নতুন রাজনৈতিক দল লাভ বাংলাদেশ পার্টির আত্মপ্রকাশ।
লাভ বাংলাদেশ পার্টির প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমলাপুর ইর্স্টান কমপ্লেক্স ঢাকার নিজস্ব কার্যলায়ে বিকালে পরিবর্তনের প্রত্যায় নিয়ে লাভ বাংলাদেশ পার্টির আত্মপ্রকাশ হয়।
বিগত (১৫ মে) রবিবার পার্টি অফিসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক দল ঘোষণা করেন পার্টির প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান চৌধুরী।
লাভ বাংলাদেশ পার্টির ইশতেহার পাঠ করেন প্রফেসর ড. আমিন আহমেদ চৌধুরী।
ইশতেহারে লিখিত বক্তব্যে গনমাধ্যমকে তিনি বলেন, দেখতে দেখতে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ ৫০ বছর অতিক্রম করছে।
বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক নব্য উপনিবেশবাদী আর আঞ্চলিক আধিপত্যবাদীদের শোষ ক্ষেত্র।স্বাধীনতা উত্তর বিগত ৫০ বছরের শেষে বাংলাদেশের অর্জন কি? এক কথায় নির্মম গণশোষণ।
মহান নেতা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন “এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম”।
এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে স্বাধীনতা
অর্জিত হয়েছে, শোষিত বিশাল জনগোষ্ঠীর মুক্তি অর্জিত হয়নি।
আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখন্ডতার প্রতি শর্তহীন আনুগত্য, জাতীয় সংবিধানের প্রতি অবিচল আস্থা, বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রতি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অকৃত্রিম ভালবাসা, তাদের সার্বিক মুক্তি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। আর তা করতে যেয়ে বর্তমান রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে পথ চলবো।
কি চায় লাভ বাংলাদেশ?
১) রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন থেকে মুক্তি
২) অর্থনৈতিক শোষণ থেকে মুক্তি
৩) সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে মুক্তি
একটু বিশদভাবে বলতে গেলে
*বুদ্ধির আড়ষ্টতা অর্থাৎ পোড়ামী থেকে মুক্তি,
*মানবিক (মানবতার) অসাম্য থেকে মুক্তি,
*সামাজিক অবিচার অনাচার থেকে মুক্তি,
*অসার শিক্ষা থেকে মুক্তি (শিক্ষিত মানুষ যখন রাষ্ট্রের প্রতি নিজের অধিকার কর্তব্য ও দায়িত্ববোধ বিস্মৃত হয়ে বাগাড়ম্বর সর্বস্ব রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকে প্রতিরোধ না করে সমর্থন দেয় তখন তাকে অশিক্ষা বলতেই হয়)।
*খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা থেকে মুক্তি,
*স্বাস্থ্যসেবার অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি,
*অপউন্নয়ন বা অসম উন্নয়ন থেকে মুক্তি ( যে উন্নয়নের ফলে গ্রামীণ জনগণ জীবনধারণ উপযোগী খাদ্যের অভাবে বণ্যার স্রোতের মত শহরে এসতে বাধ্য হয় তাকে অপ বা অসম উন্নয়ন বলা ভিন্ন গত্যন্তর নেই),
*বিচারহীনতা থেকে মুক্তি (আমরা প্রতিদিন বিচারহীনতার অভিশাপে জনজীবন বিপর্যস্ত হিতে দেখছি),
শিক্ষিত লোকেরাই দুর্নীতি তথা ঘুষ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, গুম, সতীর্থ খুন, অন্যের সম্পদ জবরদখল, রাষ্ট্রীয় ধনভাণ্ডার লুট, জনগণের আমানতের গসংরক্ষক ব্যাংককে দেউলিয়া করা, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েই জাতীয় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখন্ডতার বিরোধী কর্মকাণ্ড করছে। বাংলাদেশে অর্থ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা থাকলেই এসব করা এখন বাধাহীন। এজন্য শাস্তি দেওয়া অসম্ভব।
*ক্ষুধা থেকে মুক্তি (ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট অর্থবিত্তের লোভে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্য অতিরিক্ত বৃদ্ধি করে জনজীবনে দুর্ভোগ ও মৃত্যু নিশ্চিত করছে),
*নির্লজ্জ দলীয়করণ থেকে মুক্তি,
*পরিবেশ দুষণ তথা বন ধংশ, নদী দখল ও দুষণ, বায়ু দুষণ থেকে মুক্তি,
*রাষ্ট্রের অনাবিষ্কৃত খণিজ সম্পদ আবিষ্কারের জন্য দেশীয় জনবল থাকা এবং প্রযুক্তি আমদানির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শুধু কমিশন বাবদ বিপুল অর্থ পাওয়ার সুযোগ নেওয়ার জন্য। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্ধক দেওয়া থেকে মুক্তি।
বাংলাদেশের প্রতি ভালবাসা থেকেই “লাভ বাংলাদেশ” সংগঠনের উৎপত্তি। দেশের সর্বস্তরের জনগণের সাথে দীর্ঘদিনের নিরবিচ্ছিন্ন আলাপ আলোচনা শেষে তাদের একান্ত তাগিদেই “লাভ বাংলাদেশ পার্টি” গঠন করা হয়।
ভালবাসার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কেয়ার নেওয়া। বাংলাদেশকে ভালবাসি কিন্তু তার উন্নতির দিকে খেয়াল নেইনা এমন হলে তাকে ভালবাসা বলা যাবেনা।
আবার কেয়ার নেই কিন্তু স্থান-কাল-পাত্র বিশেষে সুবিচার করিনা তাহলে সে কেয়ারকে সঠিক কেয়ার নেওয়া বলা যায়না।
লাভ বাংলাদেশ এর নেতা ও কর্মীরা এ আদর্শ উউজ্জীবিত যাতে সাধারণ মানুষকে ভালবাসে, তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা জেনে তাদের প্রতি যতœশীল হয়। জনগণের প্রতি যতœশীল হওয়া মানে তাদের জীবন প্রয়াস সহজতর করায়, জীবন্যাত্রার মান উন্নত করায় অবদান রাখে। তারা জানে অবশ্যই সব শ্রেণিয়র মানুষের প্রতি সুবিচার করতে হবে। আর এই সুবিচার করার ক্ষেত্রে জনগণের প্রতি মমত্ববোধ থাকতে হবে।
গণতন্ত্র বলতে কি শুধুই রাষ্ট্রের নাগরিকদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার? নাকি আরও কিছু? যদি আরও কিছু হয় তবে কি সেই আরও কিছু? তা বিভিন্ন ধরণের অধিকার প্রাপ্তির জন্য সচেষ্ট হও্যা এবং নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন।
*রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতদের গনবিরোধী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করার অধিকার,
*অধিকাংশ জনগণ কোন মতে বিশ্বাস করে বলেই সেই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে না দিয়ে নিজস্ব মত প্রকাশ ও তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদানের অধিকার,
*রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের সমালোচনা করার অধিকার
*সংবিধানে স্বীকৃত জনগণের খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা শ্বাস্থ্য ইত্যাদি অধিকার
*জাতীয় সংবিধানে স্বীকৃত সংগবদ্ধ হওয়ার অধিকার। কেন এজন্য সরকার থেকে নিবন্ধন নিতে হবে? আর যদি লাগেই কেন তা আপনা আপনি হবেনা?
