপদ এসেছে। তারা নানান বিপদের সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ধৈর্যশীল বান্দা ও পয়গাম্বর হলেন হজরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম।
হজরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর সব সম্পদ সন্তান-সন্তুতি ও স্ত্রীদের হারিয়েছিলেন। রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় এলাকার লোকজন তাঁকে নিজ এলাকা থেকে বিতাড়িত করেছিল। তাঁর সাথে তার এক স্ত্রী ছাড়া আর কেউ ছিল না।
রোগাক্রান্ত হজরত আইয়ুব আলাইহিস সালামের সারা শরীরের পচন ধরে পোকার সৃষ্টি হয়। তবুও তিনি এক মুহূর্তের জন্যও আল্লাহকে ভুলে যাননি। ধৈর্যহারা হননি এবং আল্লাহর কাছে তাওবা ইসতেগফার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করেছেন। আল্লাহর দয়ায় তিনি রোগ মুক্ত হয়ে পুনরায় আবার তার সব সম্পদ সব কিছু তিনি ফিরে পেয়েছিলেন।
আল্লাহ পাকের আরেক পয়গাম্বর হজরত ইউনুছ আলাইহিস সালাম। যিনি নিজ অঞ্চল ত্যাগ করার সময় নৌকায় পথ পাড়ি দিতে গিয়ে নদীতে নিক্ষিপ্ত হন। নদীতে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর বড় একটা মাছ তাকে গিলে ফেলে। এহেন বিপদের মুহূর্তে হজরত ইউনুছ আলাইহিস সালাম এক মুহূর্তের জন্যও আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত ছিলেন না। সে কথা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুরা আম্বিয়ায় তুলে ধরেন-
“এবং মাছওয়ালার কথা স্মরণ কর। যখন সে আল্লাহর অবাধ্যতার কারণে লোকদের ওপর রাগ করে চলে গিয়েছিল এবং বিশ্বাসী ছিল যে, আমি তাঁর ওপরে কোনোরূপ কষ্টদানের সিদ্ধান্ত নেব না। অতপর সে মাছের পেটে ঘন অন্ধকারের মধ্যে আহ্বান করল।(হজরত ইউনুছ আলাইহিস সালাম বললেন)-لا إِلَهَ إِلا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَউচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জ্বালিমিন।অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র। আমি সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভূক্ত। অতপর আমি তার আহ্বানে সাড়া দিলাম। এবং তাকে দুঃশ্চিন্তামুক্ত করলাম। আর এভাবেই আমি বিশ্বাসীদের মুক্তি দিয়ে থাকি।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ৮৭-৮৮)
এ দোয়াটি হজরত ইউনুছ আলাইহিস সালামের দোয়া বা দোয়া-ই ইউনুছ নামে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-‘বিপদগ্রস্ত কোনো মুসলমান যদি নেক মাকসুদ হাসিলের জন্য এ দোয়ায়ে ইউনুছ পড়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সে দোয়া কবুল করেন।’
জাগতিক যেসব কারণে মানুষের উপর বিপদ নেমে আসে তা মানুষের কামাই।বিভিন্নভাবে এই বিপদ আসতে পারে। নিম্নে আমরা তার কয়েকটি কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো,ইনশাআল্লাহ।
১.ব্যক্তিগত জীবনে বিপদ আপদঃ
পাঁচ ওয়াক্ত নামায আল্লাহ তায়ালা ফরয করেছেন। যখন কেউ নিয়মিত ভাবে ফরয নামায আদায় করে তখন সে আল্লাহ তায়ালার জিম্মায় চলে যায়। অপরদিকে বান্দা যখন ইচ্ছাকৃত ও জেনে বুঝে ফরয নামায ছেড়ে দেয় তখন সে আল্লাহর জিম্মা তথা দায়িত্ব থেকে বেরিয়ে যায় এবং তখন সে নিজের ও সৃষ্টির দায়িত্বে থেকে যায়। ফলে এই অবস্থায় তার যেকোন দুরবস্থা ঘটতে পারে। হাদিসে এসেছে,
“কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে ফরয নামায ছেড়ে দিলে তার উপর থেকে আল্লাহ তায়ালার দায়িত্ব উঠে যায়।” – ইবনে মাজাহ
সুতরাং বিপদ আপদ থেকে মুক্তি পেতে সবার আগে পাঁচ ওয়াক্ত নামায সময় মত আদায় করতে হবে। এই নামাযের ব্যাপারে কোরান হাদিসে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।আখিরাতে সর্বপ্রথম হিসেব নেয়া হবে নামাযের। এখানে যে কৃতার্থ হবে জান্নাতের পথ তারজন্য সুগম হবে।
২. ব্যবসায় বাণিজ্যে বরকত হীনতাঃ
অনেকে ব্যবসা বাণিজ্য করেন কিন্তু দেখা যায় নানাপ্রকার বালামুসিবত তার পিছু ছাড়ে না। ব্যবসা বাণিজ্যে উন্নতি হচ্ছে না বলে হতাশা ব্যক্ত করতে দেখা যায় অনেককে। আসলে এটাও এক ধরণের বিপদ। কিন্তু বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি বুঝতে পারে না নিজের কৃতকর্মের কারণে ব্যবসায়িকভাবে তার সফলতা আসছে না।
রাসূল সাঃ বলেছেন,
“ব্যবসায় অধিক পরিমাণে কসম খাওয়া থেকে বাঁচো। কারণ কসম পণ্য বিক্রি করিয়ে দেয় কিন্তু পরে বরকত খতম করে দেয়।”– সহীহ মুসলিম
এছাড়া আরও কয়েকটি কারণে ব্যবসায় বরকত কমে যায় যথা: সুদের পণ্য, ওজনে কম দেয়া, হারাম পণ্যের মিশ্রণ,খাবার অবৈধ ভাবে এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য মজুদ করে রাখা ইত্যাদি।
এসব কারণে ব্যবসায় বরকত চলে যায়। এখন আমাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে অনেকে তো হারাম পথে ব্যবসায় করে কোটিপতি হচ্ছে। কোটিপতি হওয়া আর আল্লাহর বরকত দুটি ভিন্ন বিষয়। প্রথমত তার পরকালের স্থান জাহান্নামে করে নেয় এবং তার এই হারাম উপার্জন করে সে তার অন্তরে এবং পারিবারিক ভাবে প্রশান্তি পায় না। সবচেয়ে বড় কথা হল পরকালের স্থান যদি জাহান্নামে হয় তবে দুনিয়ার জীবনে বিলিয়ন বিলিয়ন টাকার মালিক হয়ে কি লাভ?
