সালমান খানের সুপারহিট সিনেমা বাজরাঙ্গি ভাইজান সিনেমায় মুন্নির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী হরশালী মালহোত্রা। আজকেও তিনি নেট পাড়ায় তুমুল ভাবে আলোচিত তার এই চরিত্রের জন্য। মাত্র ৭ বছর বয়সে মুন্নী চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি তারকা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। মুন্নী চরিত্রে তার অভিনয় এতটাই প্রশংসিত হয়েছিল যে সালমান খানের থেকেও এই ছবির জন্য তাকে বেশি মানুষ চিনে থাকে।
বর্তমানে ২০২২ সালে তিনি ১৪ বছর বয়সী হয়েছেন। তবে এখন আপনি তাকে দেখলে একেবারেই চিনতে পারবেন না। এই সাত বছরে কিন্তু মুন্নির লুক একেবারেই পাল্টে গিয়েছে এবং এই মুহূর্তে তিনি তার নতুন আবেদনময়ী রূপের জন্য দারুন প্রশংসাও কুড়িয়েছেন সকলের কাছ থেকে। দেখতে তিনি এখনো সেরকমই মিষ্টি কিন্তু, আগের থেকে তার রূপের অনেক আবেদন বেড়েছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জন্য নির্মিত হচ্ছে ২৬ পর্বের নতুন ধারাবাহিক নাটক ‘বাঘবন্ধি’। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) থেকে নাটকটির শুটিং শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটির নজুমিয়ার হাট, আম বাগান, শাজাহান ফিল্ডসহ বিভিন্ন মনোরোম লোকেশনে এর দৃশ্যধারণ করা হচ্ছে।
মফস্বল পটভূমিতে রচিত নাটকটিতে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, গ্রাম্য রাজনীতি, সম্পর্কের টানাপোড়েন, প্রেম-পরিণয়, আনন্দ-বিষাদ ইত্যাদি তুলে ধরা হচ্ছে।
রিয়াদ বিন মাহবুবের রচনা ও পরিচালনায় নাটকটি প্রযোজনা করছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। চিত্রগ্রহণে রয়েছেন হাসিবুর রহমান ও এমএম সালাউদ্দিন। কারিগরী সহায়তায় রয়েছে দৃশ্যছায়া।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন রাশেদ মামুন অপু, রফিউল কাদের রুবেল, আশরাফুল করিম সৌরভ, অহনা, শ্রেয়শী, তানবীর পিয়াল, রিতুপর্ণা সেনগুপ্ত, আব্দুর হাদী, মোহাম্মদ ফোরকান, সায়মন, ইউনুস রানা, মাইশা, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এর আগে রিয়াদ বিন মাহবুবের রচনা ও পরিচালনায় বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে থেকে প্রচারিত ২৬ পর্বের ধারাবাহিক নাটক ‘করপোরেট’ দারুন সাড়ে ফেলেছিল।
মাত্র ধুই তিন বছরের মধ্যে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সহায়তা শুধু নগদ নয়, অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি-বৈভবে চোখ কপালে উঠেছে ইডি আধিকারিকদের।
রাজারহাট-নিউটাউনে ছ’টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। হরিদেবপুরের আবাসনে আরও তিনটি এবং বেলঘরিয়ায় দু’টি। অর্থাৎ, শহরেই তাঁর ফ্ল্যাটের সংখ্যা ১১। এছাড়া শান্তিনিকেতনে রয়েছে তিনটি বাড়ি। এক একটির দাম কমপক্ষে ৮০-৯০ লক্ষ টাকা। সঙ্গে প্রায় কোটি টাকার ইন্টিরিয়র ডেকরেশন।
ঘটনাচক্রে এই সব সম্পত্তিই তাঁর হাতে এসেছে মাত্র দু’-তিন বছরের মধ্যে। সৌজন্যে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এমনই দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার।
বিগত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই খবরের শিরোনামে পার্থবাবুর ঘনিষ্ঠ এই অভিনেত্রী। বাংলা-ওড়িয়া সিনেমা থেকে টিভি ধারাবাহিক, বিজ্ঞাপনে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। ইডির দাবি, শুধু ফ্ল্যাট-বাড়ি নয়, বছরে দু’বার বিদেশ ভ্রমণ ছিল অর্পিতার রুটিন। তাঁর হরিদেবপুরের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে রয়েছে ১৫টি ভিন্ন প্রজাতির বিদেশি কুকুর। নিত্যনতুন বিলাসবহুল হোটেল থাকা ও আর বিদেশি গাড়ি চড়াকেও অভ্যাসে পরিণত করেছিলেন তিনি। ইডি জেনেছে, এই সব কিছুতেই অভিনেত্রীকে টাকা জুগিয়েছেন পার্থ। কিন্তু কেন?