গণতন্ত্র তখনই কার্যকরী যখন জনগণ জানে রাষ্ট্রের প্রতি তার অধিকারসমূহ, তার দায়িত্ব ও কর্তব্য৷ যেমনি তার অধিকার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিতে রাষ্ট্র বাধ্য তেমনি এটাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব জনগ্ণকে তার দায়িত্ব পালন ও কর্তব্য সম্পাদনে সচেতন করে তোলা। যে রাজনৈতিক দল এসব করেনা বুঝতে হবে তার উদ্দেশ্য শুভ নয়। তারা চায় জনগণকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে নিজের অর্থ-বিত্ত সম্পদ আকাশচুম্বি করা। লাভ বাংলাদেশ পার্টি তার প্রতিটি জনসভায় জনগণকে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক বিষয়ে সচেতন করে তুলবে।
জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার কি এটাই যে তারা অবাধে নিজেদের ভোট দিতে পারবে এবং নিজের পছন্দ প্রার্থীকেই দিতে পারবে? যদি একজন ভোটার প্রর্থী নির্বাচনে মন্দের মধ্যে তুলনামুল
তুলনামুলকভাবে ভাল ব্যক্তিকে ভোট দিতে বাধ্য হয় (বাধ্য বলছি কারণ কোন জনগণের কল্যানকামী প্রার্থী না থাকে) তবে তা গণতন্ত্রের জন্য ভাল লক্ষণ নয়। জাতীয় নির্বাচনে দেশ ও জনগণের কল্যানকামী ব্যক্তিকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে সুযোগ সুবিধার নিশ্চয়তা না থাকলে তা কার্যকরী গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক নয়। স্বদেশ স্বজাতির কল্যাণ বিধানে কার্যকরী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা, প্রশিক্ষিত করা রাজনৈতিক দলের অন্যতম দায়িত্ব। লাভ বাংলাদেশ এ দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর।
উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জোবাইদা কাদের চৌধুরী, অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, অধ্যাপক এমএ বার্নিক, এটিএম রফিকুল ইসলাম, চৌধুরী আনিসুর রহমান, প্রফেসর আফজাল হোসেন, অধ্যাপক ইউসুফ আলী, আতাউল্লাহ খান,কফিল মাহমুদসহ, শহীদুল করিম শহীদ,অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সহ শতাধিক নেতৃবৃন্দ।
উক্ত অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ দেশের জনগণের অর্থনৈতিক শোষণ, দুর্বৃত্তায়ন, লুন্ঠন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে যাবার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, শ্রীলঙ্কার নেতারা এখন যেভাবে পালাচ্ছে, বিএনপির নেতারা সেভাবে আগেই পালিয়ে গেছে। তারেক রহমান ‘আমি আর রাজনীতি করবো না’ মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। ঢাকায় তাদের নেতা মাহবুবুর রহমানকে তাদের দলের নেতাকর্মী ও সাধারন জনগণ ধাওয়া করেছিল, জুতা নিক্ষেপ করেছিল। ৮০ সালে জিয়াউর রহমান যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যান তখন তাকেও জুতা নিক্ষেপ করেছিল। এখন নিজেরা কিভাবে পালাবেন সেটির পথ খুঁজুন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভীসহ বিএনপি নেতারা পদ্মা নদীর ওপারে কীভাবে যাবেন- তা দেখার অপেক্ষায় আছি। তারা কি গাড়িতে চড়ে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যাবেন, নাকি আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়ে ওপারে যাবেন- সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শনিবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সরকার যখন পদ্মা সেতু করছিল, তখন বিএনপি দেশে গুজব ছড়িয়ে ছিলো যে পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে। তাদের গুজব সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, এতে অনেক নিরীহ মানুষ মারা যায়। সরকার যখন ভারত থেকে করোনা টিকা নিয়ে এসে দেশের মানুষকে দেয়া শুরু করলো। তখন বিএনপি গুজব ছড়ালো টিকা কাজ করেনা। রিজভী সাহেব বক্তব্য দিলেন, আমাদের করোনা টিকা অকেজো। পরে তিনি লুকিয়ে টিকা নিয়েছিলেন। আমাদের চট্টগ্রামের ডা. জাফরুল্লাহও বলেছিলেন টিকা নিয়ে। পরে তিনিও লজ্জা ভেঙে টিকা নেন এবং বলেন, আমার আরাম লাগছে।
তিনি বলেন, যারা শ্রীলঙ্কার তুলনা বাংলাদেশে দেয়, তারা অনেক আগেই শ্রীলঙ্কার মতো পালিয়েছিলেন। কেননা আজকের শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিতে তারাও পড়েছিলেন। তাই তারা এসব কথা বলছেন। তারেক জিয়া বাংলাদেশে মুচলেকা দিয়ে আর রাজনীতি করবে না বলে চলে গিয়েছিল। কিন্তু এখনও রাজনীতি করছে। তাদের যদি লজ্জা থাকে। তাহলে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তৃণমূল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণ। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতারাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ঠিকিয়ে রেখেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে নানা সমস্যা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অনেক নেতা দ্বিধান্বিত ও বিচলিত হয়েছে, অনেক নেতা দল ত্যাগ করেছে, মূল নেতৃত্বের সাথে বেঈমানি করেছে। কিন্তু তৃণমূল কখনো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে বেঈমানী করে নাই। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সবসময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ঠিকিয়ে রেখেছে।
তিনি বলেন, আমরা আজকে প্রায় সাড়ে ১৩ বছর ক্ষমতায়, সাড়ে ১৩ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের অনেকের মধ্যে আলস্য এসেছে। দলের মধ্যে সুবিধাবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আজকে আমাদেরকে ভাবতে হবে আমরা কিভাবে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবো। আমি দেখতে পায় নেতা আসলে বিপুল স্লোগান হয়, সেলফি তোলার জন্য প্রতিযোগিতা হয়, কিন্তু সেই ছবি তুলে শুধু ফেসবুকে দেয়া ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য কাজ করতে আমি দেখিনা।
নিজেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মাইকিং করা কর্মী উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রায় ৭ কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিরূপ সমালোচনা হয় তখন সেটার প্রতিবাদে আমাদের নেতা-কর্মীদের যেভাবে সরব হওয়া দরকার সেটি হতে দেখিনা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড গুলো তুলে ধরার জন্য তরুণ নেতাদের অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গ্রামীণ জনপদে অনেক রাস্তাঘাট-কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে। সেখানে ১৩ বছর আগে কি ছিল, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কারণে কি হয়েছে, সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায়
তৃণমূলের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের ধর্ম সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সংসদের চীপ হুইপ আবু সাঈদ মাহমুদ স্বপন ও সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও ওয়াসিকা আয়েশা খান প্রমুখ।
কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) দুর্দিন চলছে।দলের পরীক্ষিত নেতারা অলি আহমদকে ছেড়ে একে একে চলে যাচ্ছেন অন্য দলে।
এবার দল থেকে শতাধিক নেতা পদত্যাগ করেছেন। দলের এমন অবস্থার জন্য নেতাকর্মীরা অলি আহমদকেই দায়ী করছেন।এর আগে এলডিপির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেনে সেলিম সহ দলের বড় একটি অংশ অলি আহমদকে ছেড়ে গেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ই মে) দলটির সহসভাপতি ড. আবু জাফর সিদ্দিকী ও যুগ্ম মহাসচিব তমিজ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শতাধিক নেতার পদত্যাগের বিষয়টি জানা যায়।
পদত্যাগকারী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সহসভাপতি ড. আবু জাফর সিদ্দিকী, উপদেষ্টা পুষ্টিবিদ ফরিদ আমিন, যুগ্ম মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মো. ইব্রাহিম রওনক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি এএসএম মহিউদ্দিন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. আফজাল হোসেন মোর্শেদ, যুববিষয়ক সম্পাদক শফিউল বারী রাজু, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক লস্কর হারুনুর রশিদ, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন মণ্ডল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমরান, গণতান্ত্রিক যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বাবু, সদস্য সচিব মোহাম্মদ ফয়সাল ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম হোসেন পাঠান বিপ্লব, কাজী কামরুল হাসান, জাহাঙ্গীর আল সানি, হারুন অর রশিদ, ইউনুস বেপারি, রেজওয়ানুল ইফতেখারসহ ১০০ জন, গণতান্ত্রিক ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা বদরুদ্দোজা, সদস্য সচিব মাওলানা আবদুল হাই নোমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আসাদুল্লাহ, মাওলানা শিহাব উদ্দিন, মাওলানা আনোয়ার হোসাইনসহ ২৩ জন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হকসহ এলডিপির ২১ জন্য সাধারণ সদস্য।
এ বিষয়ে পদত্যাগকারী এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব তমিজ উদ্দিন জানান, জাতীয়তাবাদী ঘরানার রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি হচ্ছে এই চেতনার সূতিকাগার। কিন্তু মতের অমিলের কারণে বিএনপির নেতৃত্বের প্রতি নিয়মিত বিষোদ্গার অলি আহমদের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে নতুন একটি জোট গঠনের প্রচেষ্টা করছেন, যা স্পষ্টত জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি প্রশ্নবিদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, যখন দেখি তারই মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ পুলিশের মিথ্যা মামলায় কারাগারে, তখন তিনি (অলি আহমদ) প্রমোদভ্রমণে। একটি দলের সভাপতি হিসেবে এর চেয়ে ‘আত্মঅহমিকা’ আর কী হতে পারে। ফলে অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপির নির্বাহী কমিটি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের কমিটি থেকে আমরা গণপদত্যাগ করেছি। ভবিষ্যতে এ দলটির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। দলটির যে কোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা থাকবে না।
অন্য কোনো দলে তারা যোগ দেবেন কিনা জানতে চাইলে তমিজ উদ্দিন বলেন, আজ বিকালে আমাদের একটা বৈঠক রয়েছে। সেখানে সব সিদ্ধান্ত হবে।
এই সার্চ কমিটি দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন সম্ভব না-চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় মাহবুবের রহমান শামীম।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, কোন সার্চ কমিটিতে কাজ হবে না। আগামীর নির্বাচন কার অধীনে হবে সেটা ঠিক করবে বাংলাদেশের জনগণ। এই সার্চ কমিটিতে যারা আছেন তারা সবাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। এদের দিয়ে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে না। এই সার্চ কমিটি আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করবে। তারা যে লোকদের নাম বলবে তারাও আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করবে।
আজ মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আওতাধীন উপজেলা-পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য সচিবদের সাথে সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী দিনে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে বিএনপির নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যে আন্দোলন গড়ে তুলবে, সেই আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রের ধারায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। আজকে গণতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে ফ্যাসিবাদ এই সরকারের মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। গণতন্ত্র রক্ষায় বেগম খালেদা জিয়ার যে অবদান তার স্বীকৃতি হিসেবে কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গাইনাইজেশন (সিএইচআরআইও) খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে। এতে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক, বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে, নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তাই অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিংশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ খানের পরিচালক বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার ও হারুন অর রশিদ হারুন।