৩. অত্যাচারী শাসকঃ
বান্দা যখন আল্লাহর অবাধ্য হয় আল্লাহ তায়ালা তখন বান্দার উপর অত্যাচারী শাসক চাপিয়ে দেন। শান্তির আশায় বিপ্লব ঘটিয়ে কোন নতুন দল বা লোক ক্ষমতায় আনা হলেও কার্যত তা ব্যর্থ চেষ্টা হবে। ধনী-গরিব, ইতর-ভদ্র সবাই আল্লাহর অবাধ্যতায় থাকবে আর শাসক পাল্টাতে থাকবে, এভাবে কখনও অবস্থা উন্নত হবে না। জগদ্দল পাথরের মতো স্বৈরাচারী শাসক অবাধ্য জাতির ঘাড়ে চেপে বসবে এবং আল্লাহর শাস্তি ভোগ করতে তাহকবে। তবে একমাত্র আল্লাহ তায়লার উপর তাওয়াককুল, আল্লাহর সকল হুকুম সঠিক ভাবে পালন, আল্লার নিকট সসর্বোতভাবে নিজেকে সোপর্দ করা এবং তাঁর নিকট দোয়া কান্নাকাটির মাধ্যমেই কেবল ভাল শাসক জুটতে পারে।
হাদিসে এসেছে,
“তোমরা যেমন হবে, তোমাদের উপর বাদশাহ তথা শাসনকর্তাও তেমনি চাপিয়ে দেয়া হবে।”-মেশকাত।
পক্ষান্তরে, আমরা যদি সৎ ও সৎকর্মী হই, তাহলে আল্লাহ তায়লা আমাদের জন্য সৎ ও দয়ালু শাসক নিয়োগ করবেন।সৎ ও যোগ্য শাসক আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য নেয়ামতস্বরূপ।
৪.নতুন নতুন রোগ-ব্যাধিঃ
নতুন নতুন রোগ ব্যাধির জন্ম নেয়া এবং তাতে ব্যাপকহারে মানুষের প্রাণ হারানো এটাই মানুষের কৃতকর্মের ফল।
হাদিসে এসেছে,
“রাসূল সাঃ এরশাদ করেছেন, যে জাতি-সম্প্রদায়ে (তথা সমাজে) প্রকাশ্যে অশ্লীল কর্ম সম্পাদিত হতে থাকবে, তাদের মাঝে অবশ্যেই প্লেগ বিস্তার লাভ করবে এবং এমন ধরনের রোগ ব্যাধি ব্যাপকভাবে প্রকাশ পাবে, যা তাদের বাপ দাদাদের মাঝেও কখনও হয়নি।”– ইবনে মাজাহ
বর্তমান পৃথিবী তার অন্যতম উদাহরণ। আমাদের সংস্কৃতি থেকে শুরু করে চাল-চলন, জীবন-যাপন সব কিছুতে অশ্লীলতা। অশ্লীলতা এখন আর গোপনে নয় বরং প্রকাশ্যে বিল-বোর্ডে, টেলিভিশনে, পার্টিতে সব জায়গায়। নগ্ন হওয়াকে বলা হয় সাহসিকতা, যিনাকে বলা হয় স্বাধীনতা আর নিজেকে অন্যের কাছে বিলিয়ে দেওয়াকে বলা হয় সৌন্দর্য চর্চা। আর এত কিছুর ফলাফল কি হচ্ছে তা আমাদের চোখের সামনেই দৃশ্যমান।
সুতরাং কঠিন এবং মহামারী রোগ-ব্যাধি থেকে বাঁচতে হলে প্রথমে অশ্লীলতা আর বেহায়াপনাকে দূর করতে হবে।
৫.দুর্ভিক্ষ এবং আতংকঃ
হযরত আমর ইবনুল আস রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি, “যে জাতির মাঝে ব্যভিচার বিস্তার লাভ করে, তাদেরকে দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে পাকড়াও করা হয়, আর যাদের মাঝে উৎকোচ (ঘুষ) বিস্তার লাভ করে, তাদেরকে পাকড়াও করা হয় ভীতি ও আতঙ্কের মাধ্যমে।” (মুসনাদে আহমদ)
এই হাদিসটি দ্বারা একসাথে দুটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেল। অর্থ্যৎ দুর্ভিক্ষের কারণ ব্যভিচার আর আতঙ্কের কারণ ঘুষ। সুতরাং এসব বিপদ থেকে মুক্তি পেতে হলে এসব খারাপ কাজ পরিহার করতে হবে।
আমাদের ইবাদত কিংবা আমল যা-কিছু করি না কেন তাতে ইখলাস থাকলে সে ইখলাস যেমন পরকালে আমাদের মুক্তিকে সহজ করবে, আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করবে তেমনি আমাদের ইবাদত,আমল,নিয়ত ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইখলাস না থাকলে আমরা অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়ে যাব। ইখলাসের অভাবে আমরা যা হারাতে পারি তা নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
জান্নাতে প্রবেশ না করা: আবু হুরাইরা (রাঃ)হতে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ)বলেন,
« مَن تَعلَّمَ عِلْمًا مِمَّا يُبْتَغَى بهِِ وَجْهُ الله لا يَتَعلَّمُه إلِا ليُصيبَ بِه عرضاً مِنْ الدُّنْيَا لَم يَجدْ عَرف الجَنةَِّ يْوَم القياَمةِ يعْنِي رِيحَهَا »
“যে ইলম দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়ে থাকে, সে ইলমকে যদি কোন ব্যক্তি দুনিয়াবি কোন উদ্দেশ্যে শেখে, কিয়ামতের দিন সে জান্নাত পাবে না, এমনকি সুঘ্রাণও পাবে না”।
কিয়ামতের দিন জাহান্নামে প্রবেশ করা: আবু হুরাইরা(রাঃ)হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,আমি রাসূল (সাঃ)কে বলতে শুনেছি-
“কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম যে ব্যক্তির বিচার করা হবে, তিনি হলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হন, তারপর তাকে ডাকা হবে এবং তার নিকট তার নিয়ামতসমূহ তুলে ধরা হলে সে তা চিনতে পারবে।তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তুমি এ সব নিয়ামতের মুকাবালায় কি আমল করছ? সে বলল, তোমার রাহে আমি যুদ্ধ করছি এবং শহীদ হয়েছি। সে বলল, তুমি মিথ্যা বলছ, তুমি যুদ্ধ করছ, যাতে মানুষ তোমাকে বাহাদুর বলে। তা তোমাকে বলা হয়েছে। তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের নির্দেশ দেয়া হলে, তাকে তার চেহারার উপর উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়। এক ব্যক্তি ইলম অর্জন করল, মানুষকে শেখাল এবং কুরআন পড়ল। তারপর তাকে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত করা হল এবং তার উপর আল্লাহর নিয়ামতসমূহ তুলে ধরা হলে, সে তা চিনতে পেল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, তুমি এ বিষয়ে কি আমল করছ? বলল, আমি ইলম শিখেছি এবং শিখিয়েছি।তোমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরআন পড়েছি।সে বলল, তুমি মিথ্যা বলছ, তুমি ইলম শিখেছ, যাতে তোমাকে আলেম বলা হয়। আর কুরআন তিলাওয়াত করেছ, যাতে তোমাকে এ কথা বলা হয়, লোকটি ক্বারি। আর দুনিয়াতে তোমাকে তা বলা হয়েছে। তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের নির্দেশ দেয়া হলে, তাকে তার চেহারার উপর উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়।(মুসলিম: ১৯০৫)