সূত্রের খবর, এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে ইডি আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, অভিনেত্রীর সঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আলাপ মাত্র বছর দুয়েক আগে। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা জমি-বাড়ি ইত্যাদি সম্পত্তিতে লাগানোর ক্ষেত্রে অর্পিতা ছিলেন পার্থবাবুর হাতের তাস। তদন্তকারীদের দাবি, অভিনেত্রীর নামে ফ্ল্যাট এবং বাড়িগুলি কিনেছিলেন মন্ত্রীই। এর মধ্যে হরিদেবপুরের বিলাসবহুল আবাসনের ফ্ল্যাটগুলি ছিল তিন থেকে চার হাজার বর্গফুটের। বিদেশ থেকে এসেছিল ঘরের আলো, মার্বেল ও বিভিন্ন সামগ্রী। পুরো টাকাটাই মন্ত্রীর।
ইডির আরও অভিযোগ, অতিরিক্ত বিশ্বাসভাজন হয়ে ওঠার পরই মন্ত্রী তাঁর এক ঘনিষ্ঠের মাধ্যমে দুর্নীতির টাকা তাঁর কাছে ‘পার্ক’ করতেন। সম্পত্তি আর টাকার লোভে অর্পিতা মাঝেমধ্যে মন্ত্রীকে ব্ল্যাকমেলও করতেন। তার সুবাদে তিনি হাতিয়েছেন বেশ কিছু জমি ও ফ্ল্যাট। সেগুলির নথি যাচাইয়ের কাজ চলছে। অভিনেত্রীর হাল ফ্যাশনের গয়না পরার শখ ছিল। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার সোনা
ও হীরের গয়নাগুলি একেবারে ‘লেটেস্ট ডিজাইনে’র। ইডির দাবি, নগদকে অলঙ্কারে রূপান্তরিত করার দায়িত্ব ছিল অর্পিতার। সেই কারণে পরিচিতদের কোম্পানি থেকে গয়না কেনা হয়। তদন্তে প্রকাশ, সেই সংস্থাগুলিও কালো টাকা সাদা করার জন্য খোলা হয়েছিল। একাধিক কোম্পানির ডিরেক্টরও ছিলেন অভিনেত্রী। তাঁর বিদেশ যাত্রাও এখন তদন্তকারীদের নজরে। গত দু’বছরে তিনি বেশ কয়েকবার থাইল্যান্ড, দুবাই, মালদ্বীপ সহ বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন। সেখান থেকেই কালো টাকার বিনিময়ে বিদেশি মুদ্রা আমদানি করা হয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে।
সব মিলিয়ে তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে হরিদেবপুরের আবাসনটি। সেখানে দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা এক কর্মী জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই আসতেন পার্থবাবু। লিফটে সোজা উঠে যেতেন দোতলার ফ্ল্যাটে। কারণ, সেখানেই থাকতেন অর্পিতা।

পরিচালক রাজকুমার হিরানির ছবিতে তাপসী পান্নু ও শাহরুখ খান
বিনোদন ডেস্ক : বলিউডেও দক্ষিণী চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাপসী পান্নু একের পর এক ছক্কা পেটাচ্ছেন। এবার বলিউডের বাদশা শাহরুখ খানের সঙ্গে জুটি বাদছেন তাপসী। পরিচালক রাজকুমার হিরানি। এর আগে কিং খান খ্যাত শাহরুখের প্রযোজিত ছবিতে কাজ করেছিলেন তাপসী।
গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ছবির শ্যুটিং শুরু হবে। কাজ শেষ হবে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে। অভিবাসনের প্রেক্ষাপটে তৈরি হবে এই ছবি। তবে কৌতুকে মোড়া হবে ছবির বিষয়বস্তু।
বর্তমানে পাঠান ছবিটি নিয়ে ব্যস্ত শাহরুখ। এতে আরও আছেন শাহরুখের ‘ওম শান্তি ওম’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’র সহশিল্পী দীপিকা পাড়ুকোন। ছবিটির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে জন আব্রাহামকেও।

অসম্ভবকেই সম্ভব করবেন জয়া
বিনোদন ডেস্ক : সম্প্রতি জয়া আহসান বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছেন নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে। ছাদে রোদের নিচে দাঁড়িয়ে গোলাপি অন্তর্বাসের সঙ্গে কালো ট্রাউজার, এমন পোশাকে দ্যুতি ছড়ালেন জয়া।
বলছেন, ‘সূর্যকিরণ এবং কিছুটা গোলাপি দিয়ে যেকোনো কিছুই সম্ভব।’ হয়তো আসলেই সম্ভব। না হলে নেটিজেনরা মেতে উঠবেই বা কেন?
জয়ার এই পোস্টের নিচে মন্তব্য পড়েছে ৯ হাজারের বেশি। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি মানুষ।
অজস্র মন্তব্যে ভরে যায় জয়ার ছবির মন্তব্য বাক্সে, একটি ছবি পোস্ট করলেই হলো, যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ে নেটিজেনরা।
অবশ্য সবচেয়ে ইতিবাচক মন্তব্য তা নয়। কেউ কেউ আসেন ধর্ম শেখাতে, কেউ আসেন নৈতিকতা শেখাতে, কেউ বা কোনটা ঠিক আর কোনটা ঠিক নয় সেটা বলতে আসেন।
এসবের অবশ্য উত্তর দেন না জয়া। তিনি থাকেন নিজের মতো করে। আর বাকি ভক্তরা বিস্ময় নিয়েই মন্তব্য করে যান, ইমোজি দিয়ে যান। প্রকাশ করেন ভালোবাসা।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের বয়স নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। শোবিজে তার বয়স জানার জন্য অনেক সময় আলোচনাও হয়েছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বয়স দেখানো হয়েছে ৪৪, কোথাও আবার সেটা ৪৬ বলা হয়েছে। এবার ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকে জয়া আহসান তার বয়সের কথা জানালেন।
জয়া আহসান জানান, তার বয়স ৩৭ বছরের এক দিনও বেশি নয়। উইকিপিডিয়ায় তাকে নিয়ে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে অনেক তথ্যই ভুল দেওয়া আছে।
তার বয়স ৪৭ অথবা ৩৭ যা-ই হোক না কেন, এই মুহূর্তে দুই বাংলার সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত মুখ জয়া আহসানই।