এসময় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, নুরুল আনোয়ার চৌধুরী, এস এম মামুন মিয়া, নাজমুল মোস্তাফা আমিন, জামাল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, খোরশেদ আলম, হাজ্বী মো. রফিক, নুরুল কবির, মঈনুল আলম ছোটন, মফজল আহমদ চৌধুরী, লায়ন হেলাল উদ্দীন, ইছহাক চৌধুরী, আ.ক.ম মোজাম্মেল, মাহবুবুল আলম চৌধুরী, মাস্টার লোকমান হোসেন, রাসেল ইকবাল মিয়া, মো. কামাল উদ্দীন, এ.এম কামাল উদ্দীন, সাজ্জাদ হোসেন, নুরুল ইসলাম সওদাগর।
বাকলিয়ায়_ছাত্রলীগের_প্রতিবাদ_সমাবেশ
সারাদেশব্যাপী উগ্রবাদী হেফাজতের জঙ্গী হামলায় সাধারণ মানুষকে হত্যা, রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা,অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের বিরুদ্ধে ১৯ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বাকলিয়া ছাত্রলীগের উদ্যেগে ১৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি গোলামুর রহমান চৌধুরী রিজানের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ১৯ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বাকলিয়ার সম্মানিত কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়া, চট্রগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাবেক শ্রম ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বখতেয়ার ফারুক, বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযুদ্ধ লীগ,চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আবু মনসুর,সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল হাশেম, চট্রগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক কায়ছার আহমেদ রাজু, সদস্য মোঃ সালাউদ্দীন , মোঃ নয়ন বাকলিয়া থানা ছাত্রলীগের আহবায়ক মিজানুর রহমান, যুগ্ম-আহবায়ক আনিসুল ইসলাম আজাদ সহ নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তারা হেফাজত ইসলামের নারকীয় তান্ডব লীলার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।আগামীতে হেফাজত ইসলামে যদি কোন রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ পরিচালিত করে ছাত্রলীগের কর্মীরা রাজপথেই তা প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গঠনমূলক সমালোচনা হচ্ছে ‘বিউটি অব ডেমোক্রেসি’ টেলিভিশনের টক-শোগুলো শুনুন, সেখানে সরকারকে কি ভাষায় সমালোচনা করা হয়। আমরা মনে করি এই সমালোচনা থাকতে হবে। সমালোচনা না থাকলে গণতন্ত্র নষ্ট হয়, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নষ্ট হয়।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গঠনমূলক সমালোচনা হচ্ছে বিউটি অব ডেমোক্রেসি এবং সেই সমালোচনাকে সমাদৃত করার মানসিকতা থাকতে হয়। তিনি বলেন, এখন দেখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকাল বেলা কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন, আবার সেটার সাথে প্রতিযোগিতা করে দুপুরে রিজভী আহমেদ আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করে আরো কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন। পাশাপাশি প্রেস ক্লাবে গিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কিংবা অন্য কেউ আরেকবার বক্তৃতা দিয়ে বলেন, আমাদের কথা বলার কোন অধিকার নাই। বিএনপি নেতারা সারাদিন সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে সন্ধ্যায় বলেন আমাদের কথা বলার অধিকার নেই।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ন সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান ও কলিম সরওয়ার, সহসভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, বিএফইউজে’র সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করেন। আমি যখন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম, তখন যেই পত্রিকা ব্যঙ্গ করে আমার কার্টুন ছাপিয়েছিল প্রথম পাতায়, সেই পত্রিকাকে জাতীয় পরিবেশ পদক দেয়ার জন্য আমি নিজেই নাম প্রস্তাব করেছিলাম এবং তারা পেয়েছিল। কারণ আমরা মনে করি দায়িত্বে থাকলে সমালোচনা হবে এবং সেই সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের থাকতে হয়। না হয় বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে না। তিনি বলেন, অনেক সমালোচনা হচ্ছে, রাত বারটার পরে যদি টক-শো শোনেন, সবগুলো টক-শো যদি কারো উপসংহারে আসে তাহলে মনে হবে দেশে কোন কিছুই হচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবতাটা হচ্ছে ব্লুমবার্গ করোনা নিয়ে যেই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে বলছে করোনা মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় সবগুলো দেশের উপরে বাংলাদেশের অবস্থান এবং পুরো পৃথিবীতে বাংলাদেশের অবস্থান ২০ তম। জনবহুল বাংলাদেশে মানুষের ঘনত্ব পৃথিবীতে সর্বোচ্চ, মাথাপিছু কৃষি জমির পরিমাণ পৃথিবীতে সর্বনিম্ন। যখন ভালো কাজের প্রশংসা হয় না অহেতুক সমালোচনা হয়, তখন কিন্তু যারা ভালো কাজ করেন তারা হতাশ হন। তখন মানুষ ভালো কাজ করার জন্য উৎসাহিত হন না। অবশ্যই সমালোচনা হবে, সমালোচনা থাকবে, এটির পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও দরকার। না হয় রাষ্ট্র সমাজ এগুবে না – বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যম হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। রাষ্ট্রের যদি কোন একটি স্তম্ভ সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে রাষ্ট্রের ভিত নষ্ট হয়ে যায়। এটি মাথায় রেখে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের সাথে যুক্তরা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন এবং স্বাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করতে পারেন সেক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন। তিনি বলেন, করোনাকালে সবকিছু যখন বন্ধ হয়ে গেছে তখন সাংবাদিকদের কলম বন্ধ হয়নি। আমরা লক্ষ্য করেছি দেশে কিংবা পৃথিবীতে যখন কোন সঙ্কটময় পরিস্থিতি