এক ব্যক্তি তাকে আল্লাহ তা‘আলা সামর্থবান করেছেন এবং তাকে বিভিন্ন ধরনের ধন-সম্পদ দিয়েছেন।তারপর তাকে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত করা হল এবং তার উপর আল্লাহর নিয়ামতসমূহ তুলে ধরা হলে, সে তা চিনতেপেল।তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, তুমি এ বিষয়ে কি আমল করছ? বলল, তোমার জন্য তুমি যে পথে ব্যয় করাকে পছন্দ কর, সে ধরনের কোন পথ আমি ছাড়িনি যেখানে আমি তোমার জন্য ব্যয় করিনি। বলল, তুমি মিথ্যা বলছ, তবে তা করছ, যাতে লোকেরা তোমাকে এ কথা বলা হয়, লোকটি দানবীর। আর দুনিয়াতে তোমাকে তা বলা হয়েছে। তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের নির্দেশ দেয়া হলে, তাকে তার চেহারার উপর উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনুহু যখনই এ হাদিসটি বর্ণনা করার ইচ্ছা করতেন, হাদিসের ভয়াবহতার কারণে তিনি বেহুশ হয়ে পড়তেন।সুফাই আল আসবাহী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি একবার মদিনায় প্রবেশ করে, দেখতে পান যে, একজন লোককে কেন্দ্র করে অনেক মানুষ একত্র হয়। তখন সে বলল, লোকটি কে? লোকেরা বললেন, লোকটি আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনুহু।আমি তার নিকটে গিয়ে তার সামনে বসলাম। তিনি মানুষকে হাদিস শোনাচ্ছেন। যখন তিনি চুপ করলেন এবং একা হলেন, আমি তাকে বললাম, আমি তোমাকে সত্যের শপথ দিয়ে বলছি। তুমি আমাকে এমন একটি হাদিস বলবে, যা তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জবান থেকে শুনেছ,বুঝেছ এবং জেনেছ। তখন আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনুহু বলল, আমি তাই করব, আমি তোমাকে একটি হাদিস শোনাবো যে হাদিসটি আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন এবং আমি হাদিসটি তাঁর থেকে বুঝেছি এবং শিখেছি। এ কথা বলে কিছু সময় আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনুহু বেহুশ হয়ে পড়লেন এবং কিছুক্ষণ পর হুশ ফিরে আসলে তিনি বলেন, আমি তোমাকে একটি হাদিস শোনাবো যে হাদিসটি আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এ ঘরের মধ্যে বর্ণনা করেছেন, যেখানে আমি ও তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।তারপর আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনুহু আবারও বেহুশ হয়ে পড়লেন এবং কিছুক্ষণ পর হুশ ফিরে পেলেন। তিনি তার চেহারা মুছলেন এবং বললেন, আমি তোমাকে একটি হাদিস শোনাবো যে হাদিসটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বর্ণনা করেছেন, যখনআমি ও তিনি এ ঘরের মধ্যে ছিলাম। আমাদের সাথে আমি ও তিনি ছাড়া আর কেউ ছিল না। তারপর আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনুহু আবারও বেহুশ হয়ে পড়লেন এবং কিছুক্ষণ পর হুশ ফিরে পেলেন। তিনি তাঁর চেহারা মুছলেন এবং বললেন, আমি তোমাকে একটি হাদিস শোনাবো যে হাদিসটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বর্ণনা করেছেন, যখন আমি ও তিনি এ ঘরের মধ্যে। আমাদের সাথে আমি ও তিনি ছাড়া আর কেউ ছিল না। না। তারপর আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনুহু আবারও কঠিন ভাবে বেহুশ হয়ে পড়লেন এবং তিনি তাঁর চেহারার উপর ঢলে পড়লেন, আমি তাকে লম্বা করে আমার আমার উপর হেলান দেওয়ালাম, কিছুক্ষণ পর সে হুশ ফিরে পেল এবং বলল, আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস বর্ণনা করেন…তিনি উল্লেখিত হাদিসটি বর্ণনা করেন। হাদিসের শেষ অংশে বর্ণিত, “অত:পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার উভয় হাঁটুর উপর আঘাত করে বলেন, হে আবু হুরাইরা! এরা তিনজনই আল্লাহ তা‘আলার প্রথম মাখলুক যাদের দ্বারা কিয়ামতের দিন জাহান্নামকে প্রজ্বলিত করা হবে।মনে রাখবে, আগুনকে যেদিন প্রথম প্রজ্বলিত করা হবে, সেদিন হত্যাকারী, ব্যভিচারী, চোর ও মদ্যপানকারী দ্বারা প্রজ্বলিত করা হবে না, বরং কুরআন তিলাওয়াতকারী, দানকারী, মুজাহিদ প্রমুখদের দ্বারা প্রজ্বলিত করা হবে আর এ গুলো সবই হবে রিয়ার কারণে।
(তিরমিযি: ২৩৮২,হাকেম রহ. হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।)
কায়াব বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনুহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ طَلَبَ العِلَم ليِجَاري بهِِ العُلَمَاءَ، أَوْ ليِمَارِيَ بهِِ السُّفَهَاءَ، أَوْيَصْرِفَ بِهِ وجُوَه الناَّسِ إِلَيْهِ؛ أَدْخَلَهُ الله النَّارَ »
“যে ব্যক্তি এলম তালাশ করে, যাতে ইলম দ্বারা আলেমদের মুকাবালা করে অথবা জাহেলদের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে অথবা মানুষের দৃষ্টি তার প্রতি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে আল্লাহ তা‘আলা তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে”।
(তিরমিযি: ২৬৫৪, আল্লামা আল-বানী রহ. হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন)
আমল কবুল না হওয়া:
«قَالَ الله تَبَارَكَ وَتَعالَى: أَنَا أَغْنىَ الشركَاءِ عَنْ الشِّركِ، مَنْ عِمَل عَمَلًا أَشرك فِيهِ مِعي غَيْري تَرَكْتُه وشَركهُ »
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা আমার সাথে যে সব শরীকদের শরীক সাব্যস্ত কর, আমি তা হতে পবিত্র। যে ব্যক্তি কোন আমল করে,তাতে আমার সাথে অন্য কাউকে শরিক করে, আমি তার আমল ও শিরক উভয়টিকে ছুড়ে ফেলে দেই।(মুসলিম: ২৯৮৫)
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনুহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,
أن رجلا قال: يا رسول الله، رجل يريد الجهاد في سبيل الله وهو يبتغي عرضا من عرض الدنيا، فقال النبي صلى الله عليه وسلم « لاَ أَجر لَهُ » فأعظمَ ذلك الناسُ، وقالوا للرجل: عد لرسول الله صلى الله عليه وسلم فلعلك لم تفهمه. فقال: يا رسول رجل يريد الجهاد في سبيل الله وهو يبتغي عرضا من عرض الدنيا. فقال: « لا أَجَر لَهُ » فقالوا للرجل: عد لرسول الله صلى الله عليه وسلم فقال له الثالثة، فقال له « لا أَجَر لَهُ »
“এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! একজন ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় পার্থিব বা দুনিয়ার কিছু সম্পদ লাভের উদ্দেশ্যে জিহাদ করতে চায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য কোন সাওয়াব মিলবে না।লোকেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথায় আশ্চর্য হলেন এবংলোকটিকে বললেন, তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আবার যাও এবং জিজ্ঞাসা কর, হতে পারে তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কথাটি বুঝিয়ে বলতে পারনি।তারপর লোকটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে গিয়ে আবারও বলল, হে আল্লাহর রাসূল! একজন ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় দুনিয়ার কিছু সম্পদ লাভের উদ্দেশ্যে জিহাদ করতে চায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য কোন সাওয়াব মিলবে না।লোকেরা বলল, তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আবার যাও, লোকটি আবার গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে, তৃতীয় বার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য সাওয়াব ও বিনিময় কিছুই নাই।(নাসায়ী: ৩১৪০, আল্লামা আল-বানী রহ. হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন)
আমলের সাওয়াব নষ্ট হওয়া:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَقَدِمۡنَآ إِلَىٰ مَا عَمِلُواْ مِنۡ عَمَلٖ فَجَعَلۡنَٰهُ هَبَآءٗ مَّنثُورًا ٢٣ ﴾ [الفرقان: ٢٣]
হাদিসে কুদসীতে বর্ণিত, আল্লাহ তা‘আলা রিয়াকারীদের বিষয়ে বলেন,
«اذْهَبُوا إِلَى الَّذِينَ كُنْتُم تُراءُونَ فِي الدُّنيَا، فَانْظُرُوا هَلْ تِجدُونَ عِنْدَهُمْ جَزَاءً »
“দুনিয়াতে তোমরা যাদের দেখানোর জন্য আমল করতে তাদের নিকট যাও, দেখ, তাদের নিকট কোন বিনিময় পাও কিনা”?
(আহমদ: ২৩৬৮১। আল্লামা আল-বানী রহ. হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।)
বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ থেকে দেশের মুসল্লিদের রক্ষায় ঈদের আগে সরকারি খরচে দেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদগুলোর প্রবেশমুখে সুরক্ষা গেট স্থাপন করতে সংশ্লিষ্টদের নাটিশ পাঠানো হয়েছে।নোটিশে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ইসলামি ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে (ডিজি) বিবাদী করা হয়েছে।মঙ্গলবার (১৯ মে) জনস্বার্থে ই-মেইলে নোটিশটি পাঠান ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের (এনএলসি) চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু।
নোটিশে বলা হয়, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের মুসলমানরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে যাযন। কিন্তু সরকারের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদে নামাজ আদায় করে যাচ্ছেন। তবে যেকোনো মুহূর্তে মসজিদে আগত মুসল্লিরা করোনার সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে জীবন হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই দেশের সব মসজিদের দরজায় সুরক্ষা গেট স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যাতে করে মসজিদে আগত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা জীবাণুমুক্ত হয়ে মসজিদে প্রবেশ করে নামাজ আদায় করতে পারেন।
প্রফেসর সেলিম উদ্দীন-
নেককার মুমিন বান্দার অন্তরে যখন ইখলাস পাওয়া যাবে, তখন সে ইখলাসের অনেকগুলো উপকারিতা ও গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল রয়েছে তা সে মুমিন বান্দা সহজেই লাভ করবে।এটা এমন এক পূণ্য যা মুমিন ব্যক্তির জীবনকে তাৎপর্যময় করে তুলবে।মুমিন বান্দা আল্লাহর আরো নিকট পৌঁছে যাবে,আল্লাহর প্রিয় বান্দায় পরিণত হবে।
আবু উমামা আল-বাহেলী (রাঃ)হতে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ)বলেন,
« إِنَّ الله لاَ يَقْبَلُ من العَمَلِ إِلاَّ مَا كَانَ لَهُ خَالِصاً، وَابتغي بهِ وَجْهُه »
“আল্লাহ তা‘আলা শুধু সে আমল কবুল করবেন, যে আমল কেবল আল্লাহর জন্য করা হবে এবং আমল দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা উদ্দেশ্য হবে”।
এতে করে বুঝা যায় এখলাসের কারণে আমল কবুল হয়। আবার অন্য এক হাদিস হতে জানা যায় এতে সাওয়াব লাভ হয়।
সা’আদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ)হতে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ)বলেন,
« إنكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبَتغِي بِها وَجْهَ الله إلِا أُجِرتَ عَلَيْهَا »
“যখনই তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোন খরচা করবে, তার উপর তোমাকে সাওয়াব দেয়া হবে”।
ইখলাস গুনাহ মাফের অনেক বড় কারণ। ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ. বলেন, এক প্রকার আমল এমন আছে, যখন কোন মানুষ আমলটি পরিপূর্ণ ইখলাস ও আল্লাহর আনুগত্যের সাথে করে থাকে, আল্লাহ তা‘আলা এ আমলের দ্বারা তার কবিরা গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন।যেমন- আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রা) হতে হাদিস বর্ণিত, রাসূল (সাঃ)এরশাদ করেন,
« يُصاُح برَجل مِنْ أُمَّتيِ يَوَْم القِيَامَة عَلَى رُُؤوسِ الَخلَائقِ، فَيُنشْر لَهُ تسْعةٌ وتسْعونَ سِجلا، كُلُّ سِجِل مَدّ الَبصَرِ، ثُمَّ يقُولُ الله هَلْ تُنْكِرُ منْ هذَا شَيْئاً؟ فَيَقُولُ: لاَ يَا ربِّ. فَيَقُولُ: لا ظُْلمَ عَلَيْكَ. فَتخْرج لُه بِطَاقَةٌ قدْرُ الكَفِّ فيِهَا شَهادَةُ أَن لا إلَهَ إلِاَّ الله. فَيَقُولُ: أَيْنَ تَقع هذِهِ البطَِاقَةُ مَع هَذِهِ السِّجِلاَّتِ؟! فتوضُع هذِهِ البطَِاقَةُ فِي كَفَّةٍ وَالسِّجِلَّاتُ فِي كَفَّةٍ، فَثَقُلَتِ البِطَاقَةُ، وَطَاشَتِ السِّجِلاَّتُ»
“কিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে সমগ্র মাখলুকের সামনে উপস্থিত করা হবে, তারপর তার জন্য নিরানব্বইটি দফতর খোলা হবে, প্রতিটি দফতর চোখের দৃষ্টির সমান দূরত্ব। তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি কি এর কোন কিছুকে অস্বীকার কর, তখন সে বলবে, না, হে আমার প্রভূ। তখন আল্লাহ বলবে, তোমার উপর কোন জুলুম করা হবে না।তারপর তার জন্য হাতের তালুর সমপরিমাণ একটি কাগজের টুকরা বের করা হবে, তাতে লিপিবদ্ধ থাকবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই।তখন সে বলবে, এত গুলো বড় বড় দফতরের মুকাবেলায় এ কাগজের টুকরাটি কোথায় পড়ে থাকবে? তারপর এ কাগজের টুকরাটি একটি পাল্লায় রাখা হবে এবং দফতরসমূহ অপর পাল্লায় রাখা হবে।তখন কাগজের টুকরার পাল্লাটি ভারি হয়ে যাবে এবং দফতরসমূহ হালকা হয়ে পড়বে।
এ হল ঐ ব্যক্তির অবস্থা যে এ কালিমা ইখলাস ও একীনের সাথে বলবে যেমনটি উল্লেখিত লোকটি বলেছিল।অন্যথায় যারা কবিরা গুনাহ করার কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তাদের সবাই এ কালিমা বলে থাকে। কিন্তু তাদের কথা তাদের গুনাহের উপর ভারী হয় নাই,যেমনটি ভারী হয়েছিল এ লোকটির কথা। অপর একটি হাদিসে বর্ণিত,
إنَّ امْرَأَةً بَغِيا رََأْت كَلباً فِي يَوٍْم حَارٍّ يطيِفُ ببِئر قَدْ أَْدلَعَ لسَِانَهُ مِن العَطَشِ، فنَزَعْت لَه بمُوقِهَا – أي: سقته بخفها- فَغُفِرَ لهَا
“একজন ব্যভিচারী মহিলা একটি কুকুরকেএকটি কুপের নিকট দেখতে পেল সে পানির পিপাসায় কাঁতরাচ্ছে। মহিলাটি তার পায়ের মোজা খুলে তাকে পানি পান করালে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন”।যেহেতু মহিলাটি তার অন্তরে গাথা বিশুদ্ধ ও পরিপূর্ণ ঈমান নিয়ে কুকুরটিকে পানি পান করালেন, আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্ষমা করে দিলেন।অন্যথায় যত ব্যভিচারী মহিলা কোন কুকুরকে পানি করাবে সবাইকে ক্ষমা করে দেবেন এমন কথা এখানে বলা হয়নি।
আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে হাদিস বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« مَن سَأَلَ الشَّهَادَةَ بصِدْقٍ بَلَّغَه الله مَنَازِلَ الشُّهَدَاءِ؛ وَإنْ مَاتَ عَلَى فرِاشهِ »
“যে ব্যক্তি অন্তর থেকে আল্লাহ তা‘আলার নিকট শাহাদাত কামনা করবে, আল্লাহ তাকে শহীদদের মর্যাদা দান করবে যদিও লোকটি বিছানায় মারা যায়।
অনুরূপভাবে ধনী লোক তার সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে যে পরিমাণ সাওয়াব লাভ করে থাকে, একজন গরীব লোক তার নিয়ত ভালো হওয়ার কারণে সেআল্লাহর রাস্তায় দান না করেও অনুরূপ সাওয়াব লাভ করবে।আবু কাবশা আল-আনমারি (রাঃ)হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« مَثَلُ هَذِهِ الأمُّةِ كَمثَلِ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ: رَجُلٌ آتَاهُ الله مَالا وَعِلْمًا، فَهُوَ يْعَملُ فِي مَالهِِ يُنفِقُهُ فِي حَقِّهِ، وَرَُجلٌ آتَاهُ الله عِلْمًا وَلَم يُؤْتهِِ مَالا فَهُوَ يَقُولُ: لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذي يْعَملُ قَال فَهُمَا فِي الأجر سَواءٌ »
“এ উম্মতের উপমা চার শ্রেণীর লোকের অনুরূপ। এক ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তা‘আলা মাল ও জ্ঞান উভয়টি দান করেছেন। লোকটি তার মালকে যথাযথ ব্যয় করে। আর এক ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তা‘আলা জ্ঞান দান করেছে, তাকে মাল দেয় নাই। সে মনে মনে বলে, যদি আমার নিকট লোকটির মত সম্পদ থাকত, তাহলে আমিও তার মত ব্যয় করতাম।রাসূল (সাঃ) বলেন, তারা উভয়ে সমান সাওয়াবের অধিকারী হবেন।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা প্রয়োজন, তা হল, একজন লোক আমলে অক্ষম নয়, তবে সে কাজ করার আশা রাখে, কিন্তু করে না।আর সে ধারণা করে, তাকে তার ভালো কাজের আশার কারণে সাওয়াব দেয়া হবে।সে তার এ ধরনের নিয়তকে নেক নিয়ত বলে বিবেচনা করে।কিন্তু বাস্তবতা হল, এ ধরনের নিয়ত ও আশা শয়তানের ওয়াস-ওসা ও আত্মার ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
একজন মানুষ মসজিদে সালাতের জামাতে উপস্থিত না হয়ে, ঘরে বসে থাকে বা বিছানায় শুয়ে থাকে, আর বলতে থাকে আমি সালাতে যাওয়াকে পছন্দ করি বা সালাতে উপস্থিত হতে চাই। সে ধারণা করে যে, তার এ কথা দ্বারা, মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে সালাত আদায় করার সাওয়াব সে লাভ করবে এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণা উল্লেখিত বিষয়সমূহের সাথে কোন সম্পর্ক নাই এবংরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিসসমূহের সাথেও এর কোন সম্পর্ক নাই।
সা’আদ বিন আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনুহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« إنِّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتغِي بها وَجْهَ الله إلِا أُجِرْتَ عَلَيْهَا، حَتَّى مَا تَجعَلُ فِي فَمِ امْرَأَتِكَ »
“আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তুমি যে দান কর, তার উপর অবশ্যই তুমি সাওয়াব পাবে।এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে খাওয়ারের যে লোকমাটি তুলে দাও”। [তাতেও সাওয়াব পাবে]
এটি কল্যাণের অধ্যায়সমূহ হতে একটি বিশাল অধ্যায়। যখনই একজন বান্দা তাতে প্রবেশ করবে, সে মহা কল্যাণ ও অসংখ্য প্রতিদান লাভ করবে। আর আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বৈধ কর্মগুলো ও স্বাভাবিক কাজকর্ম দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভের ইরাদা করি,তাহলে আমরা বিশাল প্রতিদান ও অধিক সাওয়াবের অধিকারী হব।