চিত্রনায়িকা আঁচল তার কৈশোর বয়সে অসংখ্য প্রেমের প্রস্তাব পেতেন। সাথে সে সময় অনেকে এই নায়িকাকে বিয়ের প্রস্তাবও দিতেন। এ সময় প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে বেশ লজ্জার মধ্যে পড়তে হতো তাঁকে। এখনো নিয়মিত প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব পান তিনি। সেসব প্রস্তাব কড়া ভাষায় ‘না’ করে দেন এই অভিনেত্রী। ঘর সংসার নিয়ে এখন ভাবছেনই না তিনি। সিনেমা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চান এই ঢালিউড নায়িকা।
সম্প্রতি একটি বিয়ের ছবি পোস্ট করেছেন আঁচল। সেখানে বিয়ের সাজে দেখা যায় তাঁকে। ছবিটি সম্পর্কে আঁচল বলেন, ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিগুলো সম্প্রতি শেষ হওয়া ‘কাজের ছেলে’ ও ‘আয়না’ ছবির একটি দৃশ্যের। বাস্তবে প্রেম-বিয়ে কিছুর মধ্যে নেই আঁচল। কাজ ছাড়া কোনো কিছুই মাথায় নিতে চান না আঁচল। তিনি বলেন, বিয়ে করলেও ২০২৫ সালের পর।
২০১৭ সাল থেকে ইচ্ছা করে খুব বেশি ছবিতে অভিনয় করেননি তিনি। ক্যারিয়ারে গত তিন বছর আঁচল ধৈর্য ধরে ছিলেন। এই সময়ে মিডিয়ায় কাজের সংখ্যা কম ছিল। কোনো গল্পও পছন্দ হচ্ছিল না। আঁচল বললেন, খারাপ গল্পের ছবিতে কাজ করার চেয়ে না করাই ভালো। এ জন্য তিনি অপেক্ষা করেছেন এত দিন। করোনাকালে ঢালিউড নায়িকাদের মধ্যে সর্বাধিক ছবিতে নাম লিখিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, ‘আয়না’, ‘রাগী’, ‘কাজের ছেলে’, ‘চিৎকার’, ‘করপোরেট’, ‘যমজ ভূতের গল্প’সহ সাতটি ছবি নিয়েই তাঁর ব্যস্ততা। তাঁর অভিনীত চারটি ছবির শুটিং শেষ। দুটি ছবির কাজ এখনো বাকি আছে। হাতে রয়েছে নতুন একটি ছবির কাজ। এই অভিনেত্রী বললেন, ‘শুটিং করতে গিয়ে এখন আর করোনাকে ভয় পান না। তা ছাড়া রোমান্টিক দৃশ্যে নায়কের কাছে যেতেই হয়। শুটিংয়ে খল চরিত্রের সঙ্গে মারামারিও করতে হয়। কারণ, এসব ছাড়া বাণিজ্যিক ছবি হয় না।’
সম্প্রতি ‘করপোরেট’ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন আঁচল। শুটিং ছিল গাজীপুর। গানের একটি দৃশ্যে শুটিং করতে করতে রাত হয়ে যায়। শুটিং শেষ করে কম্বলের নিচে তিনি। এমন সময় তাঁকে ইউনিট থেকে জানানো হয়, একটি শট বাকি আছে। শীতের মধ্যে তাঁকে ঠান্ডা পানিতে নামতে হবে। বললেন, ‘আমি বললাম, নামব না। ভোর চারটা। তখন খুব ঠান্ডা। পরে দেখি সবাই অসহায়ের মতো আমার জন্য বসে আছেন। তখন চিৎকার দিয়ে পানিতে নামার ঘোষণা দিয়েছিলাম। টানা ৩০ মিনিট ঠান্ডা পানিতে ভিজতে হয়েছিল। পানিতে নামার আগে প্রস্তুতি হিসেবে কাঠে আগুন ধরানো হয়েছিল। ঠান্ডা কম লাগার জন্য পুরো শরীরে শর্ষের তেল মেখে নিয়েছিলাম। ভাবতে পারেন, ভোরের কনকনে শীতে সারা শরীরে শর্ষের তেল মেখে পানিতে নেমেছিলাম।’ সেদিন আঁচল শুটিং না করলে ফেঁসে যেতেন পরিচালক।
মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধিরুবাই আম্বানি হাসপাতালে কোলন ইনফেকশন সমস্যা নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি অবস্থায় আজকে সেইখানে মারা যান তিনি।
আজ বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকালে তিনি মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধিরুবাই আম্বানি হাসপাতালে মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালে ইরফান খানের সঙ্গে তার স্ত্রী সুতপা ও দুই সন্তান সাথে আছেন।
ব্রেনে টিউমার নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে লড়াই করছেন তিনি। সুস্থ হয়ে ‘আংরেজি মিডিয়াম’ ছবির মধ্যে দিয়ে কামব্যাকও করেছিলেন তিনি। কিন্তু আবারও অসুস্থ হয়ে ভর্তি হলেন ইনফেকশন নিয়ে।
অসুস্থ হওয়ার পর এক টুইটে ইরফান লেখেন, “জীবনে জয়ী হওয়ার সাধনায় মাঝে মধ্যে ভালবাসার গুরুত্ব ভুলে যাই আমরা। তবে দুর্বল সময় আমাদের তা মনে করিয়ে দেয়। জীবনের পরবর্তী ধাপে পা রাখার আগে তাই খানিক ক্ষণ থমকে দাঁড়াতে চাই আমি। অফুরন্ত ভালবাসা দেওয়ার জন্য এবং পাশা থাকার জন্য আপনাদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আপনাদের এই ভালবাসাই আমার যন্ত্রণায় প্রলেপ দিয়েছে। তাই ফের আপনাদের কাছেই ফিরছি। অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সকলকে।”
ফিরে এসেছিলেন ইরফান। তার শেষ মুক্তি পাওয়া ছবি “আংরেজি মিডিয়াম’ লকডাউনের জেরে থিয়েটার রিলিজ হয়নি। দুই ছেলে আর আর স্ত্রীকে রেখে ইরফান পাড়ি দিলেন নতুন দুনিয়া।
এর আগে ২০১৮ সালে ইরফান খান নিউরোনডকট্রিন টিউমারে আক্রান্ত হন। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ভারতের জয়পুরে নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ইরফান খানের মা সাইদা বেগম। লকডাউনের কারণে মায়ের শেষবিদায়ে অংশগ্রহণ করা হয়নি তার।
২০০১ সালে
ঘুরে এলামঃ আজমীর-দিল্লী-আগ্রা
মোঃ আবু মনসুর
“কেউ ফিরে না খালী হাতে, গেলে খাজার দরবারে”
খাজা গরীবে নেওয়াজ মঈনুদ্দিন চিশতি
(রঃ) এর মাজার আজমীর শরীফ
জিয়ারতের প্রবল ইচ্ছা দীর্ঘদিন ধরে।