তৈরি হয় তখন একটি মহল সেটিকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে সমাজের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করা যায়, ভয়ভীতির সঞ্চার করা যায়, গুজব রটিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে সমাজে অস্থিরতা তৈরি করা যায় সেজন্য ওঁৎ পেতে থাকে। এই করোনাকালের শুরুতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু যাতে গুজব রটাতে না পারে ও মিথ্যা সংবাদের মাধ্যমে সমাজে অস্থিরতা তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে মূলধারার গণমাধ্যমগুলো অত্যন্ত যত্নশীল ছিল এবং কঠোরভাবে কাজ করেছে। এ কারণে এই করোনাকালে গুজব কিংবা মিথ্যা সংবাদ খুব বেশি কাজে আসেনি। এজন্য গণমাধ্যমের সাথে যুক্তদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তারা বলেছে, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর ২৮ তম অর্থনীতির দেশ, ২০৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর ২৫ তম অর্থনীতির দেশ। পৃথিবীর মাত্র ২২টি দেশ করোনাকালে পজিটিভ জিডিপি গ্রোথ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান উপরের দিকে। এই পরিসংখ্যানগুলো জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। কারণ আশাহীন জাতি এগুতে পারে না। কোন জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সেই জাতির মধ্যে আশা থাকতে হয়। জাতিকে আশান্বিত করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। দেশ সম্পর্কে ভালো রিপোর্টিং হয়, পৃথিবীতে পরিবেশিত হয়। সেগুলো জনগণকে জানানো আমাদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, দেশকে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার এবং সেই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাংবাদিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। স্বাধিকার আদায়, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও দেশ গঠনে ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা যেভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রেও সাংবাদিকরা বলিষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ২০৪১ সাল নাগাদ দেশকে যদি আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ রচনা করতে চাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখানেও সাংবাদিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সব মানুষের কল্যাণেই চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সব দলমতের মানুষের প্রয়োজনে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে, এটি থাকা বাঞ্চনীয়। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে রাজনীতি থাকতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক দলাদলির ছোঁয়া চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে লাগেনি। এজন্য আমি প্রেস ক্লাবের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। সব জায়গায় রাজনীতিকে এনে সেখানে নিজেদের মধ্যে প্রকট বিভাজন তৈরী করাও সমীচিন নয়। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে আমার বহু দিনের জানাশোনা এবং হৃদয়ের সম্পর্ক। আমার হৃদয়ে আপনাদের স্থান সবসময় ছিল এবং থাকবে, আমি আশা করবো আপনাদের হৃদয়েও আমাকে স্থান দেবেন – সেই আবেদনটুকু রাখলাম -বলেন তথ্যমন্ত্রী।
প্রফেসর সেলিম উদ্দীন-
এপ্রিল ১৯১৫ সালে ইংল্যান্ড, রাশিয়া, নিউজিল্যান্ড, অস্টেলিয়া, ফ্রান্স সম্মিলিভাবে ইস্তাম্বুল দখলের জন্য তুরস্ক আক্রমন করে। ইতিহাসে এ যুদ্ধ গ্যালিপ্ললি অভিযান নামে পরিচিত। আট মাস ধরে এই যুদ্ধ চলে।মিত্র বাহিনীর হাতে মার খেলেও এক পর্যায়ে যুদ্ধে মিত্র বাহিনী পরাজিত হয়।পরাজিত মিত্র বাহিনীর প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার সৈন্য নিহত হয়। কিন্তু বিজয়ী হলেও অটোমানদেরও প্রায় একই পরিমাণ সৈন্য নিহত হয়।মিত্র বাহিনী চেয়েছিল ইস্তানবুল দখল করতে পারলে ব্লাক সি এবং দারদেনালস স্টেট এবং মর্মর সাগরের এর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এবং এই দারদেনালস স্টেট দখল করতে পারলে রাশিয়ার নেভিকে সরাসরি নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। তাই সর্ব শক্তি দিয়ে মিত্র শক্তি তুরস্ক আক্রমন করে।এই গ্যালিপ্ললি অভিযান মিএ শক্তির জন্য একটি বড় বিপর্যয় হয়।
এটিই ছিল প্রথম মহাযুদ্ধে মুসলমানদের একমাত্র বিজয়।
এ যুদ্ধে ওসমানীয়দের পক্ষে নেতৃত্ব দেন যে জেনারেল তিনি অসম্ভব বিখ্যাত হয়ে যান। তার নাম মোস্তফা কামাল পাশা । যিনি পরে খলিফা আব্দুল মজিদকে হটিয়ে খেলাফত এর অবসান ঘটান এবং তুরস্কের ক্ষমতা দখল করে আতারতুক (জাতির পিতা) উপাধি গ্রহণ করেন। মোস্তফা কামাল এর উত্থানের মাধ্যমে হযরত আবু বকর (রাঃ) থেকে শুরু হওয়া খেলাফাত এর অবসান ঘটে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আতাতুর্ক একজন সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয় সাম্রাজ্যের পরাজয়ের পর তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি তুর্কি জাতীয় আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। আঙ্কারায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর মাধ্যমে তিনি মিত্রশক্তির প্রেরিত বাহিনীকে পরাজিত করেন। তার সামরিক অভিযানের ফলে তুরস্ক স্বাধীনতা লাভ করে। আতাতুর্ক এরপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেন। সাবেক উসমানীয় সাম্রাজ্যকে একটি আধুনিক, পশ্চিমা ও ধর্মনিরপেক্ষ জাতিরাষ্ট্রে রূপান্তর এই সংস্কারের উদ্দেশ্য ছিল। আতাতুর্কের সংস্কার আন্দোলনের মূলনীতির উপর আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠিত। তার মতবাদ কামালবাদ নামে পরিচিত।