যাবিদ আল-ইয়ামি রহ. বলেন, প্রতি কর্মে এমনকি খানাপিনারও নিয়ত করাকে আমি পছন্দ করি। বাস্তব কিছু নমুনা তোমার সামনে তুলে ধরা হল, যাতে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগাতে পারি।
অনেকেই এমন আছে, সে সুগন্ধি ব্যবহার করতে অধিক পছন্দ করেন।সে যদি মসজিদে যাওয়ার পূর্বে সুগন্ধি ব্যবহার করে আল্লাহর ঘরের ইজ্জত করার নিয়ত করে এবং মানুষ ও ফেরেশতাদের কষ্ট রোধ করার নিয়ত করে তাহলে সে অবশ্যই সাওয়াবের অধিকারী হবে।
আমরা সবাই খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করতে বাধ্য।কিন্তু আমরা যদি আমাদের খাদ্য ও পানীয়দ্বারা আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করার উপর শক্তি লাভ করার নিয়ত করে থাকি তাহলে আমরা অবশ্যই সাওয়াব লাভ করব।
অধিকাংশ মানুষ বিবাহ করতে বাধ্য।যদি একজন লোক বিবাহ দ্বারা এ নিয়ত করে, নিজের ও স্ত্রীর সতীত্বের হেফাজত করা এবং এমন নেক সন্তান রেখে যাওয়ার যারা তারপর আল্লাহর জমিনে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করবে, তাহলে তাকে অবশ্যই সাওয়াব দেয়া হবে।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রদের অবশ্যই তাদের উদ্দেশ্য সুন্দর হওয়া উচিত।একজন ডাক্তার ডাক্তারি শিক্ষা দ্বারা মুসলিমদের স্বাস্থ্য-সেবা দেয়ার নিয়ত করবে। অনুরূপভাবে একজন ইঞ্জিনিয়ার মুসলিমদের সেবা করার নিয়ত করবে।মোট কথা, প্রতিটি ছাত্র ইসলাম ও মুসলিমদের খেদমত করার নিয়ত করবে।তাহলে সে তার অধ্যয়ন ও পড়া-লেখা দ্বারা সাওয়াবের অধিকারী হবে।
চট্টগ্রামের অন্যতম ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন আল-হাসনাইন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা কোতোয়ালীর সহযোগিতায় প্রতিদিন কর্মহীন পথশিশু এতিম অসহায় রোজাদারদের মাঝে ইফতার ও সেহেরী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গতকাল ১৩ মে নগরীর আনসার ক্লাব, রাজাখালী, চাকতাই, নতুনব্রিজ, বাস্তহারা, তুলাতলী, কালামিয়া বাজার এলাকায় রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। এই সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় প্রচার সচিব মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, ইতিহাসবিদ সোহেল মুহাম্মদ ফখরুদ্দিন, ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মো: আলমগীর ইসলাম বঈদী, অধ্যক্ষ ইউনুছ কুতুবী,
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুল করিম সেলিম, ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ সভাপতি রেজাউল করিম ইয়াসিন, মুহাম্মদ আরাফাত হোসেন, কোতোয়ালী থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুর রায়হান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউল মোস্তফা জামশেদ, সহ অর্থ সম্পাদক মেহেরাজুল ইসলাম, মহিউদ্দিন সায়েম, নাঈমুল হক, ফাহিম, দিদারুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, হাবিব প্রমুখ।
খাবার বিতরণকালে আল হাসনাইন ফাউন্ডেশনের মহাসচিব আলমগীর বঈদী বলেন এই করোনা ভাইরাস নামের মহামারী মানুষের দুই বেলা খাবার জোগার করার সুযোগটাও হরন করেছেন। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান যেকোন উপায়ে রোজা রাখবেন। অনেকে রাস্তার পাশে ভাসমান গৃহহীন মানুষ থাকে। দুঃখের বিষয় হোটেল খোলা না থাকার ফলে তাদের সেহেরী খেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যা অনেকের ফরজ রোজা রাখার কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় তাদের সার্বিক দিক বিবেচনা করে আল হাসনাইন ফাউন্ডেশনের এই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত আবুধাবী ইউএই কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোছাফ্ফাহ শাখার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহেরের মাতা সমাজসেবিকা আলহাজ্ব ছেনোয়ারা বেগমের ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করেছেন গাউসিয়া কমিটির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান আলহাজ্ব পেয়ার মুহাম্মদ, মহাসচিব শাহজাদ ইবনে দিদার। গাউসিয়া কমিটি ইউ এ ই কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ আইয়ুব, সাধারণ সম্পাদক্ব জানে আলম, মোছাফ্ফাহ শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী জামাল,
আবুধাবি রাজধানী শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আজিম উদ্দিন, দুবাই ইন্টারন্যাশনাল সিটির সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ ফারুক বাহাদুর শোক প্রকাশ করেন এবং শোকাভিভূত পরিবার পরিজনদের সমবেদনা জানান। উল্লেখ্য যে ছেনোয়ারা বেগম আওলাদে রাসুল (দঃ) গাউসে জামান, হযরত সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহঃ) একনিষ্ঠ মুরিদ ছিলেন এবং ১৯৮৮ সাল পযর্ন্ত তাঁর গৃহে প্রতিমাসে মাসিক পবিত্র খতমে বারভী শরীফ মাহফিল পরিচালিত হয়ে আসছে।
প্রফেসর সেলিম উদ্দীন-
হাদীস শরীফে এসেছে- ‘যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু সে তার যাকাত দেয়নি কিয়ামতের দিন তা বিষধর স্বর্পরূপে উপস্থিত হবে এবং তা তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার উভয় অধরপ্রান্তে দংশন করবে এবং বলবে, আমিই তোমার ঐ ধন, আমিই তোমরা পুঞ্জিভূত সম্পদ।’ -সহীহ বুখারী।
যাকাত কিভাবে দিতে হবে তার ব্যাপারেও মুমিনদের জন্য আল্লাহর নির্দেশনা রয়েছে।
কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা তাঁর অনুগত বান্দাদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেন-
وَ الَّذِیْنَ یُؤْتُوْنَ مَاۤ اٰتَوْا وَّ قُلُوْبُهُمْ وَجِلَةٌ اَنَّهُمْ اِلٰی رَبِّهِمْ رٰجِعُوْنَۙ۶۰