যদিওবা আমার মতাে মধ্যবিত্ত ঘরের
লােক বিদেশ ভ্রমণ করাটা অনেকটা
“বামন হয়ে চাঁদের দিকে হাত বাড়ানাে’র
মত”। তবু যে মনে বড় আশা হযরত খাজা
গরীবে
জেয়ারতের। এই প্রবল মনের টানে গত
এপ্রিল মাসে চুড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নিলাম
আজমীর যাবার। আমার সাথে আজমীর
যাবার সফরসঙ্গী হলাে বন্ধু পারভেজ
রফিক, ইয়াকুব এবং রফিকের সদ্য
বিবাহিত সহধর্মিনী মিসেস লাভলী।
সফরসঙ্গী বন্ধুদের আর্থিক অবস্থা আমার
চাইতে অনেক ভাল। তাই তারা একটি
নির্দিষ্ট তারিখ লক্ষ্য করে প্রস্তুতি নিতে
লাগলাে রওনা হবার। তাদের নির্দিষ্ট
তারিখ আমাকেও জানিয়ে দিল। ২৬
এপ্রিল বেলা দু’টা চল্লিশ মিনিটে তথা
নির্ধারিত সময়ে আমাদের যাত্রা শুরু
হলাে। এসি কোচ; নিয়মতান্ত্রিকভাবে
দরজা বন্ধ। শুধু গ্লাসের ভিতর দিয়ে
বাইরের প্রকৃতি অবলােকন করছি। বেশ
কয়টি পত্রিকা এবং ম্যাগাজিন গাড়ীতে
চড়ার আগেই নিয়ে নিয়েছি। গাড়ী চলছে।
তার আপন গতিতে। কিছুক্ষণ পত্রিকা
ম্যাগাজিনে চোখ বুলাচ্ছি, কিছুক্ষণ
একমনা হয়ে বাইরের প্রকৃতির সাথে
সখ্যতা গড়ার চেষ্টা করছি। এসি কোচের
দরজা বন্ধ করে যখন যাত্রা শুরু হলাে
তখন থেকে কেমন জানি মনে হচ্ছে
আমরা যারা এসি কোচের যাত্রী সবাই
বাইরের জগত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা,
জনবিচ্ছিন্ন জীব। এভাবে ভাবনার রেশ
কাটতেই আমার বন্ধু রফিকের স্ত্রী
লাভলীর সাথে দুষ্টুমীর পালা। লাভলী
অত্যন্ত চঞ্চল এবং মুক্ত মানসিকতার
মেয়ে।মুক্তভাবে লাভলীর সাথে কথা
বলতে পারাটা এতাে লম্বা ভ্ৰমণের
বিনােদন হিসেবে সহায়ক হয়েছে।
এভাবে দীর্ঘ সতের ঘন্টা গাড়ীতে চড়ে
২৭ এপ্রিল সকাল সাতটায় বেনাপােল
পৌছলাম। একটানা গাড়ীতে চড়ে আমরা
সবাই ক্লান্ত। নয়টার সময় বেনাপােল
কাষ্টমস খুলবে। কর্মকর্তারা আসবেন।
দুই ঘন্টার বিশ্রাম পেলাম। এরিমধ্যে
আমরা নাস্তার পর্বটা সেরে নিলাম।
যথারীতি নয়টা বেজে গেলাে। আমরা
কাষ্টমস এর দিকে এগুলাম। কাষ্টমসের
কাজ সারতে হবে। প্রথমে অামরা
জনপ্রতি ৩২০ টাকা করে ভ্রমণ কর
দিলাম। কাষ্টমসে আমাদের পাসর্পোটে
ইমিগ্রেশন সিল করতে হবে। লাইনে
দাঁড়ালাম। লাইনেই চট্টগ্রামের পটিয়া
থানার একভদ্র লােক উনি কলকাতার
মেডিকেলে ডাক্তারী পড়ছেন। তাঁর সাথে
পরিচয় হলাে। তিনি আমাদের যথেষ্ট
সহযােগিতা করেছেন যা ভােলার নয়।
বেনাপােল কাষ্টমস কর্মকর্তাদের
ভারতগামী যাত্রীদের উপর এদের ওপেন
সিক্রেট চাঁদার হার রয়েছে।
বহির্ভূতভাবে এরা এ টাকা নিয়ে থাকে।
এই বিড়ম্বনার শিকার আমরাও হলাম।
এভাবে কাষ্টমস সেরে আমরা বেনাপােল
সীমান্ত পার হয়ে ৮০০ রুপি দিয়ে ভাড়া
করলাম একটা টেক্সি।
২৭ এপ্রিল বেলা দুইটার সময় পৌছলাম
কলিকাতার জাকারিয়া স্ট্রীটে। হােটেল
আমানিয়াতে উঠলাম। দুই ঘন্টা বিশ্রামে
খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। বিকেল
চারটার সময় পিয়ারলি প্যালেস ট্রেনের
টিকেট কাউন্টারে গেলাম। দেখলাম
পরের দিনের টিকেট নেই। ইতােমধ্যে
সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোন ট্রেনে যাবাে।
রাজধানী এক্সপ্রেসে যেতে হলে ১৫০০
রুপি লাগবে। তাই আমরা টাকা কম
খরচের জন্য রাজধানী এক্সপ্রেস বাদ
দিয়েছি। কিন্তু দালাল মারফতে আমরা
২৮ এপ্রিলের “কালকা এক্সপ্রেসের
টিকেট নিলাম ৬০০ রুপি করে। ট্রেন
ছাড়বে সন্ধ্যা সাতটায়। যথারীতি সন্ধ্যা
সাতটায় হাজির হলাম হাওড়া রেল
ষ্টেশনে। হাওড়া রেল ষ্টেশন দেখার মত
একটা জায়গা। অনেকগুলাে প্ল্যাটফর্ম
একটা প্ল্যাটফর্ম মিস হলে ট্রেন মিস হবার
সম্ভাবনা। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে
কম্পিউটারাইজড তালিকা প্রিন্ট রয়েছে।
কত নম্বর ট্রেন কত নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে
ছাড়বে স্পষ্টভাবে কম্পিউটার তালিকা
আছে। সেই সুবাদে আমাদের কোন
অসুবিধা হয়নি। সন্ধ্যা সাতটায় কালকা
এক্সপ্রেসে উঠলাম। শ্রিপিং সিট এ-
সুবিধা আছে ঘুমানাে যাবে। আমরা
কলকাতা থেকে রওনা দিলাম দিল্লী
উদ্দ্যেশ্যে।
২৯ এপ্রিল রাত আটটায় আমরা দিল্লীতে
পৌছলাম। পঞ্চাশ রুপি দিয়ে টেক্সি ভার্া
নিলাম দিল্লি জামে মসজিদ। সেখানে
“হােটেল নাজ” এ উঠলাম।
যেহেতু ১ মে রওনা দেব আজমীর এর
উদ্দ্যেশ্যে একদিন অবসর-বিশ্রাম
পাওয়ার সুবাদে দিল্লী জামে মসজিদে
নামাজ পড়ার সুযােগ পেলাম। দিল্লী
জামে মসজিদ মুসলিম স্থাপত্যের এক
অনন্য নিদর্শন। এ মসজিদের আয়তন
অনেক বড়, তবে মসজিদের ময়দানটা
অনেক বড়। অনেক দামী পাথরে গড়া
সম্রাট আকবর কর্তৃক স্থাপিত এ দিল্লী
জামে মসজিদ। এ মসজিদে হযরত
মুহাম্মদ (সঃ) এর কদম মােবারক এবং
দাড়ি মােবারক রয়েছে। প্রতি ওয়াক্ত
নামাজ শেষে দর্শনার্থীদের পবিত্র কদম
মােবারক এবং দাড়ি মােবারক স্পর্শ
করার সুযােগ থাকে। এই সুবাদে হযরত
মুহাম্মদ (সঃ) এর কদম মােবারক এবং
দাঁড়ি মােবারক চুম্বন করার মহা সুযােগ
পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করলাম।
তবে
দিল্লী জামে মসজিদের বর্তমান চিত্র দেখে
আমার মনে এক প্রশ্নের উদ্রেক হলাে।
ভারতীয় সরকার কি মুসলিম স্থাপত্যের
প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করছেনা?