ক্ষমতা দখল করে মোস্তফা কামাল ইসলামের বিরুদ্ধে চরম রুদ্র মূর্তি ধারন করেন। তুরস্ককে প্রজাতন্ত্র ঘোষণার পর একে আধুনিকীকরণের নামে কামাল পাশা সুবিধামত পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করে। নতুন সরকার ফ্রান্স, সুইডের ও সুইজারল্যান্ডের মত ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর প্রতিষ্ঠান ও সংবিধানগুলো পর্যালোচনা করে সেগুলোকে তুরস্কের জন্য গ্রহণ করে। কামালের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অনবহিত হওয়ায় জনগণ “আমরা প্রথম খলিফাদের দিনে ফিরে যাচ্ছি” বলে উল্লাস করে। কিন্তু জনগণ তখনো মোস্তফা কামালের আসল রূপ দেখেনি। খেলাফতের চিন্তাভাবনা ও এর নূনতম গন্ধও যাতে পরে খুঁজে পাওয়া না যায় সেজন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে রাতারাতি সম্পূর্ণ বদলে ফেলা হয়। সেক্যুলার স্কুল চালু করা হয়।
১৯২৩ সালে তুরস্কে তিনটি ধারার শিক্ষাব্যবস্থা ছিল। তার মধ্যে মাদরাসা ব্যবস্থা যা আরবি, কুরআন এসবের উপর পরিচালিত, তা বহুল প্রচলিত ছিল। দ্বিতীয় ধরনের প্রতিষ্ঠান ছিল ইদাদি ও সুলতানি। এগুলো তানযিমাত যুগে প্রতিষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ হল কলেজ ও বিদেশী ভাষার সংখ্যালঘু বিদ্যালয়। এখানে ছাত্রদেরকে শিক্ষাদানের জন্য আধুনিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হত। পুরনো মাদরাসা ব্যবস্থা আধুনিক করা হয। মোস্তফা কামাল প্রথাগত ইসলামিক শিক্ষাপদ্ধতিকে পরিবর্তন করেন। শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারকে তিনি তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধের চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন।কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তার প্রবর্তিত কামালবাদকে স্থায়ীরূপ দিতে হলে তুরস্কের বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থার মূলে আঘাত হানতে হবে যাতে জনগণ ইসলামী ভাবধারা থেকে চিরদিনের জন্য দূরে সরে যায়।
১৯২৪ সালের গ্রীষ্মে মোস্তফা কামাল তুরস্কের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের জন্য আমেরিকান শিক্ষা সংস্কারক জন ডেওয়েকে আঙ্কারায় আমন্ত্রণ জানান।তার শিক্ষা সংস্কার কার্যক্রমে গণস্বাক্ষরতা বৃদ্ধিকে মূল লক্ষ্য ধরা হয়। নাগরিক সংস্কৃতির বিকাশকে সহযোগীতা করার লক্ষ্যে তিনি শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চান এমন প্রচারণা চালানো হয়। রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়গুলো একটি সাধারণ পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে। এটি “শিক্ষার একীভূতকরণ” বলে পরিচিতি পায়।
ইসলামি শিক্ষা নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। ধর্মীয় অবকাঠামো গুলোও ধ্বংস করা হয়। শরি’আ কাউন্সিল বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ধর্মীয় বৃত্তি প্রদান বন্ধ করে দেয়া হয়। সূফীদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়। শরি’আ আদালত অবৈধ ঘোষণা করে দেশের সকল কাযীকে বরখাস্ত করা হয়।
তুর্কিদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকেও কামাল পাশা সেক্যুলার নীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ এর চেষ্টা করেন :
এ লক্ষ্যে কামাল পাশা যে আদেশ জারি করেন তার সার সংক্ষেপ হলো-
→পাগড়ি বা টুপি পড়া নিষিদ্ধ করা হয়।
→সরকারী ভবনগুলোতে হিজাব নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়।
→হিজরি ক্যালেন্ডারের পরিবর্তে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু করা হয়।
→১৯৩২ সালে আরবিতে আযান দেয়া নিষিদ্ধ করে তুর্কি ভাষায় আযান চালু করা হয় এবং দেশের হাজার হাজার মাসজিদে বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়।
→জুমাবারের পরিবর্তে শনিবার এবং রবিবারকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়।
সেই সময় তুর্কিদের শিক্ষার হার খুবই কম ছিল। শিক্ষার হার বাড়ানোর অজুহাত দেখিয়ে কামাল পাশা আরবি বর্ণমালার পরিবর্তে ল্যাটিন চালু করলেন। ল্যাটিন বর্ণ চালুর সাথে সাথে আরবি শব্দগুলোর তুর্কি প্রতিশব্দ খুঁজে বের করতে একটি কমিশন গঠন করেন।
উসমানী তুর্কী ভাষা নিষিদ্ধ করা ছিল এক সুদূরপ্রসারী চিন্তার বাস্তবায়নের অংশ। এর মাধ্যমে কামাল পাসা নিশ্চিত করেন ভবিষ্যতের প্রজন্ম যেন আর কখনো উসমানীয়দের প্রকৃত ইতিহাস ও উসমানী সভ্যতার শেকড়ের সন্ধান না পায়। এই ভাষাটিকে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে উসমানী সভ্যতার সাথে আধুনিক তুরস্কের যোগাযোগের পথ বিচ্ছিন্ন করে দেন কামাল। ফলে ইউরোপের অনুকরণ ছাড়া আর কোন উপায় তাদের সামনে অবশিষ্ট ছিল না।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একশো বছর পরেও এখন তুরস্ক এরদোয়ানের হাত ধরে তার ইসলামী উসমানী ঐতিহ্য আর কামালী সেক্যুলার মডার্নিটি এই দুইয়ের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে রয়েছে।
সর্বশেষ ধর্মনিরপেক্ষকে ভবিষ্যৎ থ্রেট থেকে বাঁচাতে কামাল পাশা সাংবিধানিক ভাবে সেনা বাহিনী এবং বিচার বিভাগে আমূল সংস্কার করেন। সেনা বাহিনীকে তুরুস্কের ধর্মনিরপেক্ষতার রক্ষক করা হয়। এবং সাংবিধানিক ভাবে সেনা বাহিনীকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয় যে ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য তারা যা ইচ্ছা করতে পারবে। এই ক্ষমতাবলে পরে তুরুস্কের বেশ কয়েকজন প্রাধানমন্ত্রীকে সেনা বাহিনী ফাঁসি দেয়। ১৯৬১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইমরালি দ্বীপে প্রধানমন্ত্রী আদনান মেন্দেরেসকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। তাঁর অপ রাধ ছিল তিনি প্রকাশ্যে আজান দেয়ার বৈধতা দিয়েছিলেন।
এমনকি বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে জেল দেয় ইসলামি কবিতা পড়ার অপরাধে!।
ইসলাম তথা মুসলিমদের উপর কামাল পাশার গৃহীত পদক্ষেপসমুহ কতটা মারাত্নক প্রভাব ফেলেছিল তা সহজেই অনুনেয়। উপমহাদেশে তখন বিখ্যাত খেলাফত আন্দোলন হয় কামাল পাশার এই কর্মকাণ্ডের জন্য।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির কাছে পরাজয়ের পর পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষত ইউরোপের বহুকালের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ওসমানী সাম্রাজ্যের উৎখাতের সুবর্ণ সুযোগ আসে তাদের হাতে। ১৯২৩ সালে সুইজারল্যান্ডের লুজান শহরে সম্পাদিত হওয়া চুক্তিতে তারা তুরস্কের ওপর ইচ্ছা মত এমন অনেক অন্যায় শর্ত চাপিয়ে দেয় যা সুনিশ্চিত করে যে তুরস্ক একশো বছরের মধ্যে তাদের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবেনা, এই চুক্তিই এককভাবে তুরস্ককে ইউরোপের পঙ্গু রাষ্ট্রে পরিণত করে।