আর তারা যা কিছু দান করে এভাবে দান করে যে, তাদের হৃদয় ভীতকম্পিত থাকে (একথা ভেবে) যে, তারা তাদের রবের নিকটে ফিরে যাবে।’ -সূরা মুমিনূন : ৬০
এক আয়াতে মু’মিনদের সম্বোধন করে বলেন-
وَ مَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ فَلِاَنْفُسِكُمْ ؕ وَ مَا تُنْفِقُوْنَ اِلَّا ابْتِغَآءَ وَجْهِ اللّٰهِ ؕ وَ مَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ یُّوَفَّ اِلَیْكُمْ وَ اَنْتُمْ لَا تُظْلَمُوْنَ۲۷۲
… এবং তোমরা তো শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই ব্যয় করে থাক। যে ধনসম্পদ তোমরা ব্যয় কর তার পুরস্কার তোমাদেরকে পুরোপুরিভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না। -সূরা বাকারা : ২৭২
অন্য এক আয়াতে ঈমানদারদের সতর্ক করা হয়েছে তারা যেন অসংযত আচরণের মাধ্যমে তাদের দান-সদকাকে ব্যর্থ না করে দেয়। ইরশাদ হয়েছে-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تُبْطِلُوْا صَدَقٰتِكُمْ بِالْمَنِّ وَ الْاَذٰی ۙ كَالَّذِیْ یُنْفِقُ مَالَهٗ رِئَآءَ النَّاسِ وَ لَا یُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ
‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা অনুগ্রহ ফলিয়ে ও কষ্ট দিয়ে তোমাদের দান-সদকাকে বিনষ্ট করো না। ওই লোকের মতো যে লোক দেখানোর জন্য সম্পদ ব্যয় করে আর ঈমান রাখে না আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের উপর।-সূরা বাকারা : ২৬৪
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
واحسنوا ان الله يحب المحسنين
কুরআন মজীদের উপরোক্ত আয়াতসমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, বিনয়, খোদাভীতি, ইখলাস ও আখলাকে হাসানা হল দান-সদকা আল্লাহর দরবারে মকবুল হওয়ার অভ্যন্তরীণ শর্ত। এসব বিষয়ে যত্নবান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সময়মতো যাকাত আদায় করে দেওয়া কর্তব্য।
যাকাত প্রদান বিষয়ে আমাদের ধারণা কিছুকিছু ক্ষেত্রে মোটেই পরিস্কার নয়। বিষয়গুলো না জানার কারণে যাকাত প্রদান শুদ্ধ হবে না। অনেকে নানা কারণে বিষয়গুলো সম্পর্কে বিজ্ঞ মাওলানাদের কাছ থেকে পরিস্কার ধারণা না নিয়ে এমনটি ভাবেন যে যেভাবেই হোক আমি তো অর্থ দান করে দিলাম। কিন্তু দান করা আর যাকাত প্রদান কিংবা যাকাত আদায়ের মধ্যে বেশ তফাৎ আছে। আসুন, এ বিষয়ে আমরা আরো কিছু আলোচনা করি।
আমাদের দেশে এমন ধারণা আছে যে ঋণগ্রস্ত ব্যাক্তিকে যাকাত দিতে হবে না যেহেতু তার ঋণ আছে। কিন্তু এক্ষেত্রেও কিছু বিষয় পরিস্কার হওয়া দরকার।
কারো ঋণ যদি এত হয় যা বাদ দিলে তার কাছে নিসাব পরিমাণ যাকাতযোগ্য সম্পদ থাকে না তাহলে তার ওপর যাকাত ফরয নয়। -মুয়াত্তা মালেক ১০৭; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০০৩, ৭০৮৬, ৭০৮৯, ৭০৯০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৫৪৭-৫৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৮৩
কিন্তু এখানে মনে রাখতে হবে যে, এই প্রসিদ্ধ মাসআলাটি সকল ঋণের ক্ষেত্রে নয়। ঋণ দুই ধরনের হয়ে থাকে।
ক. প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য বাধ্য হয়ে যে ঋণ নেওয়া হয়।
খ. ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে যে ঋণ নেওয়া হয়।
প্রথম প্রকারের ঋণ সম্পদ থেকে বাদ দিয়ে যাকাতের নিসাব বাকি থাকে কিনা তার হিসাব করতে হবে। নিসাব থাকলে যাকাত ফরয হবে, অন্যথায় নয়। কিন্তু যে সকল ঋণ উন্নয়নের জন্য নেওয়া হয় যেমন কারখানা বানানো, কিংবা ভাড়া দেওয়া বা বিক্রি করার উদ্দেশ্যে বিল্ডিং বানানো অথবা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিলে যাকাতের হিসাবের সময় সে ঋণ ধর্তব্য হবে না। অর্থাৎ এ ধরনের ঋণের কারণে যাকাত কম দেওয়া যাবে না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৮৭
বিয়ে-শাদিতে মোহরানার যে অংশ বাকি থাকে তা স্বামীর কাছে স্ত্রীর পাওনা। কিন্তু এই পাওনা স্বামীর ওপর যাকাত ফরয হওয়া না হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলে না। অর্থাৎ যাকাতযোগ্য সম্পদের হিসাবের সময় এই ঋণ বাদ দেওয়া যাবে না; বরং সমুদয় সম্পদের যাকাত দিতে হবে। -রদ্দুল মুহতার ২/২৬১
স্বামীর কাছে পাওনা মোহরানা নিসাব পরিমাণ হলেও তা স্ত্রীর হস্তগত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাতে যাকাত ফরয হয় না। হস্তগত হওয়ার পর যদি আগে থেকেই ঐ মহিলার কাছে যাকাতযোগ্য সম্পদ নিসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে এখন থেকে বছর গণনা শুরু হবে এবং বছর পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত আদায় করতে হবে।
আর যদি স্ত্রী মোহরানা পাওয়ার আগ থেকেই নিসাব পরিমাণ অর্থ বা সম্পদের মালিক থেকে থাকে তাহলে এই সদ্যপ্রাপ্ত মোহরানা অন্যান্য টাকা-পয়সা বা সম্পদের সাথে যোগ হবে এবং সেই সব পুরানো সম্পদের বছর পূর্ণ হওয়ার পর সমুদয় সম্পদের যাকাত দিতে হবে।
আবার আমাদের অনেকে যাকাতের নিয়ত সম্পর্কেও স্বচ্ছ ধারণা রাখে না।
যাকাত আদায় হওয়ার জন্য যাকাত প্রদানের নিয়ত করা জরুরি। -রদ্দুল মুহতার ২/২৫৮
একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই যাকাত প্রদান করতে হবে। জনসমর্থন অর্জনের জন্য, লোকের প্রশংসা কুড়ানোর জন্য কিংবা অন্য কোনো জাগতিক উদ্দেশ্যে যাকাত দেওয়া হলে তা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।-সূরা বাক্বারা ২৬৪
যাকাতের উপযুক্ত খাতে যেমন ফকীর-মিসকীনকে দেওয়ার সময় যাকাতের নিয়ত করতে হবে। এটাই মূল নিয়ম। তবে নিজের সম্পদ থেকে যাকাতের টাকা পৃথক করে রাখলে পৃথক করার সময়ের নিয়তই যথেষ্ট হবে। এখান থেকে ফকীর-মিসকীনকে দেওয়ার সময় নতুন নিয়ত না করলেও যাকাত আদায় হয়ে যাবে।-রদ্দুল মুহতার ২/২৬৮