দিল্লী জামে মসজিদের সংস্কার কোন
সাধারণ জনগণের ব্যক্তিগত উদ্যোগে
করার ক্ষমতা পুরাে আওতার বাইরে
বিধায় সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা ছাড়া দিল্লী
জামে মসজিদের সংস্কার অসম্ভব বলে
আমার মনে হচ্ছে। দিল্লী জামে মসজিদে
আছর এর নামাজ পড়ে দিল্লীর লাল কেল্লা
দেখতে গেলাম। খুব সুন্দর স্থাপনা।
তৎকালীন
আভিজাত্যের স্থাপনা এ লাল কেল্লা।
সম্রাটদের শােবার ঘর, বাগান, বিচারের
আসন মানে পঞ্চায়েত মহল, এসব
অত্যাধিক আভিজাত্যের চিত্র দেখে মনে
হলাে এ সম্রাটরা রাজ্য শাসনের
পাশাপাশি অনেক শােষণ করেছে সাধারণ
জনগণকে।
১ মে নির্ধারিত রাত নয়টা পনের মিনিটের
আহমেদাবাগ এক্সপ্রেসে আজমীর যাবার
উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিলাম। ট্রেনে বসে এক
আনন্দের ভাবনা এসে গেলাে। আজ দীর্ঘ
অনেক বছর যাবত আজমীর যাবার
আশা হৃদয়ে লালিত করেছি- হযরত
খাজা গরীবে নেওয়াজ মঈনুদ্দিন চিশতী(রঃ)
এর রওজা জেয়ারতের স্বপ্ন
অনেকদিনের। গাড়ী ছুটছে তার আপন
ছন্দময় গতিতে গন্তব্যের ঠিকানায়। আর
আমরা অপেক্ষায় কখন পৌছবাে আজমীর
শরীফ। ট্রেনে চড়ে ভাবছি আজ সত্যি
সত্যি আমার স্বপ্নের মহা প্রত্যাশার
জায়গা আজমীর যাচ্ছি।
এই ব্যাকুল আনন্দে কখন যে দীর্ঘ এগার ঘন্টা ট্রেনে
চড়ে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি। পরদিন
সকাল আটটায় আমরা আজমীর শরীফের
ষ্টেশনে নামলাম। টেক্সিতে করে আজমীর
শরীফের খাদেম জুনায়েদ মিয়া চিশতীর
বাসভবনে গিয়ে উঠলাম। আজমীর
শরীফে কোন হােটেলে থাকার চাইতে
জানাশুনা খাদেমদের ঘরে গেলে
খাওয়া জেয়ারতের যাবতীয় সুব্যবস্থা গুলি
খাদেমরাই করে থাকেন।
আমরা খাওয়া
দাওয়া সেরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম।
ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিশ্রামই যেন ভাল লাগছেনা, এই মন শান্তি পাচ্ছে না
যতক্ষন না যাই হযরত খাজা গরীবে
নেওয়াজের পবিত্র রওজা জেয়ারত
করতে। জুনায়েদ চিশতী বেলা বারটায়
আমাদের রওজা শরীফে নিয়ে গেলেন।
আমরা ফুল এবং চাদর নিয়ে গেলাম
রওজা শরীফে। হযরত খাজা গরীবে
নেওয়াজ (রঃ) এর রওজায় ফুল ও চাদর
দিয়ে জোহরের নামাজ পড়লাম। প্রতিদিন জোহরের নামাজের পর থেকে কাওয়ালী আয়োজন করা হয়। এই কাওয়ালী গানের প্রতি প্রচন্ড দুর্বলতা আছে।
জীবনে আমার অনেক বড় স্বপ্ন ছিল খাজা
গরীবে নেওয়াজ (রঃ) এর দরবার শরীফে
কাওয়ালী গান শুনার। আল্লাহ্ আমার
সেই আশাপূর্ণ করেছে, আল্লাহর দরবারে
হাজার শুকরিয়া।
আমরা ৩ এপ্রিল আনা
সাগরে গেলাম। জলরাশি খুব পরিস্কার
খাজা গরীবে নেওয়াজ (রঃ)-কে যখন পৃথিরাজ এবং এর সৈন্যরা আনা সাগরের
পানি ব্যবহার করতে দিচ্ছিলনা, খাজা
গরীবে নেওয়াজ একটু রাগান্বিত হয়ে
এক মুরিদকে পাঠালেন আনা সাগরের
এক বদনা পানি আনতে। ঐ মুরিদ এক
বদনা পানি আনার সাথে সাথেই আনা
সাগর শুকিয়ে যায়। পরবর্তীতে এরা
আবার খাজা গরীবে নেওয়াজের নিকট
ক্ষমা প্রার্থনা
করলে তিনি ক্ষমা করে দেন।বদনার পানি আনা সাগরে ঢেলে
দিলে সাগর আবার পানিতে ভরপুর হয়ে
যায়। আছরের নামাজ পড়ে আবার বসে
গেলাম কাওয়ালীর আসরে।
আর আমাদের দেশীয়
কাওয়ালীর সাথে আজমীর শরীফের
কাওয়ালীর রয়েছে অনেক পার্থক্য।
আমরা ৪ এপ্রিল তারাগড় পাহাড়ে হযরত
মিরা সৈয়দ হােসেন দুলার মাজার
জেয়ারত করতে যাই।
পাহাড়ে যাবার সময় জীপ যােগে যাই।
এত উঁচু পাহাড়। জানতে পারলাম
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী
তারাগড় পাহাড়ে পানি এবং বিদ্যুৎ
সংযােগ করে দিয়েছেন। জেয়ারিত শেষে
আসার সময় হেঁটে হেঁটে আসি। নামার
সময় দেখি, হযরত খাজা গরিবে
নেওয়াজকে পৃথিরাজের যাদুকর যে বিরাট
পাথরটি নিক্ষেপ করেছিলাে, সেই পাথরটি
খাজা গরীবে নেওয়াজের কেরামতিতে