দেখে নেয়া যাক এই চুক্তির শর্তসমূহ।
ওসমানী সাম্রাজ্যের পরিসমাপ্তি : ওসমানী সালতানাতের সব উত্তরাধিকাদেরকে নির্বাসিত করা হয়, কাউকে গুপ্ত হত্যা করা হয়, অনেককে নিখোঁজ করা হয়। তাদের সম্পদ বাজয়াপ্ত করা হয়। এই ভাবে খিলাফতের শেষ চিহ্ন পর্যন্ত মুছে ফেলা হয় তুরস্ক থেকে।
ওসমানী সাম্রাজ্যের বিভাজন এবং নতুন অনেক রাষ্ট্রের আবির্ভাব : ১৫২১ খ্রিস্টাব্দে ওসমানী সালতানাতের আয়তন সর্বোচ্চ হয়, এ সময় তার আয়তন ছিল ৩৪ লক্ষ বর্গ কিমির বেশি। বিভিন্ন সময় কম বেশি হওয়া সাম্রাজ্যের গড় আয়তন ছিল ১৮ লক্ষ বর্গোকিমি। বর্তমান তুরস্কের আয়তন মাত্র ৭ লক্ষ ৮৩ হাজার বর্গ কিমি। বিশ্বখ্যাত অটোম্যান সাম্রাজ্যের পতনের পর এর থেকে অন্তত ৪০ টি নতুন রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়।
ইসলাম বিরোধী সেক্যুলার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা : কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে তুরস্কে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউরোপ আমেরিকার তাবেদার সেক্যুলার রাষ্ট্র। নিষিদ্ধ করা হয় আরবী চর্চা, বন্ধ করা হয় হাজারো মাদ্রাসা, মসজিদে মসজিদে আজান নিষিদ্ধ করা হয়, হত্যা করা হয় বহু ইমাম, মুয়াজ্জিন, ইসলামী স্কলার এবং আলেমকে। ওসমানী সালতানাতে মূলত দুটি ভাষা প্রচলিত ছিল একটি আরবী অপরটির ফারসি। সাম্রাজ্যের বর্ণমালাকে আবজাদ বলা হতো, যা ওসমানী সাম্রাজ্যের ভাষা বলে পরিচিত ছিল। তাদের রাষ্ট্রীয় ভাষার পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রচলন করা হয় ল্যাটিন ভাষার। এই ভাবে রাতারাতি একটি জাতিকে ফেলে দেয়া হয় অক্ষরজ্ঞানহীন, পরিচয়হীন একটি অন্ধকার কুপে।
তুরস্কের প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান এবং আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা : চুক্তির পরবর্তী একশো বছর তুরস্ক নিজেদের ভূমিতে বা বাইরের কোনো দেশে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান এবং আহরণ করতে পারবে না। বর্তমান বিশ্বে অনেক দেশের অর্থনীতি শুধুমাত্র তেলের ওপর নির্ভরশীল সেখানে তুরস্ককে তেল উত্তোলন করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত রাখা হয় ফলে তুরস্ক নিজেদের প্রয়োজনে সব রকম জ্বালানি আমদানি করে বাইরের দেশ থেকে যা তাদের অর্থনৈতিক উন্নতিতে প্রধান অন্তরক।
বসফোরাস প্রণালীর আন্তর্জাতিকরণ : তুরস্কের অর্থনীতির ওপর আরো একটি বৃহৎ ধাক্কা দেয়া হয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন সামুদ্রিক পথ বসফরাসের ওপর তুরস্কের নিয়ন্ত্রণ শেষ করে দেয়ার মাধ্যমে। কৃষ্ণ সাগর এবং ভূমধ্যসাগরের মাঝে সংযোগস্থাপনকারি এই প্রণালীটি এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যেকার বাণিজ্যের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। প্রতিদিন তুরস্কের বুকের ওপর থেকে হাজারো জাহাজ পার হলেও তুরস্ক তাদের থেকে এক টাকাও সংগ্রহ করতে পারেনা।
মক্কা ও মদিনার নিয়ন্ত্রণ তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়া : ৪০০ বছর মক্কা এবং মদিনাকে নিয়ন্ত্রণ করা তুর্কি সুলতানরা নিজেদেরকে দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বলে অভিহিত করতে গর্ববোধ করতো। ওসমানী সাম্রাজ্য থেকে পৃথক হওয়ার পর ১৯৩২ সালে আমেরিকার তাবেদার সাউদ গোষ্ঠী সৌদি আরবের মসনদে বসার পর মক্কা ও মদিনার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। তুরস্কের বাসিন্দারা আজও হজ এবং ওমরাহ করার সময় মক্কা মদিনায় কেঁদে কেঁদে দোআ করে যে, “ইয়া আল্লাহ, আমাদের ক্ষমা করো, আমাদের ওপর তোমার অসন্তুষ্টি শেষ করো, আমাদেরকে আবার মক্কা মদিনার খাদেমের মর্যাদা ফিরিয়ে দাও। ”তুর্কিরা হজের সময় নিজেদের সঙ্গে এক ধরনের মানচিত্র নিয়ে আসে যাতে মক্কা মদিনার পূর্বের সব পবিত্র স্থাপনার বর্ণনা আছে যার মধ্যে অনেক স্থাপনা সৌদি সরকার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। তারা নাম নিয়ে নিয়ে সেই সব জায়গায় সাহাবীদের কবর জিয়ারত করে।
২০২৩ পর তুরস্ক যা করতে পারে : তুরস্ক হয়তো আবারো ফেরাতে পারবেনা ওসমানী সালতানাতের সেই সোনালী দিন গুলো। তবে তারা যে আস্তে আস্তে সেই দিকেই যাবে তা এক প্রকার নিশ্চিত। তুরস্ক সেই উদ্দেশ্যেই তাদের জনগন সহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে সালতানাতে ওসমানিয়ার গৌরবময় দিনগুলো সম্পর্কে ড্রামা সিরিজ, চলচ্চিত্র ইত্যাদি তৈরির মাধ্যমে অবহিত করছে। তুরস্ক আবার দাবি করতে পারে তাদের থেকে ছিনিয়ে নেয়া ভূখণ্ড গুলো তবে তা উদ্ধার করা এখন এদৌ সহজ কাজ হবেনা বা বলা যেতে পারে এটা একপ্রকার অসম্ভব কাজ। কিন্তু রাসূল (সা.) বলেছেন, “কিয়ামতের আগে একবার খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে।” বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তুর্কিরা সেই স্বপ্ন পূরণের সব থেকে সম্ভাবনাময় জাতী।
তুরস্কের বর্তমান অর্থনীতি খুব একটা বৃহৎ আয়তনের নয়। তাদের জিডিপি হলো ৭৪৩ বিলিয়ান ডলার (২০১৯ সালের হিসেব) যা বিশ্বে ১৯তম । কিন্তু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রবল সম্ভাবনাময় দেশ তুরস্ক লুযান চুক্তির পর যে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক অগ্রগতি করবে তা বোঝার জন্য অর্থনীতিবিদ হওয়ার প্রয়োজন নেই।
ইতি মধ্যে তারা গ্রিসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভূমধ্যসাগরে তেলের অনুসন্ধান শুরু করেছে। নিজেদের দেশের প্রয়োজনের একটা বড়ো অংশ তারা নিজেদের উত্তোলিত তেল থেকে পূরণ করতে পারলে তাদের বৈদেশিক বানিজ্য ঘাটতি অনেক কমবে এবং তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যা ২০১৯ সালের হিসেব অনুসারে ছিল ১ শতাংশেরও কম তা অনেক বৃদ্ধি পাবে। তারা নিশ্চিতভাবেই বসফরাসের ওপর নিজেদের অধিকার কায়েমের চেষ্টা করবে এবং এতে বাধা এলেও তারা সফল হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। আমেরিকা যে তাতে বাধা দেবে তা ভেবেই তারা এখন থেকে চীন রাশিয়া ইরান পাকিস্তানের সঙ্গে মজবুত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