যাকাতের উদ্দেশ্যে টাকা পৃথক করে রাখলেও মালিক তা প্রয়োজনে খরচ করতে পারবে। তবে পরে যাকাত আদায়ের সময় যাকাতের নিয়ত করতে হবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০৩৯১, ১০৩৯২
৩৭. যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিকে কিছু টাকা দান করা হয়েছে, কিন্তু দান করার সময় দানকারীর মনে যাকাতের নিয়ত ছিল না তো গ্রহীতার কাছে সেই টাকা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় যাকাতের নিয়ত করলে যাকাত আদায় হবে। তদ্রূপ যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিকে কোনো খাদ্যদ্রব্য প্রদান করা হলে গ্রহীতা তা খেয়ে ফেলার বা বিক্রি করে দেওয়ার আগে যাকাতের নিয়ত করলেও যাকাত আদায় হবে। এরপরে যাকাতের নিয়ত করলে যাকাত হিসাবে আদায় হবে না।-আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৮; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৮-২৬৯
যাকাতের টাকা আলাদা করে রাখা হয়েছে। কিন্তু ফকীর-মিসকীনকে দেওয়ার আগেই তা চুরি হয়ে গেল বা অন্য কোনোভাবে নষ্ট হয়ে গেল তাহলে যাকাত আদায় হয়নি। পুনরায় যাকাত দিতে হবে।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৬৯৩৬,৬৯৩৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৫৩১-৫৩২; রদ্দুল মুহতার ২/২৭০
যাকাত গ্রহণকারীকে একথা জানানোর প্রয়োজন নেই যে, তাকে যাকাত দেওয়া হচ্ছে। যেকোনোভাবে দরিদ্র ব্যক্তিকে যাকাতের মাল দেওয়া হলে মালিক যদি মনে মনে যাকাতের নিয়ত করে তাহলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে।-রদ্দুল মুহতার ২/২৬৮
অন্যের পক্ষ থেকে যাকাত আদায় করতে হলে তার অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় সে ব্যক্তির পক্ষ থেকে যাকাত আদায় হবে না। -রদ্দুল মুহতার ২/২৬৯
গৃহকর্তা যদি ঘরের লোকদেরকে যাকাত দেওয়ার অনুমতি দিয়ে রাখেন তাহলে তারা যাকাতের নিয়তে কাউকে কিছু দিলে তা যাকাত হিসেবে আদায় হবে। আর যদি পূর্বাগ্রে অনুমতি না দেওয়া থাকে আর ঘরের লোকেরা যাকাত হিসেবে কিছু দান করে তাহলে যাকে দান করা হল সে সেই অর্থ খরচ করার আগেই যদি গৃহকর্তা অনুমতি পাওয়া যায় তাহলেও তা যাকাত হিসেবে আদায় হবে। অন্যথায় যাকাত আদায় হবে না। পুনরায় আদায় করতে হবে।
কোনো দরিদ্র ব্যক্তির কাছে কারো কিছু টাকা পাওনা আছে। এখন সে যদি যাকাতের নিয়তে পাওনা মাফ করে দেয় তাহলে যাকাত আদায় হবে না। তাকে যাকাত দিতে হলে নিয়ম হল, প্রথমে তাকে যাকাত প্রদান করা এরপর সেখান থেকে ঋণ উসূল করে নেওয়া।-আদ্দুররুল মুখতার ২/২৭০; রদ্দুল মুহতার ২/২৭১
ঋণগ্রস্তকেই যাকাতের টাকা প্রদান করা উত্তম। কেননা এতে তাকে ঋণের দায় থেকে মুক্ত করা হয়। আর কোনো স্বচ্ছল ব্যক্তি যদি যাকাত থেকে গণ্য করা নিয়ত ছাড়াই ঋণগ্রহীতার ঋণ ক্ষমা করে দেয় তবে তো কথাই নেই।-রদ্দুল মুহতার ২/২৭১
নামাজ হল ইসলাম ধর্মের প্রধান ইবাদত। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ। নামাজ ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের একটি। ঈমান বা বিশ্বাসের পর নামাজই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায় করি। নামাজের মাধ্যমে মূলত মুসলমানরা আল্লাহর একটি আদেশ পালন করে, যার মাদ্যমে মুমিন বান্ধার সাথে আল্লাহর সাক্ষাত হয়।
হাদিসে এসেছে, নামাজ হচ্ছে মুমিনের মেরাজ। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, তোমরা নামাজ শেষ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো। নামাজ নির্ধারিত সময়ে পড়ার জন্য মুমিনদের ওপর ফরয করা হয়েছে। এই বিধানটি মুসলমানদের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষ ভাবে নামাজ মানসিক চাপ থেকে মুমিন ব্যক্তিকে মুক্তি দেয়। কেননা নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিংহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা এটা প্রমাণ করেছে যে, দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার মাধ্যমে মানুষ স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও উপকৃত হতে পারে এবং শারীরিক ভাবে নিম্চিত সুস্থ থাকতে পারে।
রুকু : গবেষকরা বলেছেন, নামাজের সময় শারীরিক যে ক্রিয়া হয়ে থাকে এটা যদি নিয়মিতভাবে ও নির্ধারিত সময়ে হয় তবে অন্য সকল চিকিৎসা থেকে পিঠের ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা পালন করবে এই নামাজ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিংহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখিয়েছেন, যদি কেউ ঠিক মত রুকু করতে পারে তাহলে তার পিঠে কোন ব্যাথা থাকবে না।
শারীরিক উপকার ছাড়াও নামাজ আল্লাহর সাথে মানুষের স’ম্পর্ক বৃদ্ধি করে। আর এই স’ম্পর্ক মানুষের আত্মাকে প্রশান্ত করে। নিয়মিত নামাজ শরীরের উপর ঝিম প্রভাব, রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন কমাতে পারে, পরিণামে পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে। রুকু নীচের পিঠ, উরু এবং ঘাড়ের পেশীগুলি সম্পূর্ণভাবে প্রসারিত করে এবং রক্ত শরীরের উপরের অংশে প্রবাহিত হয়।
সিজদা : সিজদা দিলে হাড়ের জোড়ার নমনীয়তা বাড়ে। মাথা নামানোর সময় মস্তিকে রক্ত সঞ্চালন হলে রক্তচাপও কমে, এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। সিজদার পুনরাবৃত্তি: এই সিজদা শরীরিরে ভারসাম্য এনে দেয়।
এটা সত্য যে নামাজ শারীরিক উপকারের জন্য পড়তে হয় না। নামাজ পড়তে হয় মহান আল্লাহর আদেশ পালন করার জন্য। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত নামাজ পড়ে থাকেন তারা শারীরিক অনেক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকেন এবং তাদের রোগ ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।