আটকে গিয়েছিলাে, সেই পাথরে খাজা
গরীবে নেওয়াজের আঙ্গুলের এবং ঘােড়ার
পায়ের ছাপ স্পষ্ট রয়েছে।
পরদিন আজমীর শরীফ থেকে চলে
আসার সিদ্ধান্ত নিই। জনাব জুনায়েদ
চিশতী সাহেবকে জানিয়ে দিলাম। আমরা
আছরের ওয়াক্তে হযরত খাজা গরীবে
নেওয়াজ শেখ সৈয়দ মইনুদ্দিন চিশতী
(রঃ) এর মাজার শেষবারের মত বিদায়ী
জেয়ারত করে নিই। খাদেমের ঘরে
আসি। এসে কাপড় চোপড় ভালভাবে
গুছিয়ে নিই। মাগরিব ওয়াক্তল ভাত খেয়ে
জুনায়েদ চিশতী থেকে বিদায় গ্রহণ করি।
চার/পাঁচদিন জুনায়েদ চিশতী ছাহেবের
যে আতিথেয়তা আমরা পেয়েছি আমি
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে, আমার ভাষায় আমি প্রকাশ করতে পারবােনা। আমি জুনায়েদ
সাহেবের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
পরদিন রাত
আটটায় আমরা বাস যােগে রওনা হই
দিল্লীর উদ্দ্যেশ্যে। বাস যােগে আসার
পথে চোখে পড়ে জয়পুর পিংক সিটি।
জয়পুর একটি চমৎকার জায়গা,
জয়পুরেই নাকি ভারতীয় ছায়াছবির
বেশীরভাগ শুুটিং হয়। দীর্ঘ নয় ঘন্টা
গাড়ীতে চড়ে সকাল পাঁচটায় গিয়ে পৌছি
দিল্লী। বাস থেকে নেমে টেক্সিতে করে
আবার জামে মসজিদ সংলগ্ন ” হােটেল
নাজ” এ উঠলাম। বিশ্রাম করলাম দুচার
ঘন্টা।
বিকেল চারটায় একটা টেক্সী ভাড়া
নিয়ে হযরত নেজাম উদ্দীন আউলীয়া
(রঃ), হযরত বখতিয়ার উদ্দীন কাকী
(রঃ), হযরত মুটকা শাহ (রঃ) এর
মাজার জেয়ারত করেছি। রাত্রে হােটেলে
এসে ম্যানেজার মারফতে আগ্রা যাবার
জন্য ট্যুরিষ্টবাসের টিকেট বুকিং দিলাম।
আগ্রা যাবার সিদ্ধান্তে সবাই একমত হতে পারলাম না। বন্ধু পারভেজ এবং ইয়াকুব
আগ্রা যাবার পক্ষপাতী নয় কেননা এরা
আগেও আগ্রার তাজমহল দেখেছে। আগ্রা
যাবার জন্য একমত হলাম আমি,
আলীদা, রফিক, লাভলী।
৭ মে সকাল ছয়টায় ট্যুরিষ্ট বাসে উঠে বসলাম
গাড়ীর ভিতর অডিও সেট
চলছে, গানগুলাে খুব ভাল লাগলো গাড়ী
চলাকালীন সময়। বেলা বারটায় গিয়ে
পৌছলাম আগ্রা পাের্ট এ। আমাদের সময়
দিলেন পঞ্চাশ মিনিট। এই অল্প সময়ের সবকিছু দেখতে হবে।
প্রতিযােগীতামূলক আমরা আগ্রা পাের্টের
গেইটে গেলাম। পাঁচ রুপি দিয়ে টিকেট
কেটে ভিতরে ঢুকে গেলাম। আগ্রা
পাের্টটি যমুনা নদীর তীর ঘেষেই
অবস্থিত।
আগ্রা পাের্ট তৎকালীন সম্রাটদের বাসভবন। প্রাচীন ঐতিহ্যে
নির্মিত উন্নতমানের পাথরে গড়া এ আগ্রা।
এখানে রয়েছে পঞ্চায়েত খানা,
সম্রাট আকবর, বাবর, হুমায়ুন এবং
বাদশা শাহজাহানের বাসভবন।
যমুনা
নদীর এক তীরে আগ্রা পোর্ট অপরতীরে সপ্তম আশ্চার্য্যের এক আশ্চার্য্য, প্রেমের
অপূর্ব নিদর্শন “তাজমহল”। ভারতীয়
সরকার আগ্রা পাের্ট থেকে কোটি কোটি
টাকা রাজস্ব পাওয়া সত্ত্বেও অবহেলায়।
প্রায় সৌন্দর্য বিলীন হবার পথেই। এ
আলীশান আগ্রা পাের্ট দেখে মনে প্রশ্নের
উদয় হলাে যে, এসব শাসকরা জনগণকে
শােষণ করে নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ
করার বর্হিপ্রকাশ আগ্রা পাের্ট। পঞ্চাশ
মিনিটের অল্প সময়ে পুরােপুরি দেখা সম্ভব
হয়নি। তবে আগ্রা পাের্টের একটি
জায়গায় আমি বেশ কিছুক্ষণ সময়
কাটিয়েছি। জায়গাটা হলো
শাহজাহান যে জায়গায় বসে জীবনের
অন্ধত্ব সময়ে শ্বেত পাথরে গড়া তাজমহলের রশ্মি দেখার বা অনুভব করতেন।
আমাদেরকে দেয়া পঞ্চাশ
মিনিট শেষ হওয়াতে আমরা আবার
গাড়ীতে উঠে গেলাম তাজমহল যাবার
উদ্দ্যেশ্যে। অল্প কিছুক্ষণ পরেই আমরা
তাজমহল-এ পৌছে গেলাম। গাড়ী
গিয়ে থামলাে তাজমহলের গেটের
সামনে।
টিকেট নিতে গিয়ে একটু বেকায়দায় পড়ে গেলাম।কাউন্টারের টিকেটের মূল্য এবং বৈষম্য
দেখে। কাউন্টারের বাইরে টিকেটের মূল্য
নির্ধারণ করে তালিকা দিয়েছে। ভারতীয়
নাগরিকের জন্য বিশ রুপি, আর বিদেশী
নাগরিকের জন্য বিশ ডলার অথবা নয়শত
ষাট রুপি। এ রকম বৈষম্যমূলক
টিকেটের মূল্য দেখে বিস্মিত হলাম।