তুরস্ক এরদোগানের আমলে আতাতুর্কের প্রতিষ্ঠিত মুসলিম বিদ্বেষী সেক্যুলার ছবি থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বদান করার ক্ষেত্রে সবার থেকে আগে আছে। সব মিলিয়ে দেখতে গেলে তুরস্কের ভবিষ্যৎ যে খুব উজ্জ্বল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সব ঠিক ঠাক থাকলে তারা নব বিশ্ব শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে এক দশকের মধ্যে এবং এটি নিঃসন্দেহে মুসলিম বিশ্বের জন্য আবার সুখের দিনের বার্তা বহন করে আনবে।
দেশব্যাপী বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রেফতারের হিড়িক চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব মন্তব্য করেন।বিবৃতিতে বলা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার ৪ জুন রাতে সাটুরিয়া থানা পুলিশ তিল্লি গ্রামের বিএনপি নেতার কন্যা ও বিএনপি নেত্রী মাহমুদা পলি আক্তারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার এবং গুজব ছড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার চন্দনাইশ উপজেলার ছাত্রদলের নেতা সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রেফতারের হিড়িক চলছে দেশব্যাপী। বর্তমান গণবিরোধী সরকার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নারী, পুরুষ নির্বিশেষে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে হয়রানি করার মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী এই করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও কেউ যেন টু শব্দ করতে না পারে। সরকার নিজেদের অবৈধ সত্তা নিয়ে সবসময় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তাই সমালোচনাকে যমের মতো ভয় পাচ্ছেন। এক অজানা আতঙ্কের মধ্যে সরকার হাবুডুবু খাচ্ছে। চারদিকে সীমাহীন ব্যর্থতা, করোনাভাইরাসের প্রকোপে বাঁধভাঙা পানির স্রোতের মতো দেশের জনগণ আক্রান্ত হচ্ছে, মৃত্যুর সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ আক্রান্ত মানুষের এ দেশে কোনো চিকিৎসা নেই। হাসপাতালে করোনারোগীদের ভর্তি যেন এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।’
বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘হাসপাতালে আইসিইউ ও অক্সিজেনের অভাবে আক্রান্ত রোগীরা অসহায়ভাবে কাতরাচ্ছেন। রোগীর তুলনায় শয্যা একেবারেই ন্যূনতম। আক্রান্ত মানুষ এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটতে ছুটতে রাস্তার মধ্যেই মারা যাচ্ছেন। চারদিকে ক্ষুধার জ্বালায় কর্মহীন মানুষ হাহাকার করছেন। এক দুর্ভিক্ষের ঘন-ছায়া সারাদেশে বিস্তার লাভ করছে। এই কঠিন দুঃসময় সরকার সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা না করে বরং মিথ্যা অহমিকায় জনগণের কাছে সত্যের অপলাপ করছে।
আর বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মত যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সেজন্য আগের মতোই রাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগানো হচ্ছে নির্দয়-নিষ্ঠুরভাবে। পলির মতো একজন নারী নেত্রীও গ্রেফতারের হাত থেকে রেহায় পায়নি। এই করোনাকালেও পলি ও সাজ্জাদের মতো বিএনপির নেতাকর্মীরা সরকারি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সরকারের এহেন কর্মকাণ্ড অমানবিক ও কাপুরুষোচিত।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, আমি অবিলম্বে মাহমুদা পলি আক্তার ও ছাত্রদলনেতা সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
নিউজ ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন এমত অবস্থায় গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পরিবহন শ্রমিকদের খাদ্যের সংকট দেখা দেয়, তাই তারা ত্রাণের দাবিতে রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রোধে সরকার গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন হাজারও শ্রমিক। এ ঘটনায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় খাদ্যের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী মহাসড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন মোটর-বাস শ্রমিকরা।আজ রবিবার(১০ মে) দুপুর ১২টার দিকে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভাণ্ডারে রওশন ফিলিং স্টেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
জানা যায়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করায় দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন শ্রমিকরা। কর্মহীন শ্রমিকদের সঞ্চিত অর্থ শেষ হওয়ায় তারা ত্রাণের জন্য গত এক মাস আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে তালিকা দিয়ে ত্রাণ দাবি করেন। কিন্তু একমাস ধরে বিলম্ব করছে প্রশাসন। ফলে অনাহারে অর্ধাহারে থাকা শ্রমিকরা বাড়ি থেকে বের হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে খাদ্যের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যয়ে মহাসড়কে শুয়ে পড়েন শ্রমিকরা। এ সময় উভয় পাশে ট্রাকসহ শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে।
কালীগঞ্জ উপজেলার মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মুকুল বলেন, দেড়-২ মাস ধরে ঘরে বসে সঞ্চিত অর্থ আর ঋণ করে মানবেতর জীবন যাপন করছি। ইউএনও ত্রাণ দিতে চেয়ে শ্রমিকদের তালিকা নিয়েছেন। কিন্তু সেই তালিকা নেয়ার একমাস অতিবাহিত হলেও ত্রাণের কোনো খবর নেই। তাই বাধ্য হয়ে সবাই মিলে রাস্তায় নেমে এসেছি।কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাত হোসেন জানান, শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের কথা শুনে ঘটনাস্থালে গিয়ে সড়ক অবরোধ তুলে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল হাসান বলেন, শ্রমিকদের তালিকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়েছে। সেখানে যাচাই বাছাই করে ত্রাণ দেয়ার কথা। ত্রাণ আমার দেয়ার সুযোগ নেই, ইউনিয়ন পরিষদই ত্রাণ বিতরণ করবে। ত্রাণের দাবিতে মহাসড়কে শ্রমিকদের অবরোধ ও বিক্ষোভের বিষয়টি তার জানা নেই বলেও বলেন তিনি।