আমরা যেহেতু বিদেশী নাগরিক তাই
আমাদের টিকেটের মূল্য হবে বিশ
ডলার। আর বিশ ডলার দিয়ে তাজমহল
দেখার সামর্থ আমাদের নেই। আমার
যেহেতু হিন্দি ভাষা জানা আছে, আমি
সাহস করে ভারতীয় লাইনে দাঁড়িয়ে
ছয়টি টিকেট নিলাম। নিয়ে গেটে
গেলাম। আমাকে জিজ্ঞেস করা হলাে-
“আপ কাহাছে আয়াহে”আমি জবাব দিলাম
ক্যালকাটাছে। আমাকে যাবার অনুমতি
দিলাে। আমি সামনের দিকে এগিয়ে
গেলাম। আমার পিছনে তিনবন্ধুর কাছ
থেকে কিছুই জিজ্ঞেস না করাতে এরাও
ভিতরে ঢুকে গেলাে। আমরা তাজমহলের
কাছাকাছি চলে গেলাম।
প্রেমের অপূর্ব নিদর্শন তাজমহল।
একজন মানুষ
তার প্রিয়কে কতটুকু ভালােবাসলে এরকম নির্দশন করতে পারে তার প্রমান তাজমহল।
বাদশা শাহজাহান
প্রিয়তমা মমতাজকে কত্তোবেশী ভালবাসতেন তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তাজমহল।
তাজমহলটি দেখলে মনে হবে
চিরনতুন, যেন গতকালই নির্মিত হয়েছে।
কিছুদুর যেতেই ভারতীয় এক দালাল
আমাদেরকে চিনে ফেলে এবং আটকে
দিয়ে বিশ ডলার দাবী করে। বিশ ডলার
দিয়ে যেহেতু টিকেট নিতে আমরা অপারগ মরা তাজমহল মনানন্দে
দেখার সুযােগ না পেয়ে এক নীরব যন্ত্রণা
বুকে চেপে আবার গাড়ীতে উঠে বসলাম।
দিল্লীর উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিলাম।
আসার
পথে ট্যুরিষ্ট বাস আমাদের নিয়ে গেলাে
হিন্দুদের তীর্থস্থান “বৃন্দাবনে”। বৃন্দাবন
জায়গাটি অনেক বড়। পাঁচ হাজার মন্দির
আছে বৃন্দাবনে। “ছয়মাস ঘুরে বৃন্দাবনের
সব মন্দির দেখা সম্ভব হবেনা” বলে
দর্শনার্থীদের মন্তব্য। বৃন্দাবনে দুই হাজার
বিধবা নারী আছে এরা উপাসনায়রত। এ
বিধবা নারীদের যাবতীয় খরচাদি বহন
করে বৃন্দাবনের পরিচালনা পরিষদ।
বৃন্দাবনের আয়তন নয়শত একর। এই
নয় শত একর জায়গা দান করেছেন
কলকাতার “সিদ্ধিসেট” নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি।
বৃন্দাবন থেকে রওনা
হলাম হিন্দুদের আর এক তীর্থস্থান
এ “মথুরা”। মথুরাতেও অনেক বড় বড় মন্দির
আছে। এসব জায়গায় হিন্দুরা পূজা
করে। মথুরা এবং বৃন্দাবন ঘুরে বুঝতে
পারলাম এখানকার মানুষ কত অভাবী।
৮ মে ৫টা ১৫ মিনিটে রাজধানী
এক্সপ্রেসে করে নিউ দিল্লী থেকে রওনা
হলাম কলকাতার উদ্দ্যেশ্যে। রাজধানী
এক্সপ্রেস ট্রেনটি সম্পূর্ণ শীতাতপ
নিয়ন্ত্রিত, খাওয়া দাওয়া সব ফ্রি। স্লিপিং
সিট, ঘুমানাের জন্য জনপ্রতি একটি
বালিশ, একটি বেডসিট, একটি কম্বল।
এক মনােরম ভদ্র পরিবেশ বিরাজমান এ
রাজধানী এক্সপ্রেস। যদিও টিকেটের দাম
একটু বেশী তারপরেও
ট্রেন।
সতের ঘন্টায় আমাদের পৌছে দিল
কলিকাতার “হাওড়া
“স্টেশনে। দীর্ঘ সতের
ঘন্টা যে ট্রেনে চড়েছি শরীরে বিন্দুমাত্র
ক্লান্তির রেশও লাগেনি। সব মিলিয়ে
রাজধানী এক্সপ্রেসের তুলনাই হয়না।
আবারাে কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রীটে
“হােটেল আমানিয়াতে” উঠলাম। আসার
সময় ১১ মে তারিখের শ্যামলী চেয়ার কোচের টিকেট নিলাম। শ্যামলী কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত। আমরা
যেহেতু পরের সকালে রওনা দেব
একদিন সময় মেলাতে আমরা কলকাতা
চিড়িয়াখানা, পাতালপুরী রেলষ্টেশন
টমটম গাড়ী এবং বিভিন্ন শপিং মার্কে
ঘুরেছি।
লন্ডন প্রবাসী আলী দাও সাথে ছিলেন।
আলী দা কলিকাতা থেকে ঢাকা আসবেন,
ঢাকা থেকে লন্ডন চলে যাবেন। তার
ফ্লাইটের তারিখ ১৪ মে। তার আরো
তিনদিন কলকাতায় থাকতে হবে। আলী
দা খুব ভালাে এবং মজার মানুষ।দিল্লি
থেকে কলকাতা আসার সময় রাজধানী
এক্সপ্রেসের সতের ঘন্টার
ভ্ৰমণে দেড়শতের উপর আমাদেরকে গান
শুনিয়েছে। গলাটা খুব সুন্দর। ভাটিয়ালী
আঞ্চলিক, রবীন্দ্র, এবং আধুনিক গানে
সমান দখল রয়েছে তার। আমরা যেহেতু
পরের দিন চলে আসবাে আলীদাকে
ফেলে তার মনটা খুব খারাপ। তার
জন্য আমাদের মনটাও খারাপ।…..
এখনাে ……।
গাছে পানি দিচ্ছিলাম। ভাবছিলাম, অনেকটা সময় তো ঘরে ছিলাম। এভাবে আর কত দিন যে কাটাতে হবে! পরিস্থিতি সামনে কী আকার ধারণ করবে, ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছি না।এত দিন করোনা নিয়ে সবকিছু ভুলে ছিলাম। যেদিন থেকে লকডাউন শুরু হলো, সেদিন থেকে বাড়ি পরিষ্কার করা শুরু করলাম। পুরো বাসা একদম ঝকঝকে–তকতকে করে ফেলেছি। করোনাকে ভুলে থাকতে নিজের কাজে ব্যস্ত রেখেছি। ভয়াবহ পরিস্থিতি মনে করতে চাইনি। ঘরবাড়িও এত দিনে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করে ফেলেছি। বাসা গোছানোর সব কাজও শেষ। কিছুদিন ধরে করোনা মনের মধ্যে উঁকিঝুঁকি মারছে। ভাবার সময় পাচ্ছি।
চারদিকের খবর শুনে মন খারাপ হয়। ভাবি, এটার শেষ কোথায়। যদি বুঝতাম ৩-৬ মাস এভাবে থাকতে হবে, তাহলেও আশ্বস্ত হতাম। এটাও ভাবি, আমি হয়তো অনেক ভালো আছি। আমরা ভালো আছি। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ কি ভালো আছে? দিন আনে দিন খাওয়া মানুষের কথা ভেবে কষ্টটা পাই বেশি। অনেকেরই আয় বন্ধ হয়ে গেছে, ভাবলেই মাথাটা নষ্ট হয়ে যায়।
করোনা নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলছেন। বলছেন ভাইরাসের যুদ্ধ। যেটাই হোক, যেভাবেই হোক—প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। আমরা মানুষেরা প্রকৃতিকে নষ্ট করে ফেলেছি। সারা পৃথিবীতে দূষণ করেছি—দায়ী আমরা মানুষেরা। আমরা স্বার্থপরের মতো নিজেকেই ভালোবাসি। ফুল, পাখি, গাছপালা, প্রকৃতি, পশুসহ অন্যদের কথা ভাবতে চাই না। শুধু মানুষের কারণে অনেক প্রজাতি পৃথিবী থেকে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বায়ুবাহিত অনেক রোগ বাড়ছে।
অথচ পৃথিবী লকডাউন পরিস্থিতিতে চলে যাওয়ার পর বাতাসে কার্বন নিঃসরণ কমে গেছে। পশুপাখি ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রকৃতি হাসছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হচ্ছে, এত বেশি পাপ করেছি, তাই পৃথিবী নিজের মতো রিসেট করে নিচ্ছে। পৃথিবীটা ভার হয়ে গেছে। আমরা গভীরভাবে তা ভাবিনি।
প্রভাব, প্রতিপত্তি, দাপট এগুলো আসলে কিছু না—করোনা তা ভাবতে শেখাচ্ছে। এটা চোখে আঙুল দিয়ে শেখাচ্ছে, মানুষের যত প্রয়োজন বাড়ছে, চাহিদা বাড়ছে—মানুষ তত বেশি অসচেতন হচ্ছে, সবকিছুর সঙ্গে আপস করছে। করোনায় জীবনকে যেভাবে দেখছি, অন্য সময় এভাবে কখনো দেখিনি, ভাবিনি, হয়তো ভাবতামও না। শুধু জীবন না, জীবনে জড়িয়ে অনেক ক্ষুদ্র বিষয়কেও বড় করে দেখার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাঁচার জন্য আমরা সবাই দৌড়াতাম, সেই দৌড় এখন অনেকটাই থেমে গেছে।
একটা কথা বলতে চাই, এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে নিজেদেরই নিজেদের সহযোগিতা করতে হবে। করোনা আক্রান্ত হলে কেউ কাউকে বাঁচাতে পারবে না। আমাদের নিজেদেরই সচেতনতা বাড়াতে হবে। নতুন রোগী যাতে না বাড়ে, এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বেশি বেশি পরীক্ষা করতে হবে। কোথায়, কীভাবে করোনা ছড়াচ্ছে, সেটাও চিহ্নিত করতে হবে। ওসব এলাকায় সচেতনতার জন্য বেশি বেশি প্রচারণা চালাতে হবে।
এই সংকটের সময়ে যার যতটা সামর্থ্য আছে, সেভাবে সহযোগিতা করতে হবে। সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছে, সেটা সবাইকে মেনে চলতে হবে। ঘরে থেকে এই ভাইরাস থেকে নিজেকে দূরে রাখো। এর বিকল্প তো আমরা কিছুই জানি না। সচেতন মানুষ হিসেবে যেটা বুঝতে পারছি, নিয়ম যাঁরা মানছেন, তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন না। ভাবতে পারিনি, জীবিত অবস্থায় এমন কিছু দেখব। আরও ভাবতে ভয় লাগছে, আমাদের পরের প্রজন্মের জন্য কী অপেক্ষা করছে। আমরা তো পৃথিবীতে অনেক ভালোভাবে ছিলাম। কল্পনাও করতে পারিনি এমন দিন দেখতে হবে! এটা যুদ্ধের চেয়ে কোনো অংশে কম না। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ তো বটেই। মানুষের সঙ্গে এটা অদৃশ্য শক্তির যুদ্ধ, যা খালি চোখে কেউ দেখতে পারছি না। মানবিকতার শিক্ষাও দিয়ে যাচ্ছে।
সালমানের সাথে বড় পর্দায় দেখা গিয়েছে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে। সালমান খানের সাথে কিক ও রেস থ্রিতে দেখা যায় এই অভিনেত্রীকে। তাদের পরপর দুটি সিনেমায় বক্স অফিসে সাফল্যও পায়। তবে, জ্যাকলিন এবার মুখ খুললেন সালমান খানকে নিয়ে।ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জ্যাকলিন বলেন, বিগ বসের সেট হোক কিংবা সিনেমার শ্যুটিংয়ের সেট, সালমান একজন কাজ পাগল মানুষ। যেকোনো সময়, যে কোনো পরিস্থিতিতে কাজ করতে ভালবাসেন তিনি।
অভিনেত্রী আরো বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সালমান কখনো বিশ্রাম নেন না। এমনকি, ভোরবেলা হোক কিংবা মাঝ রাতে সমানভাবে কাজ করে যান বলিউড ভাইজান। তাই সালমানকে এবার কিছুটা বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন জ্যাকলিন।
যদিও জ্যাকলিনের এই মন্তব্য শুনে পালটা কোনো মন্তব্য এখনো করেননি বলিউড ভাইজান।